আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
413 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
প্রথমেই মাফ চেয়ে নিচ্ছি, আপনাকে বিরক্ত করার জন্য। আপনি অত্যন্ত সদয় হয়ে,ধৈর্য  ধরে আমার সম্পূর্ণ লেখাটা পড়ে আমাকে উত্তর দিয়েন। আমি,আপনিসহ আরোও কয়েকজনের কাছ থেকে তালাক  বিষয়ক ফতোয়া নিয়েছিলাম।ফতোয়াতে বলা হয়েছিল যদি  আমাদের  স্বামী- স্ত্রীর মাঝে সহবাস এবং খালওয়াতে সহীহা না হয়,তাহলে আমারা পুনরায় বিয়ে করতে পারবো।আমাদের  মাঝে  খালওয়াতে সহীহা হয়েছিল কিনা, সেটা নিয়েই যত সংশয়।আমি বিভিন্ন সময়, আপনার কাছে বিভিন্ন  অবস্থা বর্ননা করে খালওয়াতে সহীহা হয়েছে কিনা তা ফতোয়া নিয়েছি।তেমনিভাবে,অনলাইনে আরও ২ জন মুফতির কাছেও জানতে চেয়েছিলাম।এর ফলেই আমার  মাঝে বিভ্রান্তি শুরু।কারন,আমার  নিম্নে বর্ননা করা ৪ নং অবস্থা, এক মুফতি সাহেবের মতে নাকি খালওয়াতে সহীহা হয়ে গেছে এবং আরেক মুফতি সাহেব " ৫নং অবস্থা  নিয়ে নাকি সংশয়ে আছেন,বুঝতে  পারতেছেন না খালওয়াতে হইছে নাকি হয় নাই।"
আপনার কাছে অনেক বিনীত অনুরোধ,আপনি একটু নিচের পয়েন্টগুলো খালওয়াতে সহীহা হয়েছে  কিনা, তা পুনরায় কুরআন -হাদিস, আপনার জ্ঞান-বুদ্ধি,বিবেক- বিবেচনা,
প্রয়োজনে অন্য মুফতি সাহেবের  সাথে আলোচনা  করে আমাকে বলেন।

আপনার দেওয়া  উত্তরের উপর
আমার  পরবর্তী জীবনে পূর্বের স্বামীকে,আবার  স্বামী হিসেবে  গ্রহণ  করতে পারবো কিনা,  তা নির্ভর করতেছে।আমি আমার  মৃত্যুর পর পূর্বের স্বামীকে পুনরায়  বিয়ে  করার জন্য, আল্লাহর কাছে পাকড়াও হতে চাই না,আমি পূর্বের স্বামীর সাথে  বিয়ে ১০০% শুদ্ধ, বৈধ করতে চাই,এর জন্যই শেষবারের মতো  আপনার কাছে নিশ্চয়তা পেতে চাচ্ছি।আমি আপনার  পরে, এই ব্যাপারে আর কারোও কাছ থেকে  ফতোয়া  নিবো না,আপনি  যা উত্তর  দিবেন,তার উপর  নির্ভর করেই পুনরায় পূর্বের স্বামীকে বিয়ে  করবো।

১) একবার এক রেস্টুরেন্টে  স্বামী-স্ত্রী দুইজন খেতে গিয়েছিলাম।সেই রেস্টুরেন্ট ছিল  ২ রুমের।নিচে এক রুম,উপরে  এক রুম ( ডুপ্লেক্স  সিস্টেম, ভিতর দিয়ে  সিঁড়ি)।   নিচ   তালার রুমে রেস্টুরেন্টে  মেইনটেইন  করার সকল লোক,খাবার এসব ছিল।  উপরের রুমে কাস্টমারদের জন্য  টেবিল- চেয়ার।

যখন আমরা  রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম,তখন উপরের তালায় আমরা  শুধু  স্বামী - স্ত্রী  দুজন ছিলাম, অন্য কাস্টমার ছিল  না।

ওয়েটার  একবার  খাবারের  অর্ডার নিয়ে  গিয়েছিলো,একবার খাবার  দিয়ে  গিয়েছিলো, আবার আরেকবার বিল নিয়ে  এসেছিল।উল্লেখ্য উপরের তালার রুমে কোন  দরজা ছিল না, নিচ তালার রুমের সাথে সিঁড়ি  দিয়ে  সংযুক্ত। মেইন দরজা নিচ তালায় ছিলো,রেস্টুরেন্টে এসি করা  বিধায়  দরজা মিলানো ছিলো, কিন্তু  যে কেউই  দরজা ধাক্কা  দিয়ে  রেস্টুরেন্টে   প্রবেশ  করতে  পারতো।

২) আরেক দিন, আরেকটা রেস্টুরেন্টে ও
আমরা দুজন ছিলাম,অন্য  কাস্টমার ছিল  না।

ঐ রেস্টুরেন্টে স্বামী  নিজেই গিয়ে ওয়েটারেরা যেখানে অর্ডার নেয়  সেখানে  গিয়ে  অর্ডার দিয়ে  এসেছিলো,বিল দিয়ে এসেছিলো।

