আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
110 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
১. এক হাদিসে দেখেছিলাম - কিয়ামত দিবসে অনেক মানুষের নেক আমল ধ্বংস করা হবে গোপন পাপের কারণে।  এমন লোক নাকি তাহাজ্জুদ ও পড়ত। তাদের নেক আমল নাকি উহুদ পাহাড়ের সমান হবে। কেবল গোপন পাপের কারণেই তা ধ্বংস হবে।
উপরোক্ত হাদিসের আলোকে কোন ধরণের গোপন পাপের কথা বলা হয়েছে? মানুষ তো সাধারণত গোপনেই পাপ করে। তাহলে তো জান্নাতে যাওয়া খুব বেশি কঠিন হবে বা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে যাবে যদি গোপন পাপ ত্যাগ না করা যায়। আরো স্পেসিফিক ভাবে বললে - নবী রাসুল গণ ছাড়া আর কেউই পাপ মুক্ত নয়। আমাদের তো জান্নাতের আশা করাই তাহলে উচিত না।


২. আল্লাহর ক্রোধ আর কাঠিন্য বেশি নাকি দয়া আর রহমত আর ক্ষমাশীলতা বেশি। এ ব্যাপারে আকিদা আর ধারণা কেমন হওয়া উচিত।
৩. কিছুদিন যাবত আল্লাহর দয়া আর ক্ষমাশীলতা নিয়ে যত কথা শুনি বা এ সংক্রান্ত ওয়াজ শুনি তখন আমার মনে হয় বক্তারা যেভাবে আল্লাহর ক্ষমাশীলতা কে সহজ করে বোঝান বাস্তবে তত সহজ নয়। আমার মনে হয় এগুলো কেবল ই সান্ত্বনা। এগুলো আমার কাছে মিথ্যা মনে হয়না। কেবল মনে হয় বাস্তবতার নিরীখে এত সহজ নয় ব্যাপার টা। এরথেকে আল্লাহর ক্রোধ বা শাস্তি সংক্রান্ত আয়াত সমূহ বেশি বাস্তব মনে হয়। আমার প্রায়ই মনে হয় আমাদের বাবা মা রা আমাদের যেভাবে ক্ষমা করেন বা যত সহজে ক্ষমা করেন আল্লাহ তায়ালা তা কখনোই করেন না। আবার আমাদের বাবা মা আমাদের যেভাবে শাসন করেন বা শাস্তি দেন, আল্লাহ আমাদের তার থেকেও কঠিন শাস্তিই দেন। আমার খুব ইচ্ছা করে আমি আল্লাহ কে যেন আমার বাবা মার থেকেও কোমল আর আপনরূপে পাই। কিন্তু আল্লাহ কে নিয়ে কঠিন আয়াতঅগুলোর কথা ভাবলেই গা শিউরে উঠে, হতাশ হয়ে যাই। চিন্তা করি, আমি তো আত নবী রাসুল দের মত নিষ্পাপ না। অতি নগন্য একজন আদম সন্তান। পরিপূর্ণ তাওবা করা সবসময় সম্ভব না। আবার সব গুনাহ পরিত্যাগ করাও সম্ভব না।  পরিপূর্ণ গুনাহ মুক্ত যদি থাকতেই না পারি,তাওবার শর্ত যদি পূরণ করতে নাই বা পারি তাহলে আল্লাহর কাছে কোমলতা কেন আশা করব? যদি আল্লাহ নিজ ইচ্ছায় করুনা করেন তবে ভিন্ন বিষয় কিমতু গ্যারান্টি নেই। আমার ও ধরণের চিন্তা কেন আসে বুঝিনা। এগুলো কি কুফরি? আমার এ চিন্তাগুলোর ব্যাপারে যদি কিছু বলতেন।

1 Answer

0 votes
by (696,640 points)
edited by


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
জ্বী, গোপন পাপ আ'মলকে ধংস করে দেয়, সুতরাং আপনার উচিৎ যে, আপনি গোপন পাপ সমূহকে পরিত্যাগ করবেন।

