আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
152 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (41 points)
edited by
১) অনেক পরিবারে দেখি স্বামী তার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলে,গালাগালি করে। এসব তো ইসলামে নেই। এমন স্বামী র সাথে সংসার করার জন্য কি সাজেশন দিবেন?একত্রে থাকা উচিত?নাকি তালাক দেয়া উচিত?স্বামীর স্বভাব পরিবর্তন হওয়ার মত না।কিছুদিন পরপরই মারধর, গালাগাল করে।

২)বাবা যদি সন্তানের উপর মারধর করে,গালাগাল, বাজে ভাষা ব্যবহার করে সেক্ষেত্রে সন্তানের কি বাবার সাথে খারাপ ব্যবহার করার অনুমতি আছে? বাবা কিছু দিন পর পরই সন্তানের সাথে এমন বিশ্রি আচরন করে। সামান্য কিছু হলে **** বলে সম্বোধন করে। ইসলামিক বিষয় নামায রোজা পর্দার বিষয় নিয়ে ও টিটকারি মারতে থাকে। সন্দেহ করে বিভিন্ন ট্যাগ দেয়।

সন্তানের এছাড়া কোন অপরাধ আসলেই নেই।তার কোথাও কোন খারাপ সম্পর্ক,খারাপ কাজেও জড়িত না।

ছোট বেলা থেকেও তার সাথে অনেক খারাপ আচরন, মারধর হয়েছে।মানুষের সামনেও।

মা বাবা যদি সন্তানের সাথে এমন আচরন করে তাদের কি গুনাহ হবে না?সন্তান কি মা বাবার এমন আচরনের কারনে তাদের এভয়েড করতে পারবে?শুধু সালাম দিল।এছাড়া যত টা সম্ভব এভয়েড করা।কারন তাদের সাথে ভালো ভাবে থাকার সুযোগ ই নেই।একদিন ভাল থাকলে তারপরদিন বা ক দিন পর আগের মত অত্যাচার শুরু হয় যায়। শারীরিক না হলেও মানসিক অত্যাচার তো আছেই। এসব থেকে মুক্তির উপায় কি?

৩) আখলাক কিভাবে উত্তম করা যায়?বিস্তারিত কোন নসীহা, বই সাজেশন করলে উপকৃত হব।

৪)কিভাবে শয়তানের ওয়াস ওয়াসা থেকে বাঁচতে পারি?বিস্তারিত জানাবেন, কোন বই, পিডিএফ সাজেশন করলে পড়তে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
৫)নেককার স্বামী -স্ত্রী পরিবারের জন্য কি দুআ করা উচিত?

৬) আমাদের পূর্বপুরুষ গন কিভাবে সন্তান লালন পালন করতেন?এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন প্লিজ। কোন বই সাজেশন দিতে পারেন ইনশাআল্লাহ। ইতিহাস বা এ ধরনের তথ্য আছে এমন বই বা এমন তথ্য জানা নেই। এবং আমার জানার অন্য কোন সুযোগ ও নেই যে কেউ জানাবে।

৭) অফিস থেকে প্রিন্ট আউট,ফটোকপি করা কি হালাল?কারন অফিস হয় সরকারি না হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ইসলামিক প্রতিষ্ঠান নয়। এবং তারা সম্পূর্ন ভাবে সুদ মুক্ত ও নয়।প্রায় প্রতিটা প্রতিষ্ঠান সুদের সাথে যুক্ত। সেক্ষেত্রে সেসব প্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত তাদের কি সেসব প্রতিষ্ঠানের কোন সেবা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অনুমতি আছে, হালাল হবে?প্রতিষ্ঠানের কোন জিনিস ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যাবে? অনেককে দেখি অফিস থেকে ফাইল, কলম,ফেলে দেয়া টি টেবিল,বাক্স,ট্রাংক নিয়ে আসে।
এগুলো কি জায়েজ?
৮) কোন বই বা পড়া বা শিক্ষনীয় বিষয় রেকর্ড করে শেয়ার করা হলে সেটা যদি কোন গায়ের মাহরাম শুনেন,তাহলে কি গুনাহ হবে? এখানে তো দেখার সুযোগ নেই। কোন শিক্ষনীয় বিষয়, নারীদের অডিও সিরিজে কাজ করা এবং সেটা যদি পুরুষ রাও শুনে সেটা কতটুকু জায়েজ?

