ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/5375/ নং
ফাতাওয়াতে বলা হয়েছে যে,
নামাজে
আস্তে পড়ার ব্যাপারে আগে বিস্তারিত জানুনঃ
সিররি কিরাআতের অর্থ বুঝতে অনেকে
ভুল করে,অনেকে
নামাজে মনে মনে কিরাআত পড়ে,তাই আস্তে আওয়াজে
কিরাআত পড়ার বিষয়টি স্পষ্ট করছিঃ-
যে
সমস্ত নামাযে আস্তে কেরাত পড়া হয়, সে সকল
নামাযে অনেককে দেখা যায়, মুখ-ঠোঁট না
নেড়ে মনে মনে সূরা কেরাত পড়েন। হয়তো তারা এই ভুল ধারণা করে আছেন যে, আস্তে আস্তে কেরাত পড়া মানে মনে মনে পড়া।
এটি
ঠিক নয়। কারণ যে সকল নামাযে কেরাত আস্তে পড়তে বলা হয়েছে, তার অর্থ হল, নিচু স্বরে
তিলাওয়াত করা। আর এতো খুবই সহজ কথা যে, মনে মনে
পড়া কোনোক্রমেই নিচু স্বরে পড়া নয়।
ফিকহ-ফাতাওয়ার
কিতাবাদি থেকেও বোঝা যায় যে, আস্তে কেরাত
পড়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হল এমনভাবে পড়া, যেন সে নিজে
শুনতে পায়। আর সর্বনিম্ন এতটুকু তো অবশ্যই জরুরি যে, সহীহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করা হবে এবং ঠোঁট-জিহবার
নড়াচড়া দেখা
যাবে।
একটি
হাদীসে আছে যে, যোহর ও আসর
নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কুরআন পড়তেন, তখন কোনো কোনো আয়াত সাহাবায়ে কেরামও কখনো কখনো শুনতে
পেতেন। হযরত আবু মামার বলেন, আমরা হযরত
খাববাব রা.কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, নবীজী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যোহর ও আসর নামাযে কুরআন পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা
প্রশ্ন করলাম, আপনারা
কীভাবে বুঝতেন? তিনি বললেন, ‘বিজতিরাবি লিহয়াতিহী’-তাঁর দাঁড়ি মোবারক নড়াচড়া দ্বারা।
(সহীহ বুখারী-ফাতহুল বারী ২/২৮৪-২৮৭)
অতএব
কেরাত পড়ার সময় জিহবা ও ঠোঁট ব্যবহার করে মাখরাজ থেকে সহীহ-শুদ্ধভাবে হরফ
উচ্চারণ করতে হবে। অন্যথায় শুধু মনে মনে পড়ার দ্বারা কেরাত আদায় হবে না।
হাদীসটির
পুরো রুপঃ
عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ.
قُلْنَا بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.
আবূ মা‘মার (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা খাববাব (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যুহর ও ‘আসরের
সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনারা কী করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির
নড়াচড়ায়। (বুখারী শরীফ ৭৪৬, (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ৭১৬, ইসলামিক
ফাউন্ডেশনঃ ৭২৪)
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: "তিনি প্রত্যেক নামাযে তেলাওয়াত করতেন।
তিনি যে নামাযগুলোতে আমাদেরকে শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন সে সব নামাযে আমরাও তোমাদেরকে
শুনিয়ে তেলাওয়াত করি। আর তিনি যে সব নামাযে আমাদেরকে না শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন সে
সব নামাযে আমরাও তোমাদেরকে না শুনিয়ে তেলাওয়াত করি।"[সহিহ বুখারী (৭৩৮) ও
সহিহ মুসলিম (৩৯৬)]
জোরে
কেরাআতের নামাজে তো জোরেই কেরাত পড়তে হবে। যাতে অন্যরাও শুনতে পারে।
আস্তে
আস্তে কিরাআতের নামাজে সুরা সমূহ,এবং রুকু
সেজদার তাসবিহ,রাব্বানা
লাকাল হামদ,তাকবীরে
তাহরিমা ইত্যাদির ক্ষেত্রে জিহবা
ও ঠোঁট ব্যবহার করে মাখরাজ থেকে সহীহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করতে হবে। অন্যথায়
শুধু মনে মনে পড়ার দ্বারা কেরাত আদায় হবে না।
আরো
জানুনঃ
https://ifatwa.info/4782/?show=4782#q4782
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. না, ঐ নামাজ আর পড়া লাগবে না।
২. নামাজে মনে মনে কিরাত পড়া যাবে না। বরং কমপক্ষে জিহবা ও ঠোট
নাড়িয়ে আস্তে আওয়াজে উচ্চারণ করতে হবে। এতটুকু আওয়াজ হতে হবে,যে ফ্যান বা অন্যান্য আওয়াজ যদি সেখানে না থাকতো,তাহলে আস্তে হলেও নিজ কান পর্যন্ত সেই আওয়াজ আসতো।
৩. না, এতে সালাত ভঙ্গ হবে না।
৪. না, এতে সালাত ভঙ্গ হবে না।
৫. না, লাহনে জলি হবে না। তবে এভাবে পড়া উচিৎ নয়। বরং উত্তম হলো
মাখরাজ, গুন্নাহ ঠিক করে তেলাওয়াত করা।
৬. না, না, লাহনে জলি হবে না। তবে এভাবে পড়া
উচিৎ নয়। বরং উত্তম হলো মাখরাজ, গুন্নাহ ঠিক করে তেলাওয়াত
করা।
৭. না, সালাত ফাসিদ হবে না।