আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
233 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
কাবিনে ১৮ নং এ তালাকের অনুমতি দেয়া হয়েছিলো কিন্তু তাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি।।সাধারণ ভাবে যেরকম অনুমতি দেয়া হয় সেইরকম দেয়া হয়েছে।।

তালাকের পর উনি বলছেন উনি আমাকে তালাকের অনুমতি দেননি তাই তালাক হবে না।।
এখন কি তালাক হয়ে গেছে?নাকি হয়নি?

উনি আমাকে কোন্রুপ শারীরিক বা মানসিক অত্যাচারো করেন নি।।

ঘটনা নিম্নে দেয়া হোলো-- আমি একজন মেয়ে ।।বয়স ২০ এবং একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট।। আমার সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজনের সাথে যোগাযোগ হয় এবং আমরা একে অপরকে পছন্দ করি ।। আমরা যিনাহ করতে চাইনি ।।তাই আমরা বিয়ে করে ফেলি।। বিয়ের সময় তাঁর পরিবারের লোকের সম্মতি ছিলো,একজন কাজি এবং ২ জন পুরুষ সাক্ষী ছিলেন।।কিন্তু আমার পরিবার সম্মত ছিলেন না।। বিয়ের মোহরানাও নির্ধারিত হয়। কিন্তু পরে আমার পরিবার এই বিয়ে মানতে রাজি না কেননা ছেলের বয়স আমার চেয়ে ১৫ বছর বেশি এবং তাঁর পরিবারের বংশ মর্যাদা এবং অন্যান্য অবস্থা আমাদের চেয়ে নিচে।। কিন্তু আমি তাকে বিয়ে করেছিলাম কেননা তিনি ইসলামের অনেক বিষয়ে জানেন এবং আমি তাঁর থেকে তা শিখতে চেয়েছিলাম,বিয়ে করলে শিখতে সহজ হবে ভেবেই বিয়ে করেছিলাম।।

তিনি আমাকে বিয়ের আগেই বলেছিলেন যে তাঁর পরিবার আন ইসলামিক এবং তাঁর নামে মামলা রয়েছে (যদিও আমি তখন জানতাম না কি ধরনের মামলা পরে জানতে পারি যে তা জঙ্গী এবং সন্ত্রাসী মামলা তবে মামলা কি সঠিক কিনা জানি না কারণ দেশের অবস্থা তো জানাই আছে সবার আর তাঁর সাথে এ নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয় নি

আমি তাঁর সাথে ৭ দিন সংসার করি আর তারপর আমার অভিভাবক আমাকে নিয়ে যায় এবং এই বিয়ে মানতে রাজি না।। আমাকে তাকে ডিভোর্স দিতে বলে এবং সেই অনুযায়ী আমি ডিভোর্স লেটার পাঠাই।।

তাদের যুক্তি গুলো ছিলো যে-
১। তাঁর বইয়স বেশি
২।তাঁর পারিবারিক মর্যাদা নিচে
৩। মামলা আছে
৪।কোন স্থায়ী চাকরি নেই
৫।এক মামলায় তাকে বিবাহিত বলা হয়েছে অর্থাৎ এর আগে তিনি একটি বিয়ে করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ আছে কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করেন এবং তাঁর বৌ কেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।।তাও পরিবারো আগের বিয়ের ব্যাপার অস্বীকার করে।।

এখন তিনি আমাকে নিতে চান।।আমার সাথে সংসার করতে চান কিন্তু আমার পরিবার সেটা মানতে নারাজ ।। এবং আমার পরিবার তাঁর সাথে কোনোরুপ যোগাযোগ করতে নিষেধ করেছে এবং বলেছে যোগাযোগ করলে বাবা মার সাথে আমার কোন সম্পর্ক আর তারা রাখবে না ,অনেক অভিশাপ ও দিয়েছে
আমি আমার পুর্বের কাজের জন্য লজ্জিত ।।আমি এখন শুধু সঠিক ইসলামী নিয়ম জেনে তাঁর উপর আমল করতে চাই।।যদি বিয়েটা হয় তাহলে এখন আমি কার কথা শুনবো?ম্মা-বাবার?নাকি তাঁর?
আর ডিভোর্স দেয়া টা কি হয়েছে??

তিনি আমাকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছেন কিনা কাবিন নামায় আমি জানি না কারণ কাবিন নামা আমার কাছে নেই, তবে একদিন কথা হয়েছিলো আর তিনি বলেছেন যে তিনি আমাকে অনুমতি দেননি আর তিনি কখনোই আমাকে তালাক দিবেন না ।।

আগের প্রশ্নের উত্তরে ভাই পরামর্শ দিয়েছেন যে আমার যেকোন ভাবে তালাক নিয়ে আমার বাবা মায়ের কথা শোনা উচিত ।। কিন্তু উনি তো তালাক দিবেন না ,আবার আমাকেও অধিকার দেননি ।। এদিকে আমার বাবা মা এই বিয়ে মানেন না এবং তারা আবার আমার জন্য ছেলে দেখা শুরু করেছেন।।

এখন আমার প্রশ্ন হোলো-
১।বিয়েটা কি হয়েছে?(আগের বার এর উত্তর পাই নি
২।এখন আমি কি করতে পারি? আমি কি এই অবস্থায় আবার বিয়ে করতে পারবো?
৩।এখন কি করতে পারি তাহলে? উনি বলছেন যে উনার থেকে দূরে থেকে আমার গুনাহ হচ্ছে -সত্ত্যি ই কি? কিন্তু আমার মা বাবাও তো রাজি না -এখন তাহলে কি করবো আমি?

আমি তাকে ২য় বিয়ে কথা বলি মানে তাকে আবার বিয়ে করতে বলি কিন্তু তিনি তাতেও রাজি না

1 Answer

0 votes
by (63,400 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ 

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

 আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ্   বলেছেনঅভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

 ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

 অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবেযারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

 

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতিনটি বিষয় এমন যেগুলির যথার্থ তো যথার্থই এমনকি সেগুলোর কৌতুকের ব্যবহারও যথার্থ: বিবাহতালাকরাজআত। - ইবনু মাজাহ ২০৩৯তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৮৫

ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেনএই হাদীসটি হাসান-গারীব।

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

বিয়ের সময় ১৮ নং ধারায় কোন তালাকের  ও কি কি শর্তে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং ডিভোর্স নামায় কোন শব্দ দ্বারা তালাক দেওয়া হয়ে ছিলো ইত্যাদি বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় বিস্তারিত উত্তর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিয়ের কাবিননামাডিভোর্স নামা নিয়ে নিকটস্ত কোনো নির্ভরযোগ্য ইফতা বিভাগে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...