(২)
আল্লাহর ক্রোধের চেয়ে ক্ষমাই বেশী।

(৩)
মাতাপিতার চেয়ে আল্লাহর কোমলতা অনেক বেশী।গোনাহ করার পর তাওবাহ করতে হবে।তাওবাহ না করলে,আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার প্রশ্ন অবান্তর।আপনি চাচ্ছেন, গোপন গোনাহ করবেন, এবং তাওবাহ ব্যতিত আবার জান্নাতেও যাবেন, এমনটা হবে না।মানুষ যতই গোনাহ করুক না কেন, সে যদি তাওবাহ করে নেয়, তাহলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন।

https://www.ifatwa.info/1012 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেন,
ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟﺨﺪﺭﻱ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - : " ﻛﺎﻥ ﻓﻲ ﺑﻨﻲ ﺇﺳﺮﺍﺋﻴﻞ ﺭﺟﻞ ﻗﺘﻞ ﺗﺴﻌﺔ ﻭﺗﺴﻌﻴﻦ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎ ، ﺛﻢ ﺧﺮﺝ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﺄﺗﻰ ﺭﺍﻫﺒﺎ ، ﻓﺴﺄﻟﻪ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﻟﻪ ﺗﻮﺑﺔ ؟ ﻗﺎﻝ : ﻻ ; ﻓﻘﺘﻠﻪ ، ﻭﺟﻌﻞ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺭﺟﻞ : ﺍﺋﺖ ﻗﺮﻳﺔ ﻛﺬﺍ ﻭﻛﺬﺍ ، ﻓﺄﺩﺭﻛﻪ ﺍﻟﻤﻮﺕ ﻓﻨﺎﺀ ﺑﺼﺪﺭﻩ ﻧﺤﻮﻫﺎ ، ﻓﺎﺧﺘﺼﻤﺖ ﻓﻴﻪ ﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﺮﺣﻤﺔ ﻭﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ، ﻓﺄﻭﺣﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﻘﺮﺑﻲ ، ﻭﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﺒﺎﻋﺪﻱ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﻗﻴﺴﻮﺍ ﻣﺎ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﻓﻮﺟﺪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻗﺮﺏ ﺑﺸﺒﺮ ﻓﻐﻔﺮ ﻟﻪ " ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, বনি ইসরাঈল গোত্রে একজন ব্যক্তি ছিল,যে নিরানব্বই জনকে হত্যা করেছিল।অতঃপর যখন হেদায়তের নিকটবর্তী হল,তখন সে একজন পাদ্রীর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল তার তাওবাহ কি কবুল হবে?ঐ পাদ্রী উত্তরে বলল,না, তোমার তাওবাহ কবুল হবে না। তখন সে ঐ পাদ্রীকেও হত্যা করে ফেলল।অতঃপর সে তার তাওবাহর কবুল হওয়া না হওয়া সম্পর্কে লোকদেরকে জিজ্ঞেস করতে লাগল।তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি অমুক গ্রামে যাও সেখানে হয়তো কোনো সমাধান পেতে পারেন। সে ঐ গ্রামের দিকেই যেতে লাগল,তার বুক সেই গ্রামের দিকে থাকাবস্থায় রাস্তায় মধ্যখানে সে মূত্যুমূখে পতিত হল।সে সময় জান কবজের ব্যাপারে রহমতের ফিরিস্তা এবং আযাবের ফিরিস্তিাদের মধ্য ঝগড়া বেধে গেলো।তখনই আল্লাহ তা'আলা তার উদ্দিষ্ট ঐ গ্রামকে নিকটবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন।এবং ছেড়ে আসা গ্রামকে দূরবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন। তারপর আল্লাহ তা'আলা ফিরিস্তাদেরকে জায়গা পরিমাপন করার নির্দেশ দিলেন।জায়গা পরিমাপণ করে দেখা গেল যে, উদ্দিষ্ট গ্রাম ছেড়ে আসা গ্রাম থেকে অর্ধহাত কম।অতঃপর সেই ব্যক্তিকে মাফ করে দেয়া হল।(এবং রহমতের ফিরিস্তা তার জান কবয করল)
(মিশকাত-২৩২৭)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (696,640 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...