এক বোন প্রশ্নগুলো করেছেন। উত্তর জানাবেন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (63,080 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

সহীহ বুখারীতে এসেছে-

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ إِنْ كَانَتْ أَحَبَّ أَسْمَاءِ عَلِيٍّ ـ رضى الله عنه ـ إِلَيْهِ لأَبُو تُرَابٍ، وَإِنْ كَانَ لَيَفْرَحُ أَنْ يُدْعَى بِهَا، وَمَا سَمَّاهُ أَبُو تُرَابٍ إِلاَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَاضَبَ يَوْمًا فَاطِمَةَ فَخَرَجَ فَاضْطَجَعَ إِلَى الْجِدَارِ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَجَاءَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتْبَعُهُ، فَقَالَ هُوَ ذَا مُضْطَجِعٌ فِي الْجِدَارِ فَجَاءَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَامْتَلأَ ظَهْرُهُ تُرَابًا، فَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَمْسَحُ التُّرَابَ عَنْ ظَهْرِهِ يَقُولُ " اجْلِسْ يَا أَبَا تُرَابٍ ".

 

সাহল ইবনু সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আলী (রাঃ) এর নিকট তার নামগুলোর মধ্যে 'আবূ তুরাব' কুনিয়াত ছিলো সবচেয়ে বেশী প্রিয় এবং এ নামে ডাকলে তিনি খুব খুশী হতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই তাকে 'আবূ তুরাব' কুনিয়াতে ডেকেছিলেন। একদিন তিনি ফাতিমা (রাঃ) এর সঙ্গে রাগ করে বেরিয়ে এসে মসজিদের দেয়াল ঘেসে ঘুমিয়ে পড়লেন। এসময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তালাশ করছিলেন। এক ব্যাক্তি বললঃ তিনি তো ওখানে দেয়াল ঘেসে শুয়ে আছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে গিয়ে তাকে এমন অবস্থায় পেলেন যে তার পিঠে ধূলাবালি লেগে আছে। তিনি তার পিঠ থেকে ধূলা ঝাড়তে লাগলেন এবং বলতে শুরু করলেনঃ হে আবূ তুরাব! উঠে বসো। (বুখারী, হাদীস নং-৫৭৭১)

 

স্বামী-স্ত্রী একজন আরেক জনের পোষাক সরূপ। তাই তারা একে অপরে পোষাকের মত মিলে মিশে থাকবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন -

أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ

রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ আল্লাহ অবগত রয়েছেন যেতোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলেসুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেনতা আহরন কর। (সুরা বাকারাআয়াত ১৮৭)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. স্বামী স্ত্রীর মান অভিমান নিয়েই সংসার । তবে স্বামীকে বুঝিয়ে ইসলামের শিক্ষা গ্রহণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। আবার তাবলীগেও পাঠানো যেতে পারে। তাহলে দেখা যাবে কিছু হলেও পরিবর্তন আসবে।

২. পিতা মাতার সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। আবার পিতা মাতা যদি কোনো সন্তানের সাথে অন্যায় ভাবে খারাপ ব্যবহার করে তাহলে তাদের গুনাহ হবে।

৩. কুরআন হাদীন পড়ুন এবং সেভাবে চলার চেষ্টা করুন।
৪. শয়তানের ওয়াসওয়াসা এড়িয়ে চলবেন।

৫. হ্যাঁ, স্বামী -স্ত্রী পরিবারের জন্য দুআ করা উচিত । পরিবারের কল্যাণের দোয়া করা উচিৎ।

৬. কুরআন হাদীস পড়ুন ।

৭. সাধারণত অফিসের জিনিস ব্যক্তিগত ব্যবহারের অনুমতি থাকে না। তাই সে ক্ষেত্রে অফিসের জিনিস নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা জায়েজ হবে না। তবে অনুমতি থাকলে যাবে।

৮. ফিতনার আশংকা না থাকলে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...