আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
582 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (20 points)

বিয়ে ও তালাক বিষয়ক একটি আর্টিকেলে নিম্নোক্ত লেখাটুকু পড়েছি,
১) ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক এই কথাটুকুর যথার্থতা/যৌক্তিকতা কতটুকু?

"বিয়ে এবং তালাকে সাক্ষী দুইজন

বিয়ে ও তালাকের জন্য দু’জন পুরুষ সাক্ষীর সাক্ষ্য জরুরী। তালাক দেয়া বা চাওয়ার জন্য সাক্ষীর দরকার পড়ে না। কিন্তু তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য ন্যূনতম সাক্ষ্যের উপস্থিতি জরুরী।

সব ধরনের ট্রানজেকশানের মতো ইসলামে বিয়ে করা ও বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার কাজও স্বচ্ছতা বজায় থাকা সাপেক্ষে অত্যন্ত সহজ। বিয়ে ও তালাকসহ সব ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান সব বাহুল্য, আড়ম্বর, আনুষ্ঠানিকতা ও দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া হলো সংশ্লিষ্ট সমাজের কালচারাল কনস্ট্রাক্ট। সংশ্লিষ্টদের ওপর বোঝা হয়ে না উঠা পর্যন্ত এগুলো মুবাহ বা অনুমোদনযোগ্য হবে।

আজকালকার তরুণদের কাউকে কাউকে দেখি, নিজের গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ছবি দেয়। ছবির ক্যাপশানে বলে বা বাস্তব সাক্ষাতে ঠাট্টাচ্ছলে বলে, “দেখো, আমার বউ”, অথবা বলে, “আমার বউ আমার জন্য এইটা বানাইয়া আনছে”। তারা বুঝতে পারে না, এভাবে বিবাহযোগ্য কোনো নারীকে কোনো পুরুষ যদি প্রত্যক্ষভাবে স্ত্রীসুলভ কোনো কথা দ্বারা পরিচয় করিয়ে দেয়, উক্ত নারী যদি সেটার প্রতিবাদ না করে, শ্রোতারা যদি ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক সাক্ষী হওয়ার উপযুক্ত হয়, তাহলে তাদের মধ্যে ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম হয়ে যাবে। মোহরানা নির্ধারণ না হলেও। এটি অনলাইন-অফলাইনে সমভাবে প্রযোজ্য।

মোহরানা আদায় করা বিয়ের অপরিহার্য শর্ত এবং বিয়ে পূর্ণাঙ্গ হওয়ার জন্য যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার সাথে সাথে মোহরানা পরিশোধ ওয়াজিব হয়ে পড়ে। কিন্তু বিয়ের মজলিশে কোনো কারণে মোহরানা নির্ধারণ না হলেও বিয়ে বৈধ হবে। সেক্ষেত্রে উক্ত নারীর পরিবারের অন্যান্য নারীদের বিয়ের সময় নির্ধারিত মোহরানার একটা গড়পরতা পরিমাণ তখন মোহরানা হিসেবে ধার্য বা প্রদেয় হবে।

এ ধরনের ‘বেসরকারী বিয়ের’ পরে রীতিসিদ্ধভাবে তালাক হওয়া ছাড়া উক্ত নারী যদি অন্যত্র বিয়ে করে তখন তা হবে বিয়ের ওপর বিয়ে করার মতো ব্যাপার। একজন স্বামীর সাথে তালাক ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করার মাসয়ালা কী, আশা করি তা বলে দিতে হবে না। আর ছেলে বা মেয়ে বন্ধুর সাথে এ ধরনের ‘বেসরকারী বিয়ের’ পরে ফিজিক্যাল রিলেশন হয়েছে কি হয় নাই, সেটা বিয়ে কায়েম হওয়ার কোনো ইস্যু নয়। সেটা বরং উক্ত বিয়ে ভেঙ্গে দেয়া বা তালাকের সাথে রিলেটেড ইস্যু।"

২) বোল্ড করে দেওয়া প্যারা অনুযায়ী আসলেও কি এভাবে বিয়ে হয়ে যায়? কারণ আমি জেনেছিলাম বিয়ের জন্য মজলিশ থাকা জরুরী।
 

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,    
উল্লেখিত লেখাগুলির কিছু অংশ সঠিক,কিছু অংশ সঠিক নয়।

★বিয়ে ও তালাকসহ সব ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান সব বাহুল্য, আড়ম্বর, আনুষ্ঠানিকতা প্রক্রিয়া হলো সংশ্লিষ্ট সমাজের কালচারাল কনস্ট্রাক্ট। সংশ্লিষ্টদের ওপর বোঝা হয়ে না উঠা পর্যন্ত এগুলো মুবাহ বা অনুমোদনযোগ্য হবে।

=কেহ যদি এগুলো সন্তুষ্টি চিত্তে করে,তাহলে অনুমোদন যোগ্য।
নতুবা জায়েজ হবেনা।

★বিয়ের মজলিশে কোনো কারণে মোহরানা নির্ধারণ না হলেও বিয়ে বৈধ হবে। সেক্ষেত্রে উক্ত নারীর পরিবারের অন্যান্য নারীদের বিয়ের সময় নির্ধারিত মোহরানার একটা গড়পরতা পরিমাণ তখন মোহরানা হিসেবে ধার্য বা প্রদেয় হবে।

=এটিকে মোহরে মিছিল বলে।  সহীহ

★প্রশ্নে উল্লেখিত যেই পদ্ধতিকে বিবাহ হয়ে যাবে বলা হচ্ছে,এটি ঠিক নয়।
এ পদ্ধতিতে বিবাহ সহীহ হবেনা।   

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ

ولا بالاقرار علي المختار .... كقوله هي امرأتي . لأن الإقرار إظهار لما هو ثابت وليس بإنشاء 
সারমর্মঃ 
বিবাহের বিষয় স্বীকার করার দ্বারা  বিবাহ সহীহ হয়না।
যেমন কেহ যদি বলে যে এটি আমার স্ত্রী।
(এর দ্বারা বিবাহ হবেনা।)
কেননা স্বীকার করার অর্থ হলো যে জিনিস আগে থেকেই প্রমানিত,সেটি প্রকাশ করা 
(ফাতাওয়ায়ে শামী ৪/৭৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...