জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি তালাকের স্বীকারোক্তি প্রদান করে, আর সেই স্বীকারোক্তি যদি মিথ্যা হয়,তবুও তালাক পতিত হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী নেগেটিভ উত্তর কোন বাক্যে দিয়েছিলো?
উক্ত নেগেটিভ উত্তর প্রদানের সময় আপনি কোন প্রশ্ন করেছিলেন?
দুটি বিষয় স্পষ্ট আকারে কমেন্ট বক্সে উল্লেখ করলে সমাধান জানাতে সুবিধা হবে।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার সেই পুরুষের সাথে বিবাহ হওয়ার পরে আরো এক তালাক পতিত হলেও তো পুনরায় তাকে বিবাহ করতে পারবেন।
সুতরাং এটি নিয়ে আর চিন্তিত হবেননা।
,
নতুবা অন্য কোনো পুরুষকে বিবাহ করতে পারেন।
★আপনি তালাকের বিষয় নিয়মিত বেশি ওয়াসওয়াসায় ভুগার কারনে বিষয়টি মারাত্মক হয়ে যাচ্ছে।
সহজ বিষয় কঠিন হয়ে যাচ্ছে,এর থেকে পতিত্রান পেতে হবে।
তালাক সংক্রান্ত সকল মাসয়ালা পড়া থেকে বিরত থাকুন।
বিষয়টি মাথায় আসতেই দিবেননা।
,
★আপনি কোনো ভাবেই মৃত্যু কামনা করবেননা।
আল্লাহর কাছে দোয়া করুন,সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে,ইনশাআল্লাহ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: لَا تَمَنَّوُا الْمَوْتَ فَإِنَّ هَوْلَ الْمُطَّلَعِ شَدِيدٌ وَإِنَّ مِنَ السَّعَادَةِ أَنْ يَطُولَ عُمْرُ الْعَبْدِ وَيَرْزُقَهُ اللّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْإِنَابَةَ .
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মৃত্যু কামনা করো না। কেননা মৃত্যু যন্ত্রণা খুবই কঠিন জিনিস। মানুষের জীবন দীর্ঘ হওয়া নিশ্চয় সৌভাগ্যেরই ব্যাপার। আল্লাহ তা‘আলা তাকে তাঁর আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে নেন।
(আহমাদ ১৪৫৬৪, শু‘আবুল ঈমান ১০১০৫,মিশকাত ১৬১৩)
عَن حَارِثَةَ بْنِ مُضَرَّبٍ قَالَ: دَخَلْتُ عَلى خَبَّابٍ وَقَدِ اكْتَوى سَبْعًا فَقَالَ: لَوْلَا أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُول: لَا يَتَمَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ لَتَمَنَّيْتُه. وَلَقَدْ رَأَيْتُنِىْ مَعَ رَسُولِ اللّهِ ﷺ مَا أَمْلِكُ دِرْهَمًا وَإِنَّ فِي جَانِبِ بَيْتِيَ الْانَ لَأَرْبَعِينَ أَلْفَ دِرْهَمٍ قَالَ ثُمَّ أُتِيَ بِكَفَنِه فَلَمَّا رَاهُ بَكى وَقَالَ لَكِنَّ حَمْزَةَ لَمْ يُوجَدْ لَه كَفَنٌ إِلَّا بُرْدَةٌ مَلْحَاءُ إِذَا جُعِلَتْ عَلى رَأْسِه قَلَصَتْ عَنْ قَدَمَيْهِ وَإِذَا جُعِلَتْ عَلى قَدَمَيْهِ قَلَصَتْ عَنْ رَأْسِه حَتّى مُدَّتْ عَلى رَأْسِه وَجُعِلَ عَلى قَدَمَيْهِ الْإِذْخِرُ.
