আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
218 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
১)এর আগে অনেক বারই হয়েছে যে আমি নির্দিষ্ট একটা কারণ ছাড়াই কেবল সন্দেহ উপর ভিত্তি করে সাহু সিজদা দিয়েছি। কয়েকদিন আগেও মাগরিবের নামাজে এমন সাহু সিজদা দিয়েছি।এখন ওই নামাযগুলো কি আবার পরতে হবে?

২)নামাজে মনে মনে তিলাওয়াত করলে নামায হবে না। জিহ্বা নাড়িয়ে উচ্চারণ করতে হবে। আস্তে উচ্চারণ করলেও হবে না এতটুকু জোরে উচ্চারণ করতে হবে যাতে নিজের কান পর্যন্ত আসে।

উক্ত কথা কি ঠিক?

৩)নিজের জিহ্বা নাড়িয়ে উচ্চারণ করি কান পর্যন্তও আসে কিন্তু মাঝে মাঝে দুই একটা হরফ কান পর্যন্ত আসে না যেগুলো ভর দিয়ে উচ্চারণ করতে হয় এতে কি নামাজ ভঙ্গ হবে?

৪) নিজের কান পর্যন্ত শুনতে হবে এতটুকু জোরে তিলাওয়াত করলে বা তাসবিহ পড়লে মাঝে মাঝে পাশের জন যদি খুবই আস্তে শুনতে পায় এতে কি নামাজ ভঙ্গ হবে?

৫) নুন ও মীমের উপর তাশদীদ আসলে যে ওয়াজিব গুনাহ করতে হয় উচ্চারণ ঠিক রাখলেও যদি ওয়াজিব গুনাহ না করা হয়
তিন বা চার আলিফ মাদ যদি না টানা হয় বা কম টানা হয়
উল্লিখিত দুইটি সুরতে কি লাহনে জলি হবে?

৬) দরুদ শরীফে ইন্নাকা হামিদুম্মজিদ এ ওয়াজিব গুনাহ না করলে এবং বড় হা কে ছোট হা পড়লে
ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ এখানে আলা তে তিন আলিফ না টানলে

দরুদ শরীফে উল্লিখিত সুরতে লাহণে জলি হবে কি?

৭) সূরা কাওসারে ইন্না তে ওয়াজিব গুন্নাহ না করলে কি নামায ফাসিদ হবে?

1 Answer

0 votes
by (79,260 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/5375/ নং ফাতাওয়াতে বলা হয়েছে যে,

নামাজে আস্তে পড়ার ব্যাপারে আগে বিস্তারিত জানুনঃ 

সিররি কিরাআতের অর্থ বুঝতে অনেকে ভুল করে,অনেকে নামাজে মনে মনে কিরাআত পড়ে,তাই আস্তে আওয়াজে কিরাআত পড়ার বিষয়টি স্পষ্ট করছিঃ-

 

যে সমস্ত নামাযে আস্তে কেরাত পড়া হয়সে সকল নামাযে অনেককে দেখা যায়মুখ-ঠোঁট না নেড়ে মনে মনে সূরা কেরাত পড়েন। হয়তো তারা এই ভুল ধারণা করে আছেন যেআস্তে আস্তে কেরাত পড়া মানে মনে মনে পড়া।

 

এটি ঠিক নয়। কারণ যে সকল নামাযে কেরাত আস্তে পড়তে বলা হয়েছেতার অর্থ হলনিচু স্বরে তিলাওয়াত করা। আর এতো খুবই সহজ কথা যেমনে মনে পড়া কোনোক্রমেই নিচু স্বরে পড়া নয়।

 

ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবাদি থেকেও বোঝা যায় যেআস্তে কেরাত পড়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হল এমনভাবে পড়াযেন সে নিজে শুনতে পায়। আর সর্বনিম্ন এতটুকু তো অবশ্যই জরুরি যেসহীহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করা হবে এবং ঠোঁট-জিহবার নড়াচড়া  দেখা যাবে।

