আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
152 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
edited by
আমার শাশুড়ির প্রথম সন্তান আমার স্বামী। আমার স্বামীর ছোটবেলায় তার বাবা(আমার শুশুড়) ইন্তেকাল করেছেন।এরপর আমার শাশুড়ি আবার বিয়ে করেন এবং তার সে ঘরের দুই মেয়ে হয়।এর কিছু দিন পর তার(শাশুড়ির)২য় স্বামী ও ইন্তেকাল করেন।বর্তমানে আমার শাশুড়ি আর তার মেয়েরা আমার সংসারে আছে।
১.এখন আমার স্বামীর উপর আমার শাশুড়ি আর তার মেয়েদের কতটুকু হক আছে আর কী কী জানতে চাই

২.আমার স্বামী তার মায়ের কথা মতো চলে আমাকে তার সংসারের বিষয়ে গুরুত দেয়না এ বিষয়ে আমি স্ত্রী হিসেবে কতটুকু অধিকার পাবো আর এ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে পারবো?

৩.স্বামীর উপার্জনের অর্থ সম্পর্কে আমাকে বলে না।তার মার সাথে ব্যাংক এর মাধ্যমে সব করে।স্ত্রীর কী অধিকার নেই?


৪.আমার প্রশ্নের উল্লেখিত ছুরতে আমার সংসারে স্বামীর কাছে কার অগ্রাধিকার বেশি হওয়া উচিত?

৫.বৈপত্রিয় বোনের সাথে কী ভাইয়ের বিয়ে জায়েজ হয়?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
আল্লাহ তা’আলা বলেন,

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।

وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا

তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। (সূরা বনি ইসরাঈল-২৩-২৪)

 عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السَّلَمِيِّ أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَالْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ رِجْلَيْهَا

মুআবিয়া ইবন জাহিমা সালামী (রহঃ) বলেন, আমার পিতা জাহিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যুদ্ধে গমন করতে ইচ্ছা করেছি। এখন আপনার নিকট মতামত জিজ্ঞাসা করতে এসেছি। তিনি বললেনঃ তোমার মাতা আছে কি? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেন, তার খেদমতে লেগে থাক। কেননা, জান্নাত তার পদদ্বয়ের নিচে। ( সুনানে নাসাঈ-৩১০৮, সুনানে ইবনে মাজা-২৭৮১)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার সেই শাশুড়ী আপনার স্বামীর আপন মা।
তার খেদমত, বৈধ আদেশ মানা ইত্যাদি সবই তার হক।
,
মায়ের ভরনপোষন ইত্যাদির ক্ষেত্রে মাসয়ালা হলো যদি তার মা নিজে সচ্ছল হয়,তাহলে কোনো খরিচ দেওয়া আবশ্যক নয়।
আর যদি কোনোভাবেই তার মা চলতে না পারে,আর্থিক ভাবে অসচ্ছল হয়,সেক্ষেত্রে আপনার স্বামী যদি সামর্থবান হোন,তাহলে তার উপর আবশ্যক হবে তার মায়ের ভরনপোষন এর দায়িত্ব নেওয়া।

আপনার স্বামীর সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তার মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। 
,  
আরো জানুনঃ 

প্রশ্নে উল্লেখিত বৈপত্রিয় বোন তার বোন হিসেবে ধরে নিয়ে তার আর্থিক সমস্যা হলে নিজে সামর্থ্যবান হলে তাদের খরচ দিবে।  

শরীয়তের বিধান হলো  বাবার অপারগতা ও অবর্তমানে বোনের লালন-পালন, উপযুক্ত পাত্র দেখে বিয়ে দেওয়া ভাইয়ের দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেছেন, 'যার তিনটি মেয়ে রয়েছে অথবা তিনজন বোন রয়েছে কিংবা দুই বোন বা দুই মেয়ে রয়েছে, অতঃপর সে তাদের শিক্ষা-দীক্ষার ব্যবস্থা করে, উত্তম পাত্র দেখে বিয়ে দেয় এবং তাদের সঙ্গে সর্বোত্তম ব্যবহার করে। তার জন্য জান্নাত অবধারিত'- (তিরমিজি, আবু দাউদ)। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

(০২)
স্বামীর উপর স্ত্রীর কিছু অধিকার ও হক্ব রয়েছে যেমন, বিয়ের পর স্ত্রীর ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষা করে স্ত্রীকে একটি বাসস্থান ও খাদ্য এবং বস্ত্র দান করা।

এটা স্বামীর উপর  স্ত্রীর অধিকার ওহক্ব এবং শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব। এ সম্পর্কে কোরআনের ঘোষনা হলঃ
ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)
,
নারীদের সাথে সদ্ভাবে ব্যবহার করতে হলে তাদেরকে নিয়মমাফিক অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান দিতে হবে,স্ত্রীর চিকিৎসা করানো স্বামীর উপর ওয়াজিব নয় এবং ঘরের রান্নাবান্না স্ত্রীর উপর ওয়াজিব নয়।তবে উভয়টা একটি ভালো ও উত্তম এবং প্রশংসনীয় কাজ ।

বিস্তারিত জানুনঃ 

★ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে।  স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আপনার উল্লেখিত অধিকার পাওয়ার হকদার।
তাই তাতে কমতি হলে অবশ্যই সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে পারবেন।  


(০৩)
এটি জানা আপনার অধিকার রয়েছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (9 points)
edited by
১আমার প্রশ্নের উল্লেখিত ছুরতে আমার সংসারে স্বামীর কাছে কার অগ্রাধিকার বেশি হওয়া উচিত?
২. বৈপত্রিয় বোনের সাথে কী ভাইয়ের বিয়ে জায়েজ হয়?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...