হারিসাহ্ ইবনু মুযাররাব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার খাব্বাব-এর নিকট গেলাম (সে সময় তিনি অসুস্থ ছিলেন)। তিনি তার শরীরের সাত জায়গায় দাগ লাগিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, আমি যদি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ‘তোমরা মৃত্যু কামনা করো না’ কথাটি না শুনতাম, তাহলে অবশ্যই মৃত্যু কামনা করতাম। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আমার নিজেকে এরূপ পেয়েছি যে, আমি একটি দিরহামেরও মালিক ছিলাম না। আর এখন আমার ঘরের কোণেই চল্লিশ হাজার দিরহাম পড়ে আছে। হারিসাহ্ বলেন, তারপর খাব্বাবের কাছে তার কাফনের কাপড় আনা হলো (যা খুবই উত্তম দামী কাপড় ছিল) তিনি তা দেখে কাঁদতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন, যদিও এ কাপড় জায়িয কিন্তু হামযাহ্ (রাঃ)-এর জন্য পুরো কাফনের কাপড় পাওয়া যায়নি। শুধু একটি কালো ও সাদা পুরাতন চাদর ছিল। তা দিয়ে মাথা ঢাকলে পা খালি হয়ে যেত। আবার পা ঢাকলে মাথা খালি হয়ে যেত। অবশেষে এ চাদর দিয়েই মাথা ঢেকে দেয়া হয়েছিল। আর পা ঢেকে দেয়া হয়েছিল ইযখার ঘাস দিয়ে।
(আত্ তিরমিযী ৯৭০, আহমাদ ২১০৭২,মিশকাত ১৬১৫)
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ يَقُولُ: اَللّٰهُمَّ أَصْلِحْ لِىْ دِينِى الَّذِىْ هُوَ عِصْمَةُ أَمْرِىْ وَأَصْلِحْ لِىْ دُنْيَاىَ الَّتِىْ فِيهَا مَعَاشِىْ وَأَصْلِحْ لِىْ اٰخِرَتِى الَّتِىْ فِيهَا مَعَادِىْ وَاجْعَلِ الْحَيَاةَ زِيَادَةً لِىْ فِىْ كُلِّ خَيْرٍ وَاجْعَلِ الْمَوْتَ رَاحَةً لِىْ مِنْ كُلِّ شَرٍّ.
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দু‘আ) বলতেন,
‘‘আল্ল-হুম্মা আস্লিহ লী দীনিল্লাযী হুওয়া ‘ইস্মাতু আম্রী ওয়া আস্লিহ লী দুন্ইয়া- ইয়াল্লাতী ফীহা- মা‘আ-শী ওয়া আস্লিহ লী আ-খিরাতিল্লাতী ফীহা- মা‘আ-দী ওয়াজ্‘আলিল হায়া-তা যিয়া-দাতান লী ফী কুল্লি খয়রিন ওয়াজ্‘আলিল মাওতা রা-হাতান লী মিন কুল্লি শাররিন’’
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য আমার দীন [ধর্ম]-কে ঠিক করে দাও, যা ঠিক করে দেবে আমার কার্যাবলী। তুমি ঠিক করে দাও আমার দুনিয়া [ইহকাল], যাতে রয়েছে আমার জীবন। তুমি ঠিক করে দাও আমার আখিরাত [পরকাল], যেখানে আমি [অবশ্যই] ফিরে যাবো। আমার হায়াত [আয়ুষ্কাল] প্রত্যেক কল্যাণকর কাজের জন্য বাড়িয়ে দাও, আর আমার মৃত্যুকে আমার জন্য প্রত্যেক অকল্যাণ হতে শান্তিস্বরূপ কর।)।
(মুসলিম ২৭২০, আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর ২৪৫, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৫১৯/৬৬৮, সহীহ আল জামি‘ ১২৬৩,মিশকাত ২৪৮৩)
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন তার নিকটে বিপদ পৌঁছার কারণে মৃত্যু কামনা না করে। তবে সে যদি মৃত্যু কামনা করতেই চায়, তবে যেন বলে, হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রেখ যে পর্যন্ত আমার জীবন কল্যাণকর হয় এবং আমাকে মৃত্যু দান কর, যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৬০০)।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
যদি আপনার পক্ষে দুনিয়াবী জীবন অনেক অসহনীয় হয়,সেক্ষেত্রে আপনি এই দোয়া করতে পারেনঃ-
হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রেখো যে পর্যন্ত আমার জীবন কল্যাণকর হয় এবং আমাকে মৃত্যু দান করো, যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়।