আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি আমার কিছু বিষয় নিয়ে মানসিক সমস্যায় ভুগছি। আমি আমার পরিবারের মানুষগুলোর সাথে ভালো আচরণ করতে পারি না।এটা আমার অনেক আগে থেকেই সমস্যা। আমি কম কথা বলি সবসময়। কিন্তু পরিবারের কারো সাথে যখন কথা বলার প্রয়োজন হয় বা কেউ যখন আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করে আমার খুব বিরক্ত লাগে আর রেগেরেগে, উঁচু গলায় উত্তর দেই।ভালোভাবে কথা বলতে পারি না।দ্বীনে ফেরার পর যখব অনুধাবন করলাম যে আমার এমন করা ঠিক না নিজেকে সংশোধন করা দরকার। তখন চেষ্টা করি। কিন্তু আমি পারছি না।১ সপ্তাহ কি ২ সপ্তাহ অনেক কষ্ট করে নিজেকে কন্ট্রোল করে ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করি।তারপর আবার কোনো না কোনো কারণে আগের মত হয়ে যাই।আমার পরিবারের কেউ কেউ নামাজ, কালাম পড়ে আলহামদুলিল্লাহ। আবার কেউ কেউ তেমন ভাবে করে না।কিন্তু সবাই আবার দূনিয়াবী সার্থে আল্লাহর হুকুম পালনে গাফিলতি করে।গুনাহ কে গুনাহ মনে করে  না।আর আমি এগুলো সহ্য করতে পারি না।তাদেরকে এই বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলা দরকার। কিন্তু আমি তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে পারি না শুধু চিল্লাচিল্লি করি, খারাপ ব্যবহার করি।আমার মনে এটা কাজ করে যে, তাদের সবই ভুল,তারা কেন বুঝতে চায় না।কিন্তু এই মানসিকতা যে খারাপ তাও বুঝি।কিন্তু আমি মানতে পারছি না।বিশেষ করে আমার ছোট ভাইয়ের সাথে আমি ভালো ব্যবহার করি না বললেই চলে।ছোটবেলা থেকে শাসন করে আসছি।এখন আর ভালো ব্যবহার আসে না আমার।জোরে ছাড়া আস্তে কথা বলতে পারি না।সবসময় ঝারি দিয়ে কথা বলি।।আমি নিজেকে শুধরাতে চাই।তাদের মাঝে দাওয়াতি কাজ করতে চাই।সেটাও পারছি না বলে আমার মেজাজ খারাপ থাকে সবসময়। আমার নিজের প্রতি নিজের এই খারাপ বিষয় গুলোর জন্য এতো বিরক্ত লাগছে যে,আমার মাঝে মাঝে নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করে। আমার মনে প্রশান্তি নেই আমার এই খারাপ আখলাকের কারনে।কিন্তু আমি মনে -প্রাণে নিজেকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সংশোধন করতে চাই।
আমার পরিবারের কেউ যখন গুনাহকে গুনাহ মনে না করে সেই গুনাহের কাজটা করে বা দ্বীনি বিষয়ে গাফিলতি করে সেটা বলতে গিয়েই মুলত আমি বর্তমানে খারাপ ব্যবহার করি।কারন আমি বুঝিয়ে বলতে  পারি না। আর আমার ছোটভাইয়ের বেলায় ওর কোনো কিছুই আমার ভালো লাগ না এজন্য চিল্লাই। তাদের মধ্যে দাওয়াতি কাজ করতে গিয়েই যেহেতু আমি রেগে যাই, চিল্লাই  সেক্ষেত্রে আমার কি দাওয়াতি কাজ করা বেশি জরুরি নাকি তাদের সাথে ভালো আচরণ, ভালো ব্যবহার করা জরুরি।কিছুই বুঝতে পারছি না। তারা যা খুশি, যা ইচ্ছে তাই করুক এটা মনে করে যদি থাকি তাহলে কিছুদিন অন্তত আমার আচরণ ভালো রাখতে পারি।এখন আমি আমার জঘন্য আখলাক কিভাবে ঠিক করবো?পরামর্শ দিলে খুবই উপকৃত হবো

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ مِنْ أَحَبِّكُمْ إِلَىَّ وَأَقْرَبِكُمْ مِنِّي مَجْلِسًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَحَاسِنَكُمْ أَخْلاَقًا 

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় ও কিয়ামাতের দিন আমার সবচেয়ে কাছে আসন হবে তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের অধিকারী"
(তিরমিজি ২০১৮)

عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ كُنَّا جُلُوسًا مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو يُحَدِّثُنَا إِذْ قَالَ لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاحِشًا وَلاَ مُتَفَحِّشًا، وَإِنَّهُ كَانَ يَقُولُ " إِنَّ خِيَارَكُمْ أَحَاسِنُكُمْ أَخْلاَقًا ".

মাসরূক (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তিনি বললেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবগতভাবে অশালীন ছিলেন না এবং তিনি ইচ্ছা করে কাউকে অশালীন কথা বলতেন না। তিনি বলতেনঃ তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র উত্তম, সেই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। [বুখারী ৬০৩৫.৩৫৫৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৬)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হবেন।
তাদের উদ্যোগে বাসায় বাসায় যে তালিম হয়,আপনার আশেপাশে হলে সেখানে মাঝে মাঝে তালিমে যাবেন।
,
নিম্নবর্ণিত মাধ্যমগুলো অবলম্বন করলে উত্তম আখলাক নিজের মধ্যে আসবে,ইনশাআল্লাহ। 
,
সচ্চরিত্রের মর্যাদা জানা এবং দুনিয়া ও আখেরাতে এর উত্তম প্রতিদান সম্পর্কে অবহিত হওয়া।
অসদাচরণের মন্দ দিকগুলো জানা এবং এর শাস্তি ও কুফল সম্পর্কে অবহিত হওয়া।
সলফে সালেহীন ও নেককারদের জীবনী ও ঘটনা পড়া।
রাগ থেকে দূরে থাকা, ধৈর্য অর্জন করা, তাড়াহুড়ার বদলে নিজেকে ধীরস্থিরতায় অভ্যস্ত করে তোলা।

সচ্চরিত্রবান লোকদের সাথে উঠাবসা করা এবং কু-চরিত্রের অধিকারী লোকদেরকে এড়িয়ে চলা।

সচ্চরিত্র অর্জনে আত্ম-অনুশীলন করা, এটাকে অভ্যাসে পরিণত করা।
,
সর্বশেষ আল্লাহ্ তাআলার কাছে সচ্চরিত্র চেয়ে ও সাহায্য চেয়ে দোয়া করার মাধ্যম গ্রহণ করা। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ حسَّنَت خَلقي فأحسِنْ خُلقي» 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি দোয়া ছিল: “হে আল্লাহ্ আপনি আমার অবয়বকে সুন্দর করেছেন; সুতরাং আমার চরিত্রকেও সুন্দর করুন।”
(মুসনাদে আহমাদ ৩৮২৩,২৪৩৯২. সহীহ আত্ তারগীব ২৬৫৭, ইরওয়া ৭৪, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৫১৮১, শু‘আবুল ঈমান ৮৫৪২।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...