আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (46 points)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্,

উস্তাদজী,

১  সৎ ভাই এবং সৎ বোনের ছেলের সাথে কি আমাদের পর্দা ফরয ? পর্দা করতে হবে তাদের সামনে?

২  , পর্দার পরিপূর্ণ বিধান কি ?

৩ . মৃত ব্যক্তিকে গোছলের নিয়ম ও দুআ ?

একজন মহিলা ক্ষেত্রে
৪   হাফেজী ভুলে গেলে করণীয় ?
৫  হিফজ শুরু করতে হলে একা , সে ক্ষেত্রে করণীয়

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।(সূরা আন-নূর-৩১)

নারীদের মাহরাম পুরুষ।

১-বাপ, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
২-সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৩-শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
৪-আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তানদের স্বামী।
৫-স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬-ভাতিজা, ভাগিনা তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই ও বোনের ছেলে ও তাদের অধঃস্থন কোন ছেলে।
৭-আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই।
৮-আপন মামা তথা মায়ের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৯-দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।
১০-দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
১১-দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান।
১২-শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।
১৩-যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই আবার মহিলাদেরও তার প্রতি কোন আকর্ষণ নেই আবার মহিলাদেরও তার প্রতি কোন আকর্ষণ নেই।
১৪-অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।

বিস্তারিত জানুনঃ  

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সৎ ভাই এবং সৎ বোনের ছেলের সাথে পর্দা ফরয নয়।
তাদের সামনে পর্দা করতে হবেনা।
,
(০২)
মাথা থেকে পা পর্যন্ত হাত,পা,চেহারা সহ পূর্ণ শরীর ঢাকতে হবে।
গায়রে মাহরামদের সামনে যাওয়ার সময় আঁটোসাটো এবং পুরুষদের আকর্ষিত করার মতো  পোশাক পরিধান করা যাবেনা।

(০৩)
এক্ষেত্রে কোনো দোয়া নেই।

গোসল করানোর পদ্ধতিঃ-
প্রথমে মৃত ব্যাক্তিকে চৌকি বা গোসলের খাটিয়ার ওপর শোয়াতে হয়। তারপর পরনের কাপড় সরিয়ে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশে একটা কাপড় রাখতে হয়। হাতে কাপড় পেঁচিয়ে পেশাব-পায়খানার জায়গা পরিষ্কার করতে হয়। অজু করাতে হয়। নাকে ও মুখে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তুলা ভিজিয়ে দাঁতের মাড়ি ও নাকের ভেতর মুছে দেওয়া জায়েজ।
গোসল ফরজ বা হায়েজ-নেফাস অবস্থায় মারা গেলে মুখে ও নাকে পানি পৌঁছানো জরুরি। পানি যেন ভেতরে না যায় সে জন্য নাক, মুখ ও কানে তুলা দিতে হয়, এরপর ধুতে হয়।
মৃতকে বাঁ দিকে কাত করে শুইয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত এমনভাবে তিনবার পানি ঢালতে হয়, যেন বাঁ কাত পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অনুরূপভাবে ডান কাত করে শুইয়ে তিনবার পানি ঢালতে হয়,যেন বাঁ কাত পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অনুরূপভাবে ডান কাত করে শুইয়ে তিনবার পানি ঢালতে হয়। এরপর মৃতকে কোনো কিছুর ওপর ঠেস দিয়ে বসিয়ে আস্তে আস্তে পেটে চাপ দিতে হয়। কোনো মল বেরোলে পরিষ্কার করে ধুয়ে দিতে হয়। এর জন্য পুনরায় অজু ও গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। অতঃপর বাঁ কাত করে শুইয়ে কর্পূর মেশানো পানি ঢালতে হয় তিনবার। সব শেষে একটি কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে হয়। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/২১৮)

(০৪)
হাফেজী ভুলে যাওয়া মারাত্মক অপরাধ।   
হাদিস শরিফে এসেছে,
 রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন,

بِئْسَمَا لأَحَدِهِمْ يَقُولُ نَسِيتُ آيَةَ كَيْتَ وَكَيْتَ بَلْ هُوَ نُسِّيَ اسْتَذْكِرُوا الْقُرْآنَ فَلَهُوَ أَشَدُّ تَفَصِّيًا مِنْ صُدُورِ الرِّجَالِ مِنَ النَّعَمِ بِعُقُلِهَا

যদি কেউ এভাবে বলে যে, আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গিয়েছি তাহলে তা তার জন্য খুবই খারাপ। বরং তাকে তো ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তোমরা কোরআনকে স্মরণ রাখ। কারণ কোরআন মানুষের হৃদয় থেকে পা বাঁধা পলায়নপর চতুস্পদ জন্তুর চেয়েও অধিক পলায়নপর। ছাড়া পেলেই পালিয়ে যায় অর্থাৎ স্মরণ রাখার চেষ্টা না করলেই ভুলে যায়। (মুসলিম ১৭২৬)

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন,
عُرِضَتْ عَلَىَّ ذُنُوبُ أُمَّتِي فَلَمْ أَرَ ذَنْبًا أَعْظَمَ مِنْ سُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ أَوْ آيَةٍ أُوتِيَهَا رَجُلٌ ثُمَّ نَسِيَهَا

আমার উম্মাতের গুনাহসমূহ আমাকে দেখানো হয়েছে। আমি তাতে কোরআনের কোন সূরাহ বা আয়াত শেখার পর তা ভুলে যাওয়ার চাইতে বড় গুনাহ আর দেখি নি। (আবু দাউদ ৪৬১ তিরমিযী ১৯৭৬ ইবনু খুযাইমাহ ১৯১৬)

مَا من امْرِئٍ يَقْرَأُ الْقُرْاٰنَ ثُمَّ يَنْسَاهُ إِلَّا لَقِىَ اللّٰهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَجْذَمَ

যে ব্যক্তি কোরআন শিখে ভুলে গিয়েছে, সে কিয়ামাতের দিন অঙ্গহানি অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। (আবু দাউদ ১৪৭৪ মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবাহ ১০/৪৭৮)

★তবে হাফেজি ভুলে যাওয়ার দ্বারা আসলে উদ্দেশ্য কি?
এ মর্মে ইসলামী স্কলারদের অনেক মতামত রয়েছে। 
‘ভুলে যাওয়া’ শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইমাম আবু ইউসুফ রহ. বলেছেন, المراد بالنسيان : أن لا يمكنه القراءة في المصحف দেখে দেখে তেলাওয়াত করার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলা। (মাতালিব উলিন্নুহা ১/৬০৪)


কেউ কেউ বলেন, النسيان بمعنى ترك العمل لا نسيانه بعد حفظه এখানে ভুলে যাওয়া মানে কোরআনের তিলাওয়াত ও তার প্রতি ‘আমাল থেকে বিরত থাকা। (আল ইস্তিযকার ২/৪৮৭)

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রত্যেকদিন ৪/৫ পৃষ্ঠা করে হলেও সেই মুখস্থ পড়া আবার আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টা করতে হবে।
এ চেষ্টা অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যেতে হবে।
   
(০৫)
এক্ষেত্রে কুরআন শুদ্ধভাবে পড়তে পারে,এমন কাউকে প্রত্যেহ মূখস্ত পড়া শোনাবে।
পিছনের পড়া থেকে হাফ পাড়া বা এক পাড়া করে প্রত্যেহ ইয়াদ করে শোনাবে।
সবকের পাড়া সামনের দিকে এগোতে থাকলে সেই সবকের পাড়ার পিছনের ৭/৮ পৃষ্ঠা প্রত্যেহ ইয়াদ করে শোনাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...