আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
273 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,

প্রথম বার কাজী অফিস থেকে তালাক দেয়া হয়। তালাক নামায় সাইন করার সময় আমি এক তালকের নিয়ত করি। তলাকের নোটিশে (যেটা  কাজী অফিস থেকে ময়ে পক্ষের নিকট ডাক যোগে পাঠানো হয়)  লেখা ছিলো তালাক দিয়ে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করলাম। পরে ইদ্দত এর মধ্যে আমাদের  আমার স্ত্রীর ফোফার বাসায় দেখা হলে আমরা একে অপরকে চুমু খাই। ইদ্দত শেষ হয়ে যায় আমি আর তালাক প্রত্যাহার করি নাই।

পরে দুই পরিবারের আর মিট্মাট হয় নাই এবং উভয় পরিবারের সম্মতিতে কাজী অফিসে আবার তালাক হয়। তখন তালাক নামায় স্বামী স্ত্রী উভয় ই সাইন করে। রাষ্ট্রীয় আইনে যেটাকে সি তালাক( স্বামী- স্ত্রীর সম্মতিতে তালাক) বলের দ্বিতীয় বার আমি মুখে তালাত উচ্চারন করি নাই এবং মানেও কোন নিয়ত করি নাই। এটা করা হইছিলো মূলত কণে পক্ষ যাতে কোন মামলা করতে না পারে তার জন্য। স্ত্রী প্রথম তালাকের আগ থেকেই বাবার বাড়িতে আছে। আমাদের বাসায় আর আসে নাই।

এখন সর্বমোট কয় তালাক আপতিত হইছে?

আমাদের কি তিন তালাকে বাইন হয়ে গেছে।এই স্ত্রিকে কি আর ফিরিয়ে আনার কোন সুযোগ আছে?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো তালাকে রজয়ীর ক্ষেত্রে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়া না হলে ইদ্দত অতিক্রম করার পর ঐ স্ত্রী তার জন্য অন্যান্য গায়রে মাহরাম মহিলার ন্যায় হয়ে যায়।
তাকে আর নতুন করে তালাক দেওয়া যায়না।  

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ اِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغۡنَ اَجَلَہُنَّ فَلَا تَعۡضُلُوۡہُنَّ اَنۡ یَّنۡکِحۡنَ اَزۡوَاجَہُنَّ اِذَا تَرَاضَوۡا بَیۡنَہُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ؕ ذٰلِکَ یُوۡعَظُ بِہٖ مَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ یُؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ ذٰلِکُمۡ اَزۡکٰی لَکُمۡ وَ اَطۡہَرُ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۳۲﴾

আর তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দাও এবং তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করে, এরপর তারা যদি বিধিমত পরস্পর সম্মত হয়, তবে স্ত্রীরা নিজেদের স্বামীদের (নতুন হোক বা আগের স্বামী হোক)  বিয়ে করতে চাইলে তোমরা তাদেরকে বাধা দিও না। এ দ্বারা তাকে উপদেশ দেয়া হয় তোমাদের মধ্যে যে আল্লাহ ও আখেরাতে ঈমান রাখে, এটাই তোমাদের জন্য শুদ্ধতম ও পবিত্রতম। আর আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা জান না।
(সুরা বাকারা ২৩২)

وقال العلامۃ الکاسانی:
"فلا یصح الطلاق الا فی الملک او فی علقۃ من علائق الملک وہی عدۃ الطلاق".
(بدائع الصنائع: ٣/ ١٢٦، فصل واماالذی یرجع الی المرأۃ)
সারমর্মঃ
মালিকানা থাকা অবস্থায় অথবা সেই সাথে সংশ্লিষ্ট অবস্থায় শুধু তালাক পতিত হয়।
নতুবা নয়।       

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (3/ 306)

(الصريح يلحق الصريح و) يلحق (البائن) بشرط العدة (والبائن يلحق الصريح) الصريح ما لا يحتاج إلى نية بائنا كان الواقع به أو رجعيا فتح  ۔۔۔ (لا) يلحق البائن (البائن)

সারমর্মঃ
স্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলে ইদ্দতের মধ্যে স্পষ্ট এবং অস্পষ্ট অভয় প্রকারের বাক্য দ্বারাই তালাক দিলে তাহা পতিত হবে।
তবে কেনায়া বাক্যে তালাক দেওয়া হলে ইদ্দতের মধ্যে স্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলে আবার তালাক পতিত হবে।
অস্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলে সেই তালাক পতিত হবেনা।   

★★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ১ম বার তালাক দেওয়ার দ্বারা এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়ে গিয়েছে।
আপনার সুযোগ ছিলো তার ইদ্দতের মধ্যেই তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার।
এখন আপনি যে তার ইদ্দতের মধ্যে তার ফুফার বাসায় তাকে চুমো খেয়েছিলেন,এটি কি তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার নিয়তে খেয়েছিলেন কিনা?

যদি আপনার তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার নিয়ত থাকে,তবেই কেবল ইদ্দত অতিক্রম করার পর প্রশ্নে উল্লেখিত তালাকও পতিত হবে।
সেক্ষেত্রে সেই তালাক  নামায় যত তালাকের কথা উল্লেখ রয়েছে, আগের এক তালাক সহ সেই কয় তালাক পতিত হবে।
যদি ২য় বারে তাকে তিন তালাক দেওয়ার কথা লেখা থাকে,তাহলে তো পুরোপুরি বিচ্ছেদ।
শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত তাকে আর বিবাহ করেও নেওয়া যাবেনা।
আর যদি এক তালাক লেখা থাকে,তাহলে মোট ২ তালাক পতিত হবে।
ইদ্দতের মধ্যে তাকে রজ'আত করে ফিরিয়ে নেওয়া যাবে। 
ইদ্দত চলে গেলে তাকে নতুন করে আবার বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।
,
ঐ চুমুর সময় সেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার নিয়য় না থাকলে পরবর্তী তালাক যেহেতু স্ত্রীর ইদ্দতের পরে দেওয়া হয়েছে,এটি তালাকই হবেনা।
সেক্ষেত্রে আগের এক তালাকই শুধু থাকবে।
নতুন করে তাকে বিবাহ করার সুযোগ আপনার থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...