 

একটি হাদীসে আছে যেযোহর ও আসর নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কুরআন পড়তেনতখন কোনো কোনো আয়াত সাহাবায়ে কেরামও কখনো কখনো শুনতে পেতেন। হযরত আবু মামার বলেনআমরা হযরত খাববাব রা.কে জিজ্ঞাসা করেছিলামনবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যোহর ও আসর নামাযে কুরআন পড়তেনতিনি বললেনহ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলামআপনারা কীভাবে বুঝতেনতিনি বললেন, ‘বিজতিরাবি লিহয়াতিহী’-তাঁর দাঁড়ি মোবারক নড়াচড়া দ্বারা। (সহীহ বুখারী-ফাতহুল বারী ২/২৮৪-২৮৭)

 

অতএব কেরাত পড়ার সময় জিহবা ও ঠোঁট ব্যবহার করে মাখরাজ থেকে সহীহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করতে হবে। অন্যথায় শুধু মনে মনে পড়ার দ্বারা কেরাত আদায় হবে না।

 

হাদীসটির পুরো রুপঃ

عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قُلْنَا بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.

 

আবূ মা‘মার (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনআমরা খাববাব (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলামনাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেনতিনি বললেনহ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলামআপনারা কী করে তা বুঝতেনতিনি বললেনতাঁর দাড়ির নড়াচড়ায়। (বুখারী শরীফ ৭৪৬, (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭১৬ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭২৪)

 

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: "তিনি প্রত্যেক নামাযে তেলাওয়াত করতেন। তিনি যে নামাযগুলোতে আমাদেরকে শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন সে সব নামাযে আমরাও তোমাদেরকে শুনিয়ে তেলাওয়াত করি। আর তিনি যে সব নামাযে আমাদেরকে না শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন সে সব নামাযে আমরাও তোমাদেরকে না শুনিয়ে তেলাওয়াত করি।"[সহিহ বুখারী (৭৩৮) ও সহিহ মুসলিম (৩৯৬)]

 

জোরে কেরাআতের নামাজে তো জোরেই কেরাত পড়তে হবে। যাতে অন্যরাও শুনতে পারে।

আস্তে আস্তে কিরাআতের নামাজে সুরা সমূহ,এবং রুকু সেজদার তাসবিহ,রাব্বানা লাকাল হামদ,তাকবীরে তাহরিমা ইত্যাদির ক্ষেত্রে   জিহবা ও ঠোঁট ব্যবহার করে মাখরাজ থেকে সহীহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করতে হবে। অন্যথায় শুধু মনে মনে পড়ার দ্বারা কেরাত আদায় হবে না।

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4782/?show=4782#q4782

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, ঐ নামাজ আর পড়া লাগবে না।

২. নামাজে মনে মনে কিরাত পড়া যাবে না। বরং কমপক্ষে জিহবা ও ঠোট নাড়িয়ে আস্তে আওয়াজে উচ্চারণ করতে হবে। এতটুকু আওয়াজ হতে হবে,যে ফ্যান বা অন্যান্য আওয়াজ যদি সেখানে না থাকতো,তাহলে আস্তে হলেও নিজ কান পর্যন্ত সেই আওয়াজ আসতো। 

৩. না, এতে সালাত ভঙ্গ হবে না।

৪. না, এতে সালাত ভঙ্গ হবে না।

৫. না, লাহনে জলি হবে না। তবে এভাবে পড়া উচিৎ নয়। বরং উত্তম হলো মাখরাজ, গুন্নাহ ঠিক করে তেলাওয়াত করা।

৬. না, না, লাহনে জলি হবে না। তবে এভাবে পড়া উচিৎ নয়। বরং উত্তম হলো মাখরাজ, গুন্নাহ ঠিক করে তেলাওয়াত করা।

৭. না, সালাত ফাসিদ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...