বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَإِذَا بَلَغَ
الْأَطْفَالُ مِنكُمُ الْحُلُمَ فَلْيَسْتَأْذِنُوا كَمَا اسْتَأْذَنَ الَّذِينَ
مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ ۗ وَاللَّهُ
عَلِيمٌ حَكِيمٌ
তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োপ্রাপ্ত হয়, তারাও যেন
তাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায় অনুমতি চায়। এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ তোমাদের
কাছে বর্ণনা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(সূরা নূর, আয়াত ৫৯)
ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
দশ বৎসরে উপনীত হওয়া সন্তানদের মধ্যে শয়নস্থল-কে পৃথক করে দিতে হবে।এ বিধান ছেলে
সন্তান ও মেয়ে সন্তান এবং সন্তান ও পুরুষদের মধ্যে প্রযোজ্য হবে।কেননা এটা ফিতনার
দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদিও বিষয়টা সময়সাপেক্ষ।
বায্যাযিয়্যাহ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,যখন ছেলে
সন্তান দশ বৎসরে উপনীত হয়ে যাবে,তখন যেন সে তার মা,বোন,এবং অন্য
কোনো নারীর সাথে শয়ন না করে,(তবে নিজ স্ত্রী বা দাসীর সাথে শয়ন করতে
পারবে)।মোটকথা
নিষিদ্ধ জিনিষ তথা যিনা-ব্যভিচার থেকে বাচাতেই মূলত শয়নস্থলকে পৃথক করে দেয়ার
বিধান এসেছে।
কেননা বাচ্ছা দশ বৎসরে উপনীত হয়ে গেলে সে সহবাসের তাৎপর্য বুঝে নিতে সক্ষম হয়ে
যায়।এবং বয়স কম থাকার ধরুণ তার খোদাভীরুতাও অসম্পূর্ণ থাককে।তাই আশংকা থেকে যায় যে,হয়তো সে তার
সাথে শয়নকৃত ব্যক্তির উপর আপতিত হয়ে যেতে পারে।
এ আশংকা এজন্য যে, ঘুম হলো-প্রশান্তিদায়ক এবং যৌন উত্তেজনা কে
জাগ্রতকারী। অন্যদিকে ঘুমের সময় কাপড় খুলে গিয়ে সতর প্রকাশিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা
রাখে।
সুতরাং এমতাবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে নিষিদ্ধ ও হারাম শয়নের দিকে সন্তান চলে
যেতে পারে।বিশেষ করে বর্তমান সময়ের সন্তান,যারা কিনা
পাপাচারের অনুশীলনে বড়দের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে।
স্বামী-স্ত্রী একজন আরেক জনের পোষাক সরূপ। তাই তারা একে অপরে পোষাকের মত মিলে
মিশে থাকবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন -
أُحِلَّ لَكُمْ
لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ
وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ
أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا
مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ
রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা
হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের
অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু
তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর।
(সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)
হাদীসটি তিরমিযী শরীফে এসেছে -
عَنْ قَيْسِ بْنِ
طَلْقٍ، عَنْ أَبِيهِ، طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِذَا الرَّجُلُ دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتَأْتِهِ
وَإِنْ كَانَتْ عَلَى التَّنُّورِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ
তালক ইবনু আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘স্বামী যদি মনোবাসনা পূরণের জন্য তার
স্ত্রীকে ডাকে তবে সে যদি চুলার কাছেও থাকে তবুও যেন অবশ্যই সাড়া দেয়। ’ ইমাম আবূ
ইসা(রহঃ) বলেন, এই
হাদীসটি হাসান-গারীব। মিশকাত ৩২৫৭, সহিহাহ ১২০২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৬০ [আল মাদানী প্রকাশনী]
সহীহ ইবনে হিব্বানে এসেছে-
عَنْ طَلْقِ بْنِ
عَلِيٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا الرَّجُلُ
دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتجبه وَإِنْ كَانَتْ عَلَى التَّنُّورِ " .
তালক ইবনু আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘স্বামী যদি মনোবাসনা পূরণের জন্য তার
স্ত্রীকে ডাকে তবে সে যদি চুলার কাছেও থাকে তবুও যেন অবশ্যই সাড়া দেয়। ’ (সহীহ
ইবনে হিব্বান, ৪১৬৫)
হাদীসটি আরো কিতাবে রয়েছে- মুসনাদে আহমদ, ১৬৩৩১; আল- মুহাল্লা, ১০/৪১; আস
সুনানুল কুবরা, ৮৯৭১; আত তারগীব ওয়াত তারহীব, ৩/১০৩
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. আপনার স্ত্রীর জন্য তার বাবার সাথে রাতে শয়ন করা জায়েজ হবে
না। কারণ ঘুমের মধ্যে অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটার
সম্ভবনা রয়েছে।
২. তখন স্বামীর জন্য করণীয় হলো স্ত্রীকে
বুঝাবে। উল্লেখ্য যে, তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। তবে
যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দিয়ে দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে স্ত্রী
সে তার নিজের নফসের উপর তালাক দিতে পারবে। এভাবে বললে (আমি আমার নিজের উপর তালাক
দিলাম) তালাক হবে। অন্যথায় স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে যে, ‘আমি তোমাকে তালাক
দিলাম’। তাহলে এতে কোনো তালাক পতিত হয় না।
৩.
স্ত্রীকে বুঝাবে। তবুও সংশোধন না হলে দুই পরিবার নিয়ে বসবে।