আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (11 points)

আমি বিদেশে পড়াশুনা করছি। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি পার্ট-টাইম চাকুরি করি।

 

কোম্পানি ১ঃ 

কম্পানির মূল কার্জক্রমঃ
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খেলাধুলা নিয়ে কাজ করে। যেমনঃ খেলার মধ্যে কেউ ম্যাচ ফিক্সিং করে কি না বা সেগুলা রোধ করা, খেলার স্কোর, প্লায়ার এর বিভিন্ন তথ্য অন্যান্য কোম্পানিকে/টিভি চ্যানেলে সহায়তা করা।

আরএকটি হচ্ছে অনলাইন বেটিং (জুয়া) করা যায় যে সব সাইটে তাদের ডেটা / কখন কোন খেলায় কেমন প্রাইস হবে সেগুলার ডাটা দেয়া। অর্থাৎ বেটিং ওয়েবসাইট গুলো আমাদের দেয়া তথ্য  নিয়ে তাদের জুয়ার কার্জক্রম চালায়। তবে আমাদের কোম্পানি জুয়ার কোন টাকা লেনদেন করে না।

আমার কাজ হচ্ছে এই তথ্য যেগুলো আমরা অনলাইন জুয়ার সাইটকে দেই সেগুলো মনিটর করা, কম বেশি হলে বা ভুল থাকলে সেটা ঠিক করা। 

 

কোম্পানি ২ঃ 

এই কোম্পানির মূল কাজ খাবার ডেলিভারি করা বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট থেকে। সাথে তারা বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাবার ডেলিভারি করছে কাস্টমার এর অর্ডার অনুযায়ী। 

আমার কাজ হচ্ছে তাদের কাস্টমারের ওর্ডার করা জিনিস গুলো প্যাকেট করে ডেলিভারি ম্যানকে দেওয়া, ফ্যাক্টরি থেকে মালামাল আসলে সেগুলো নিয়ে, ফ্রিজে/তাক এ রাখা।
এখন অনেক সময় কাস্টমার দুধ-ডিম এর সাথে, প্যাকেটজাত শূকর এর মাংশ, মদ অর্ডার করে। তখন আমাকে সব একসাথে করে একটা প্যাকেটে ঢুকায় ডেলিভারি ম্যানকে দিতে হয়।
আমার সাথে কোন অর্থ আদান-প্রদান হয় না।

 

আমার প্রশ্নঃ

১।  কোম্পানি ১ ও ২ এর মধ্যে কোনটাতে কাজ করা আমার জন্য জায়েজ হবে?

২। যেহেতু আমি আগে থেকেই সন্দেহ মুক্ত কাজ খুঁজছিলাম, পাই নি এখনও। পড়াশোনা শেষ না হওয়া পর্জন্ত অন্য ফুল-টাইম চাকরি করতে গেলে পড়াশোনা শেষ করা খুব কঠিন হয়ে যাবে। এমন অবস্থায় কি করা উচিত?

৩। উভয় কোম্পানির ইনকামই যদি হারাম হয়, তাহলে সেখান থেকে অল্প করে জমানো টাকা দিয়ে হালাল বিজনেস শুরু করলে সেটাও কি হারাম হবে?

 

আমাকে এখানে থাকা-খাওয়ার জন্য কাজ করা অবশ্যক।  আমি ডেলিভারি ম্যান হিসেবে, দোকানের কর্মচারি হিসেবে কাজ করলে মানুষকে দিতে হবে মদ/শূকর এর মাংশ দিতে হবে। আমি নিজে বোতল খুলে সার্ভ না করলেও সেটা বহন করে দিতে হবে। কিন্তু এমন না যে প্রতিটা অর্ডার এ মদ বা শূকর থাকে।

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

 আল্লাহ তায়ালা বলেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

হে মুমিনগণএই যে মদজুয়াপ্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএবএগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। (সূরা মায়েদাআয়াত ৯০)

 

 আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (সূরা মায়িদা, আয়াত নং-২)

 

 অন্যত্রে তিনি ইরশাদ করেন-

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا ۗ وَيَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلِ الْعَفْوَ ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাওএতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছেতবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করেকি তারা ব্যয় করবেবলে দাওনিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর যা বাঁচে তাই খরচ করবে এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্দেশ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেনযাতে তোমরা চিন্তা করতে পার। (সূরা বাকারাআয়াত ২১৯)

   

 ফিকহুল বুয়ূ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-

والحاصل ان الاجارة في الخدمة المباحة إنما تصح اذا كانت اجرتها معلومة بانفرادها. ولا تصح فيما اذا لم تكن اجرتها معلومة. فان كان كذلك في خدمات الفنادق...صارت اجرة المؤظف فيها مركبة من الحلال والحرام...وحل التعامل معه بقدر الحلال.

মর্মার্থহালাল ও হারাম মিশ্রিত হোটেলে হালাল পরিমাণ লেনদেন করা বৈধ। (ফিকহুল বুয়ূ২/১০৫৭)

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. প্রথম কোম্পানীতে চাকরী করা আপনার জন্য জায়েজ নেই। কারণ. সেখানে জুয়ার সহযোগিতা হবে এবং উক্ত রিপোর্টগুলো দিতে হলে তো আপনাকেও খেলা দেখতে হবে। আর বর্তমান খেলাতে তো জুয়া, নাচগান ইত্যাদি তো রয়েছে। আর এগুলো সব হারাম।

 

২. আর রেস্টুরেন্টে যদি অন্য হালাল জিনিসের তুলনায় হারাম জিনিস বিক্রি নিতান্তই কম থাকে,তাহলে ফুকাহায়ে কেরামএমন রেস্টুরেন্টে চাকরী করার রুখসত দিয়ে থাকেন । সর্বোপরি এমন হোটেলে চাকরী না করাই উত্তম হবে এবং তাকওয়ার নিকটবর্তী হবে।

 

 

৩. যদি মদের অর্ডার খুবই কম হয় বা এক দুই হয় আর বাকী সব হালাল পণ্য তাহলে উক্ত রেস্টুরেন্টে চাকরী করা জায়েজ। তবে না করাই তাকওয়ার নিকটবর্তী হবে। তবে আরেকটা কথা হলো মদ বা শূকরের মাংস বহন করার দ্বারা কত টাকা মত মাসিক আসতে পারে সেই পরিমাণ টাকা বেতন থেকে সদকাহ করে দিতে হবে।

৪. কেউ যদি হারাম টাকা দ্বারা হালাল ব্যবসা করে তাহলে এ সম্পর্কে উলামাদের মতবেদ রয়েছে। কেউ কেউ সমস্ত মালকে সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র আসল তথা মূলধন যা হারাম ছিলসেই মালকে মূল মালিকের নিকট ফিরিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিংবা সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বাকী লভ্যাংশটা গ্রহণ করার অবকাশ রয়েছে


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...