  উল্লেখ্য  ঐ রেস্টুরেন্টে  এক রুমেরই ছিলো,ঐ রুমের এক প্রান্তে রেস্টুরেন্টে  মেইনটেইন  করার সকল লোক,খাবার এসব ছিল,বাকী  জায়গা কাস্টমারদের জন্য  টেবিল- চেয়ার ছিলো।আমরা যেই টেবিলে  বসেছিলাম,সেখান  থেকে খাবার অর্ডার  নেওয়ার জায়গা মুখোমুখি ছিলো না,আংশিক আঁড়ালে ছিলো। আংশিক আঁড়ালে ছিলো  মানে কিন্তু আলাদা  কোন বস্তু দিয়ে  আঁড়াল করা না,  অন্যান্য চেয়ার- টেবিলের অবস্থানের জন্য  এমনটা হয়েছিল।
রেস্টুরেন্টে এসি করা  বিধায়  দরজা মিলানো ছিলো, কিন্তু  যখন যে কেউই  দরজা ধাক্কা  দিয়ে  রেস্টুরেন্টে  প্রবেশ  করতে  পারতো।

★৩)   একবার  রেস্টুরেন্টে  আমরা ছাড়া অন্য কোন কাস্টমার ছিল  না।
ঐ রেস্টুরেন্টে,

স্বামী কতৃর্ক,স্ত্রীর বোরকার উপর  দিয়ে  স্ত্রীর শুধুমাত্র উপরের লজ্জাস্থান স্পর্শ  করে দেখা  এবং স্ত্রী  কতৃর্ক স্বামীর লজ্জাস্থান  সরাসরি  একটু  স্পর্শ  করে দেখা এতটুকু  সংগঠিত হয়েছিল।

উল্লেখ্য  ঐ রেস্টুরেন্টে  এক রুমেরই ছিলো,ঐ রুমের এক প্রান্তে রেস্টুরেন্ট মেইনটেইন  করার সকল লোক,খাবার এসব ছিল,বাকী  জায়গা কাস্টমারদের জন্য  টেবিল- চেয়ার ছিলো।

রেস্টুরেন্টে এসি করা  বিধায়  দরজা মিলানো ছিলো, কিন্তু  যখন যে কোন কাস্টমার  দরজা ধাক্কা  দিয়ে  রেস্টুরেন্টে  প্রবেশ  করতে  পারতো।

★৪)একদিন  সিনেমা হলে গিয়ে তারা দুজন দুজনকে জড়িয়ে  ধরেছিল(দুজন পাশাপাশি  সিটে  বসেছিল) ,হালকা চুম্বন  করেছিলো,স্বামী তার স্ত্রীর জামার ভিতর  দিয়ে  হাত  ঢুকিয়ে স্ত্রীর বুক স্পর্শ  করেছিল কিন্তু  স্ত্রীর নিম্নাংশ  স্পর্শ  করে নাই।

স্ত্রী ও তার নিজ হাত দিয়ে তার স্বামীর নিম্নাংশ সরাসরি  স্পর্শ  করেছিল এবং  এর ফলে  স্ত্রীর হাতে স্বামীর নিম্নাংশের তরল পদার্থ লেগে গিয়েছিল।

সিনেমা হলে মানুষ অনেক কম থাকায় এবং অন্ধকার  পরিবেশ  থাকার কারনে এসব সংগঠিত হয়ে গিয়েছিল।

★৫)আমারা স্বামী- স্ত্রী  একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের  শিক্ষার্থী।

আমাদের  বিভাগটা যেই তালা তে অবস্থিত,সেই তালার এক প্রান্তে  বিভাগের  অফিস রুম এবং অন্য প্রান্তে সেমিনার  রুম( সেমিনার  রুম হচ্ছে বিভাগের  নিজস্ব  ছোট একট লাইব্রেরির মত, যেখানে  আলমারিতে বই রাখা এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা  করার জন্য  টেবিল-চেয়ার রাখা।সেমিনার রুমে স্যার,শিক্ষার্থী,অফিসের স্টাফ  সবার যাওয়ার অনুমতি আছে।ওখানে বই থাকে,সংবাদপত্র  রাখা থাকে,যার যখন যেটা প্রয়োজন  নিতে পারে।)

করোনাকালীন সময়ে  তো সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, আপনি জানেন ই।শুধু  অফিস খোলা থাকে এবং   প্রয়োজন অনুযায়ী  স্যাররা বিভাগে যান।আমরা স্বামী- স্ত্রী  সহ ৪/৫ জন বন্ধু একসাথে  ভর্তি হতে গিয়ছিলাম বিভাগে । প্রথমে আমারা ৪/৫ জন সবাই সেমিনার  রুমে বসে ছিলাম। এর পর একজন একজন করে ওরা চলে যায়।

আমারা তখন সেমিনার  রুমে দুইজন  ছিলাম,আর কেউ ছিলো  না।

আমরা যখন একা ছিলাম,সেই সময়ের মধ্যে  আমাদের  একটা ফ্রেন্ড  এসেছিলো,কিছুক্ষণ  ছিলো,কিছুক্ষণ পর আবার চলে গিয়েছিলো।

