আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
214 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।
অনেক দিন আগে কোথায়  জানি পড়েছিলাম,তালাক নিয়ে  মিথ্যা  কথা বললেও তালাক  হয়ে  যায়, এটা কি সত্যি ????
আমি নিচে তিনটি  অবস্থা  জানতে চাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ  বইলেন।

 ৫/৬ মাস আগে এক তালাক  বায়েন হয়ে গেছে  এমন এক স্ত্রী  এবং এক স্বামীর  ৫/৬  মাস পরের  কথোপকথন(যাদের  এক তালাক  বায়েনটা হয়েছিল সহবাসের আগে শর্তযুক্ত তালাকের মাধ্যমে)ঃ

১)স্ত্রীঃ তুমি  কি  আমাকে পূর্বে তালাকের শর্তের সাথে যতবার- ততবার যুক্ত  করছিলা?  স্ত্রী  জানে, এই শব্দ  যুক্ত করে  নাই,তাও জিজ্ঞেস  করছে।

স্বামীঃ  হ্যাঁ করেছিলাম।
 [ কিন্তু এটা মিথ্যা, সম্পূর্ন মিথ্যা। স্বামী  বিরক্তিতে অথবা রাগে অথবা জিদ করে মিথ্যা  কথা বলেছে।সে পূর্বে  শর্তের সাথে  যতবার- ততবার  যুক্ত  করে  নাই। ]

কিন্তু  স্বামীর এরূপ মিথ্যা  কথা বলার  কারনে  কি  স্ত্রীর উপর  যতবার- ততবারের বিধান আরোপিত  হয়ে গেলো???

২)স্ত্রীঃ  তুমি কি কখনো
"  পুনরায় বিয়ের পর  আমার স্ত্রী  অমুক  কাজ  করলে  তালাক। " এমন বলেছো?

স্বামীঃ হ্যাঁ বলেছি।
[ কিন্তু  স্বামী এটা মিথ্যা কথা বলেছিলো  , স্বামী   কখনো  এমন মুখে উচ্চারণ  করে নাই। স্বামী  বিরক্তিতে অথবা রাগে অথবা জিদ করে মিথ্যা  কথা বলেছে।]

এখন  কি তাদের  পুনরায় বিয়ে  হলে সত্যিই তার স্ত্রী  তালাক  হয়ে  যাবে???
কিন্তু  কোন কাজ  করলে তালাক  হবে???

স্বামী  তো এমন আসলে  বলে নাই,সে তো স্ত্রীকে মিথ্যা  বলেছিল।

৩)স্ত্রীঃ কখনো "যেই মেয়েকে বিয়ে  করবো, সেই মেয়ে তালাক"এমন বলেছো?

স্বামীঃ

হ্যাঁ বলেছি।

[ কিন্তু স্বামী এটা মিথ্যা কথা
   বলেছিল, স্বামী কখনো  এমন মুখে উচ্চারণ  হয় নাই।   স্বামী  বিরক্তিতে অথবা রাগে অথবা জিদ করে মিথ্যা  কথা বলেছে। ]

এখন  কি তাদের   বিয়ে হলে সত্যিই তার স্ত্রী  তালাক  হয়ে  যাবে???
স্বামী  তো এমন আসলে  বলে নাই,সে তো স্ত্রীকে মিথ্যা  বলেছিল।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


তালাকের বিষয় খুবই মারাত্মক। 
তাই এই জাতীয় কোনো বাক্য বলা ঠিক নয় 
,  
হাদীস শরীফে  এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★শরীয়তের বিধান হলো কেহ যদি তালাক না দেওয়া সত্ত্বেও তালাকের স্বীকারোক্তি প্রদান করে,তাহলেও তালাক পতিত হয়ে যাবে। 

ولو أقر بالطلاق وہو کاذب وقع في القضاء … إذا قال: أردت بہ الخبر عن الماضي کذبا، وإن لم یرد بہ الخبر عن الماضی، أو أراد بہ الکذب، أو الہزل وقع قضاء ودیانۃ۔ (البحر الرائق ۳؍ ۲۴۶ کراچی، سکب الأنہر علی ہامش مجمع الأنہر ۲؍۸ بیروت)
সারমর্মঃ
কেহ যদি তালাকের স্বীকারোক্তি প্রদান করে, আর সেই স্বীকারোক্তি যদি মিথ্যা হয়,তবুও তালাক পতিত হবে।   

أن من أقر بطلاق سابق یکون ذٰلک إیقاعا منہ في الحال؛ لأن من ضرورۃ الاستناد الوقوع في الحال، وہو مالک للإیقاع غیر مالک للاستناد۔ (المبسوط للسرخسي / باب الطلاق ۴؍۱۰۹ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি পূর্বে দেওয়া তালাকের বিষয়টি  স্বীকার করে,তাহলে সেটি সেই সময়েই তালাক হয়ে যাবে।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সুতরাং স্বামী যদি তালাকের স্বীকারোক্তি প্রদান করে, আর সেই স্বীকারোক্তি যদি মিথ্যা হয়,তবুও তালাক পতিত হবে। 
তবে এই তালাকটি স্বীকারোক্তি প্রদানের সময়েই পতিত হবে।
এর আগে নয়।
তাই স্বামীর এই মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদানের আগ পর্যন্ত তাদের কৃত ঘর সংসার বৈধ।
তবে এই মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদানের পর তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হবে।
,
(১.২)
উভয় ছুরতেই যেহেতু এই সময়ে তাদের মাঝে আর বৈবাহিক সম্পর্ক নেই,তাই স্বামীর এহেন মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদানের দ্বারা কোনো সমস্যাই হবেনা।
 তাদের  পুনরায় বিয়ে  হলে তার স্ত্রী সেই কাজ করলেও তালাক হবেনা।
,
(০৩)
এক্ষেত্রে এই মিথ্যা স্বীকারোক্তি এখন থেকেই কার্যকর হবে।
তাই এখন সেই পুরুষ যেই মেয়েকেই বিবাহ করবে,সে তালাক প্রাপ্তা হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...