আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
93 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার বিয়ে হয়েছে ২ বছর। আমার একটা ৬ মাসের মেয়ে আছে।
আমার শ্বশুরবাড়িতে আমার শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, ননাস, ননদ আছে। সমস্যা হচ্ছে আমার ননস কে নিয়ে। উনার ৪ বছরের একটা ছেলে আর ৭ মাসের একটা মেয়ে আছে। উনার বিয়ে হয়েছে ৫ বছর। কিন্তু উনি নিজের অসুস্থতার কথা বলে বাপের বাড়িতেই রয়ে গেছেন। উনার হাজবেন্ড ছুটির দিনে এখানে আসেন, থাকেন। কিন্তু আমার ননস নিজের শ্বশুড়বাড়িতে যান না, বছরে ১/২ বার বেড়াতে যান।
১ বছর হয়েছে উনি একটা জবে ঢুকেছেন। আর বাচ্চা দুইটাকে বাসায় রেখে যান। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা অব্ধি বাইরে থাকেন আর উনার সন্তানদের দেখাশোনা করেন আমার শ্বাশুড়ি। এখান থেকেই সমস্যা শুরু।
উনার বাচ্চাদের দেখতে হয় বলে আমার শ্বাশুড়ি আমার বাচ্চাকে নিতে পারেনা, এদিকে আমি আমার কাজ করতে পারিনা। মাঝেমধ্যে ননসের বাচ্চাকেও আমাকে রাখতে দেয়। আমার হাজবেন্ড সরাসরি আমার শ্বাশুড়িকে বলেছে যে আমার দুইটা বাচ্চা রাখতে কষ্ট হয়, তাও উনি আমাকে ননসের বাচ্চা দিয়ে যান। এদিকে বাচ্চাগুলো ও মা ছাড়া থাকায় ছেলেটা মোবাইলে আসক্ত আর মেয়েটা অপুষ্টিতে ভুগছে। এগুলো আমার ননসকে বললেও উনি খুব একটা আমলে নেন না। উনি শুধু উনার জব নিয়ে ব্যস্ত। আর কিছু বললেই নিজেকে সবসময় অসুস্থ বলতে থাকেন। আর আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি ও সবসময় উনাকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।
এখন বাসার এই ধরনের পরিবেশ আমার পছন্দ হচ্ছেনা। আলাদা থাকাও সম্ভব না, আর থাকতে চাই ও না। এদিকে ননস ও আলাদা হবেনা। শ্বশুরকে প্রবলেমের কথা বলাতে উনি বলে দিয়েছেন যে ননস আলাদা হবেনা, এখানেই থাকবেন।  এখন আমি কি করতে পারি? আমি চাই ইনসাফের সাথে এর একটা ফয়সালা হোক। আমি প্রশ্ন বেশি বড় না হওয়ার জন্য বেশি ডিটেইলসে লিখিনি। কিন্তু আমার ননস যে ধরনের মেন্টালিটি আর কালচারে বিলং করেন, উনার সাথে একসাথে থাকাটাও সম্ভব না। উনাকে যে কিছু বুঝাব, সেই পরিবেশ ও নাই। আবার আমি যদি কষ্ট করে থেকেও যাই, দেখা যাচ্ছে আমার বাচ্চা ফিউচারে সাফার করবে।কারণ এখানে না দ্বীনী পরিবেশ আছে, না কোন কিছু রুটিন মাফিক হয়। আর ননাসের ছেলেও বড় হচ্ছে দ্বীনী শিক্ষা ছাড়া, মা বাবার সাহচর্য ছাড়া। এমতাবস্থায় আমি মা হিসেবে অনেক চিন্তিত আছি। দয়া করে আমাকে একটু সাহায্য করুন।আমাকে বলুন আমার কি করা উচিত।
জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (681,640 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .
 
সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)
 
 ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-
تجب السكني لها عليه في بيت خال
মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৬০৪)

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।


★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
"উনার বাচ্চাদের দেখতে হয় বলে আমার শ্বাশুড়ি আমার বাচ্চাকে নিতে পারেনা, এদিকে আমি আমার কাজ করতে পারিনা। মাঝেমধ্যে ননসের বাচ্চাকেও আমাকে রাখতে দেয়"

★লক্ষনীয় বিষয় হলো,ননসের বাচ্চাকে আপনার কাছে রাখা এটি আপনার উপর আবশ্যক নয়।
আপনি না রাখলে তাতে শরীয়াহ দৃষ্টিকোন থেকে কোনো সমস্যা নেই।
তাই আপনার যেহেতু বাচ্চা রয়েয় তাই ননসের বাচ্চাকে রাখবেননা।

আপনার বাচ্চাকে নেয়া (দেখাশোনা করা) আপনার শাশুড়ীর উপর আবশ্যক নয়। এটি আপনার ও আপনার স্বামীর উপরেই দায়িত্ব।  প্রয়োজনে এর জন্য অন্য কাউকে বেতন দিয়ে হলেও রেখে দিতে পারেন।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামীর আলাদা বাসস্থান নিয়ে থাকার সামর্থ থাকলে আলাদা থাকারই পরামর্শ থাকবে। 
আর কারন বশত আলাদা থাকা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে আপনার সন্তান আপনার শাশুড়ীকে দেখতে বলবেননা।

এটি আপনার ও আপনার স্বামীর উপরেই দায়িত্ব।  প্রয়োজনে আপনার সন্তানকে নেয়ার জন্য অন্য কাউকে বেতন দিয়ে হলেও রেখে দিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...