আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম।  আমি আমার একজন দ্বীনি বোনের হয়ে প্রশ্ন করছি।
আমার ২ চাচা এবং চার ফুপু। আমরা দুই বোন, ভাই নেই।   বাবা মারা যাওয়ায় তার সম্পদের ওয়ারিশ হবে আমার মা, দুই বোন এবং দাদী। দাদীর অংশ থেকে দুই চাচা এবং চার ফুপু মালিকানা পাবেন। সেক্ষেত্রে নাতনী হিসেবে আমি এবং আমার বোন কি ওয়ারিশ হিসেবে গন্য হবে? আমরা কি কোন সম্পদ পাব ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী?
এবং আমার বাবা নিজের আয় দিয়ে কিছু সম্পদ করে গেছেন। সেগুলো আমার মা এবং দুই বোনের নামে লিখে দিয়ে গেছেন। এখন এই সম্পদের মালিকানা আমরা তিনজন। আমার বাবা জীবিত অবস্থায় আমাদের নামে এগুলো লিখে দিয়ে গেছেন, এই লিখে দেওয়া কি জায়েজ হবে ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী?
বাসায় জমিজমা এবং এগুলোর শরীয়ত মোতাবেক বন্টনের ক্ষেত্রে পরিবারে যদি ভুল বুঝাবুঝি হয় তাহলে কেমন আচরন করব সেক্ষেত্রে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

*শরিয়তের বিধান হলো, দাদার জীবদ্দশায় পিতা মারা গেলে চাচাদের উপস্থিতিতে নাতি-নাতনিরা দাদার মিরাস পাবে না। সহিহ বুখারিতে এ বিষয়টি নিয়ে স্বতন্ত্র পরিচ্ছেদ আনা হয়েছে। সেখানে মিরাসের ব্যাপারে সর্বাধিক জ্ঞানী সাহাবি হজরত জায়েদ বিন সাবেত (রা.)-এর ফতোয়া উল্লিখিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘ছেলে থাকাবস্থায় (মৃত) ছেলের সন্তানাদি মিরাস পাবে না।’ (সহিহ বুখারি : ২/৯৯৭)

এটি সর্বযুগের ইসলামী আইনবিদদের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তও। (উমদাতুল কারি : ২৩/২৩৮)

উত্তরাধিকার বণ্টনের ক্ষেত্রে নিকটবর্তী দূরবর্তীর ওপর প্রাধান্য পাবে। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনে নির্দেশিত নির্ধারিত অংশের অধিকারীর অংশ তাদের দিয়ে দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা সবচেয়ে নিকটবর্তী পুরুষ আত্মীয় পাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৭৩৫, সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬১৫, আবু দাউদ, হাদিস : ২৮৯৮, তিরমিজি, হাদিস : ২০৯৮, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৭৪০)

আর এ কথা সবারই জানা যে কারো নাতির চেয়ে ছেলেই অপেক্ষাকৃত বেশি নিকটবর্তী।

ইসলামী শরিয়ার বিধান ওটাই। তবে আমাদের প্রচলিত আইনে এটাকে অন্য ধরনের একটা ফয়সালা করা হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুসারে যদি তারা কোর্টের মাধ্যমে আপিল করে, দেখা যায় যে তাদের ওয়ারিশ করার বিষয়টি প্রচলিত আইনে উল্লেখ করা হয়েছে এবং কোথাও কোথাও তারা শেষ পর্যন্ত হক আদায় করে নিয়েছে। কিন্তু ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী তারা ওয়ারিশ হওয়ার কোনো বিধান নেই, কারণ মৃত ব্যক্তির যারা ওয়ারিশ হবে, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তাদের সরাসরি সম্পর্ক থাকতে হবে। সরাসরি সম্পর্ক না থাকলে ওয়ারিশ হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

তবে শরিয়াহ অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির সন্তানদের জন্য দাদা তাঁর সম্পত্তি দান করে দিতে পারেন। ইসলামে ওসিয়তের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি ওসিহত করে দিতে পারেন।

*কোন ব্যক্তি জীবিত এবং সুস্থ্য থাকা অবস্থায় তার মালিকানাধীন সম্পদ যাকে ইচ্ছে দান করতে পারে। যেখানে ইচ্ছে খরচ করতে পারে। এতে তার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।

ব্যক্তি জীবিত থাকা অবস্থায় তার অর্জিত সম্পদের একক মালিকানা তার হাতেই থাকে। তাতে যাচ্ছেতাই হস্তক্ষেপের অধিকার তার রয়েছে। এতে কেউ হক দাবী করার অধিকার রাখে না। হ্যা, মৃত্যুর পরের কথা ভিন্ন। তখন শরয়ী নীতিমালা অনুপাতে সম্পদ বন্টন করতে হয়।আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/6405/

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

১. আপনার দাদীর পুর্বে আপনার বাবা ইন্তেকাল করার কারণে আপনি আপনার চাচা ও ফুফুদের উপস্থিতিতে দাদীর সম্পদের ওয়ারিশ হিসেবে গন্য হবেন না। বিস্তারিত উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

২.জ্বী জীবিত অবস্থায় আপনার বাবা আপনাদের কে যেই সম্পদের মালিক বানিয়েছেন আপনারাই তার মালিক যদি তিনি আপনাদের নামে লিখে দেন এবং এটি জায়েয । সাধারণত এই বিষয়গুলি নিয়ে সমাজে ভুল বুঝাবুঝি হয় । সুতরাং অত্যন্ত সবরের সাথে কাজ করতে হবে, সবাইকে বুঝাতে হবে এবং কারো সাথে দূর্ব্যবহার করা মোটেও উচিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...