আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
144 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১)স্পষ্ট  শব্দে তালাক  এবং
তোমাকে  ছেড়ে  দিলাম;  এই দুইটা বাক্য তালাকের   নিয়ত  ছাড়া বললেও  তালাক  হয়ে যায়।
 ★ কিন্তু
তালাকের  মজলিস ছাড়া (রাগের  মাথায়, দুষ্টমি করে,ঝগড়ার সময় অথবা  অন্য  যেকোন কারনে) এবং
উপরোক্ত দুইটি বাক্য ছাড়া ; অন্য  সকল রকমের কেনায়া বাক্যে তালাকের  নিয়ত  থাকলে তালাক  হয়।
কিন্তু  তালাকের নিয়ত না  থাকলে  তালাক হয় না।

ঠিক  বলেছি?

২)তালাকের  মজলিস  না  এবং স্বামীর তালাকের  নিয়ত  ও নাই।
কিন্তু  স্বামী  কোন  একটা  কারনে(রাগের  মাথায়, দুষ্টমি করে,ঝগড়ার সময় অথবা  অন্য  যেকোন কারনে),  স্ত্রীকে বললো

 "তোমার  সাথে  আর ঘরসংসার  করবো না",

প্রতিউত্তরে স্ত্রী  বললো এসব কথা বলতে হয় না,এগুলা বইলো না।

এতে কি বৈবাহিক  সম্পর্কে কোন সমস্যা  হবে?

৩)তালাকের  মজলিস  না  এবং স্বামীর তালাকের  নিয়ত  ও নাই।
কিন্তু  স্বামী  কোন  একটা  কারনে   (রাগের  মাথায়, দুষ্টমি করে,ঝগড়ার সময় অথবা  অন্য  যেকোন কারনে),স্ত্রীকে বললো

 "আমাকে ছেড়ে  চলে  যাও।"

প্রতিউত্তরে স্ত্রী  বললো এসব কথা বলতে হয় না,এগুলা বইলো না।

 এতে কি বৈবাহিক  সম্পর্কে কোন সমস্যা  হবে ?


৪)তালাকের  কোনই নিয়ত নাই।স্ত্রীর উপর  বিরক্ত  হয়ে  যদি  স্বামী  বলে  ফোন- ম্যাসেজ দিবা না,দিলে ব্লক।

এবং পরবর্তীতে ব্লক  করে  দেয়,এতে কি বৈবাহিক  সম্পর্কের কোন সমস্যা  হবে?


এখানে মেসেঞ্জার, ওয়াটসাঅ্যাপ,মোবাইল  থেকে ব্লক  করে  দেওয়া  বুঝানো হয়েছে।

1 Answer

0 votes
by (57,120 points)
edited by

উত্তর,
بسم الله الرحمن الرحيم

শরিয়তের পরিভাষায় প্রশ্নে উল্লেখিত জাতীয় শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.

احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ 
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে যে তোমাকে আমি ছেড়ে  দিলাম, যা খুশি তাই করো,তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন, তুমি স্বামী খুজো,বা স্বামী তালাশ করো,তাহলে এটিও কেনায়া তালাক।
কেনায়া তালাক হলো ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা যেটা হয়।
কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয়

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.

রাগের অবস্থাঃ-
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।

তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।

যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫

কেনায়া বাক্যের উদাহরণ অনেক রয়েছেঃ
★তোমাকে আমি ছেড়ে দিলাম।
★যা খুশি তাই করো।
★তুমি মুক্ত।
★তুমি খালি।
★তুমি স্বাধীন।
★তুমি ইদ্দত গণনা করো।
★তুমি পছন্দ করো।
★তোমার বিষয় তোমার হাতে।
★তুমি স্বামী খুজো।
★তুমি স্বামী তালাশ করো।
★তোমার রশি তোমার ঘাড়ে।
★তুমি তোমার পরিবারের সাথে যুক্ত হও।
★আমি তোমার পরিবারের কাছে তোমাকে দিয়ে দিলাম।
★আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম।
★তুমি আমার সামনে পর্দা করো।
★তুমি আমার সামনে খিমার পরিধান করো,চেহারা ঢাকো।
ইত্যাদি ইত্যাদি।  
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/7162/
https://ifatwa.info/7406/

প্রশ্নকারী প্রিয় বোন/ ভাই!

১. জ্বী আপনি সঠিক বলেছেন।

২,৩ ও ৪. তালাকের নিয়ত না থাকলে বৈবাহিক সম্পর্কে কোন সমস্যা হবে না । তবে পরবর্তীতে সতর্কতা অবলম্বন করবে, যেন দাম্পত্য জীবনে চলার পথে অভিমান করে হলেও এজাতীয় স্পর্শকাতর শব্দ ব্যবহার না করে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...