আমরা আবার  সেমিনার  রুমে শুধু  দুইজন হয়ে গিয়েছিলাম।

আরো ও উল্লেখ  করতেছি যে,আমাদের  সেমিনারে ২ টা রুম।ভেতরের রুমে সেমিনারের দায়িত্বে একজন  স্টাফ বসা থাকেন(তিনি থাকা অবস্থায় ও ভেতরের রুমের দরজা লাগানো থাকে), আমরা দুজন বসেছিলাম বাহিরের রুমে।
আমাদের  সেমিনার  রুম এসি করা বিধায়,সবসময় সেমিনারের বাহিরের  রুমের দরজা ও লাগানো  থাকে।

লাগানো মানে, যে কেউ যোকোন সময়  ঢুকতে পারে।কেউ দরজা ধাক্কা  দিয়ে ঢুকলে আবার  দরজা নিজ থেকেই লেগে যায়।

আমরা যেই রুমে বসেছিলাম,সেই রুমের  মধ্য দিয়েই ভিতরের রুমে  যাওয়া- আসা করতে হয়।

সেমিনারের দায়িত্বে   থাকা স্টাফ ভিতরের রুম তালা দিয়ে কিছুক্ষনের জন্য বাহিরে গিয়েছিলেন এবং আবার ফিরে এসেছিলেন।আমরা তখনও বাহিরের রুমে  বসা ছিলাম।

৬) দুইজন দুইজনের ইনবক্সে সেক্সুয়াল ছবি/ ভিডিও আদান-প্রদান;রিকশায় হুক উঠিয়ে ঘোরা;ফাঁকা রাস্তা দিয়ে হাঁটা,সেই রাস্তার বসার জায়গায় কিছুক্ষন বসা;ফাঁকা সিঁড়ি এবং লিফট  দিয়ে  উঠা/ নামা করা।

প্রশ্নঃ

১)হানাফি  মাযহাব  অনুযায়ী, উপরে বর্নিত ৬টা অবস্থার একটাও কি খালওয়াতে সহীহা হয়েছিল???

২)  কোন দম্পতির এক তালাক  বায়েন পতিত হওয়ার পর, যদি  তাদের  খালওয়াতে সহীহা হয়ে যায়, তাহলে কি তাদের পুনরায় বিয়ে  শুদ্ধ  হবে,
হানাফি মাযহাব অনুযায়ী?????

1 Answer

+1 vote
by (574,260 points)
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 
জবাবঃ-


শরীয়তে খাওয়াতে সহীহাহ এর উপর অনেক ক্ষেত্রে সহবাসের বিধানই আরোপ করে।
খালওয়াতে সহীহাহ সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ

روى البيهقي في سننه عن سعيد بن المسيب أن عمر بن الخطاب رضى الله عنه (قضى في المرأة يتزوجها الرجل: أنه إذا أرخيت الستور فقد وجب الصداق) .

সারমর্মঃ
হযরত ওমর রাঃ এক মহিলা যাকে কোনো পুরুষ বিবাহ করেছিলো, ব্যাপারে ফায়সালা দিয়েছিলেন, 
যখন তুমি সতর ছেড়ে দিয়েছিলে (খুলেছিলে) তখনই মোহর ওয়াজিব হয়েছে।

আরো জানুনঃ  

(০১)
★★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন ,   
প্রশ্নে উল্লেখিত সকল তথ্য মোতাবকে আপনাদের খালওয়াতে সহীহাহ হয়নি।

কেননা খালওয়াতে সহীহাহ বলা হয়,এমন নির্জন বাস বা এমন কক্ষে অবস্থান করা,যেখানে সহবাস হওয়া থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকেনা।
এখানে প্রশ্নে উল্লেখিত রেস্টুরেন্টে অবস্থান,সেমিনার রুমে অবস্থান,দুইজন দুইজনের ইনবক্সে সেক্সুয়াল ছবি/ ভিডিও আদান-প্রদান;রিকশায় হুক উঠিয়ে ঘোরা;ফাঁকা রাস্তা দিয়ে হাঁটা,সেই রাস্তার বসার জায়গায় কিছুক্ষন বসা;ফাঁকা সিঁড়ি এবং লিফট  দিয়ে  উঠা/ নামা করা কোনোটিই খালওয়াতে সহীহাহ নয়। 

সব ক্ষেত্রেই সহবাস হতে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
তাই এগুলো খালওয়াতে সহীহাহ নয়।
,  
আরো জানুনঃ
 
(০২)
কোন দম্পতির এক তালাক  বায়েন পতিত হওয়ার পর, যদি  তাদের  খালওয়াতে সহীহা হয়ে যায়, তাহলেও তাদের পুনরায় বিয়ে শুদ্ধ  হবে,এক্ষেত্রে কোনো ইমামদের মতানৈক্য নেই।
হানাফি মাযহাব সহ সকল মাযহাব অনুপাতে তাদের বিবাহ জায়েজ আছে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনারা নিঃসংকোচে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন।
শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে এতে কোনো সমস্যা নেই।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...