بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
তা'আলা বলেন-
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺄْﻛُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ
ﻻَ ﻳَﻘُﻮﻣُﻮﻥَ ﺇِﻻَّ ﻛَﻤَﺎ ﻳَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺘَﺨَﺒَّﻄُﻪُ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤَﺲِّ
ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﻗَﺎﻟُﻮﺍْ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﺒَﻴْﻊُ ﻣِﺜْﻞُ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻭَﺃَﺣَﻞَّ ﺍﻟﻠّﻪُ
ﺍﻟْﺒَﻴْﻊَ ﻭَﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻓَﻤَﻦ ﺟَﺎﺀﻩُ ﻣَﻮْﻋِﻈَﺔٌ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻪِ ﻓَﺎﻧﺘَﻬَﻰَ ﻓَﻠَﻪُ
ﻣَﺎ ﺳَﻠَﻒَ ﻭَﺃَﻣْﺮُﻩُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
ﻫُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺧَﺎﻟِﺪُﻭﻥَ
যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান
হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়।তাদের এ
অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই
মত!অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে
তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে
যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর
যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল
অবস্থান করবে।(রা বাকারা-২৭৫)
রিবা বা সূদ কাকে বলে?
এ ব্যপারে উলামায়ে কেরামগণ একমত যে, প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই
রিবা বা সুদ হিসেবে পরিগণিত হবে।যেমন
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ
: ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﻔْﺺٌ، ﻋَﻦْ ﺃَﺷْﻌَﺚَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺤَﻜَﻢِ، ﻋَﻦْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ :
« ﻛُﻞُّ ﻗَﺮْﺽٍ ﺟَﺮَّ ﻣَﻨْﻔَﻌَﺔً، ﻓَﻬُﻮَ ﺭِﺑًﺎ ﻣﺼﻨﻒ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺷﻴﺒﺔ
তরজমাঃ-প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা
সুদ। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ-২০৬৯০)
কোরআন ও হাদিসে ঋণ বলতে ‘কর্জে হাসানা’ বোঝানো হয়েছে। আর কর্জে
হাসানা প্রদানে বিশেষ পুণ্যের কথা বর্ণিত হয়েছে : কাউকে নেকির আশায় বা সহযোগিতার জন্য
কর্জে হাসানা প্রদান করা আল্লাহর পথে দান-সদকা করার সমতুল্য। এমনকি ঋণ দানকে দান-সদকার
চেয়েও বেশি মর্যাদাপূর্ণ বলা হয়েছে।
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি জান্নাতে
প্রবেশ করে তার দরজায় একটি লেখা দেখতে পেল যে সদকার নেকি ১০ গুণ বৃদ্ধি করা হয় এবং
ঋণ দানের নেকি ১৮ গুণ বৃদ্ধি করা হয়।’ (সিলসিলা সহিহাহ, হাদিস
: ৩৪০৭)
ঋণপরিশোধের সময় ঋণগ্রহীতা ইচ্ছা করলে ঋণদাতার অনুগ্রহের বদলাস্বরূপ
তাকে কিছু টাকা বাড়িয়েও দিতে পারে কিংবা যে
মানের সম্পদ ঋণ নিয়েছিল তাকে এর চেয়ে উৎকৃষ্ট মানের জিনিস ফেরত দিতে পারে। বাড়িয়ে
দেয়ার যদি স্পষ্ট কিংবা অস্পষ্ট কোনো পূর্ব কথা না থাকে, তাহলে এটা নিষিদ্ধ সুদের অন্তর্ভুক্তও হবে না।
অনুগ্রহের বিনিময় তো অনুগ্রহ দিয়েই হতে পারে। প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
জীবনালেখ্য থেকেও আমরা এ অনুগ্রহের শিক্ষা পাই।
সাহাবি হজরত জাবের (রা.) বলেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার কাছ থেকে একবার
ঋণ নিয়েছিলেন। পরে যখন তিনি তা আমাকে পরিশোধ করলেন, তখন আমার
পাওনার চেয়েও বাড়িয়ে দিলেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৩৪৯)
পাওনা পরিশোধকালে পাওনাদারের কৃতজ্ঞতা জানানো এবং তার জন্যে
কল্যাণের দোয়া করা ইসলামের এক অনন্য শিক্ষা।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবি
রবিয়া (রা.)-এর থেকে চার হাজার দিরহাম ঋণ করেছিলেন। যখন তা পরিশোধ করলেন, তখন তিনি তার জন্য এ দোয়া করলেন, আল্লাহতায়ালা তোমার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদে বরকত দান করুন। (সুনানে নাসায়ি: ৪৬৮৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.কাউকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ধার দিয়ে পরবর্তিতে অধিক টাকা
আদায় করা সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে যদি কোন ঋণগ্রহিতা পূর্ব
শর্ত ছাড়াই স্বেচ্ছায় কিছু অতিরিক্ত দেন তাহলে তা গ্রহণ করা জায়েয আছে।
২,৩.কাউকে ১ হাজার টাকা নগদ ধার দিলে,
সে যদি বিকাশে ১০২০ টাকা দেয়,তাহলে সেটা সুদ হবে
না। কেননা এই অতিরিক্ত ২০ টাকা ক্যাশআউট চার্জ হিসেবে বিবেচ্য হবে। অনুরূপভাবে যদি
কেউ অন্যজনকে ১০২০ টাকা বিকাশে ধার দেয় তাহলে ঋণগ্রহিতা ঋণ ফেরৎ
দেয়ার সময়, ১০২০টাকা ফেরৎ দিবে।কিন্তু সে যদি পরিশোধ করার সময়
১০০০ টাকা বিকাশে পাঠায়,তাহলে ঋণদাতা ২০ টাকা পাঠাতে বলতে পারবে। কিন্তু বিকাশে ১০০০টাকা
ঋণ দিয়ে ১০২০ টাকা ফেরৎ নেয়া কখনো জায়েয হবে না,বরং সেটা সুদ
হয়ে যাবে। নগদ বা রকেটের ক্ষেত্রেও একই হুকুম।