সমাধানঃ-
উপরোক্ত দুনু পদ্ধতিতে বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে।কেননা প্রথম পদ্ধতিতে বর-কনে এবং সাক্ষী সকলই এক মজলিসে বসা ছিলেন।উকিল যদিও সরাসরি মজলিসে নেই,এ না থাকা কোনো সমস্যা তৈরী করবে না।কারণ বিয়ের জন্য উকিল শর্ত নয়।বরং বর-কনে উকিলের মাধ্যম ব্যতীতও তারা পরস্পর পরস্পরকে ইজাব-কবুল করতে পারে।যখন বর-কনে একই মজলিসে বলছেন যে,তারা একে অপরকে চিনেন এবং তারা একজন অন্যজনকে গ্রহণ করেছেন,এবং দুইজন সাক্ষীও তখন ছিলেন,যারা উপস্থিত থেকে তাদের ইজাব কবুল শুনেছেন।যেহেতু তাদের ইজাব কবুলে কোনো প্রকার অস্পষ্টতা নেই।সুতরাং বিয়ে হয়ে গেছে।
বিয়ে সম্পর্কে আল্লামা হাসক্বফী রাহ বলেনঃ
(وشرط سماع كل من العاقدين لفظ الآخر) ليتحقق رضاهما (و) شرط (حضور) شاهدين (حرين) أو حر وحرتين (مكلفين سامعين قولهما معا)
বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল,বর-কনে প্রত্যেকে পরস্পর পরস্পরের কথা শুনা।যাতেকরে উভয়ের সন্তুষ্টি প্রমাণিত হয়।এবং দুজন স্বাধীন পুরুষ অথবা একজন স্বাধীন পুরুষ ও দুজন স্বাধীন মহিলা সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থাকবে,যারা শরীয়তের বিধি-বিধান পালনে দায়বদ্ধ,এবং তারা উভয়-ই একসাথে উভয় (স্বামী-স্ত্রী)এর ইজাব-কবুলকে শ্রবণ করবে।(আদ্দুরুল মুখতার-৩/২২)বিস্তারিত দেখুন-২৬৭৯
বর্তমান সমাজে প্রচলিত যে উকিল রয়েছেন,তিনি মূলত হচ্ছেন,একজন মু'আব্বির বা সফির তথা ভাষ্যকার।সামাজিক লজ্জার ভয়ে, বর-কনের কেউ-ই বিয়ের আগ্রহকে প্রকাশ করতে পারেন না। তাই উকিল তাদের একজনের কথাকে অন্যজনের সামনে প্রকাশ করেন,এবং যার কথাকে তিনি প্রকাশ করছেন,তিনি পাশে থেকে ঐ কথাকে সমর্থন দেন।
আর শরীয়তে যে উকিলের কথাকে বর্ণনা করা হয়,তিনি মূলত বর-কনে যে কারো একজনের পক্ষ্য থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে উক্ত মু'আক্কেলের অনুপস্থিতে বিয়েকে সম্পাদন করেন।তখন কিন্তু উক্ত উকিলকে মজলিসে উপস্থিত থাকতেই হবে।কেননা তখন তিনি এক পক্ষ থাকেন এবং তিনি ইজাব বা কবুল যে কোনো একটিকে সম্পাদন করেন।বিবাহে বর কনে বা বর কনের পক্ষ্য থেকে নিযুক্তপ্রাপ্ত বিবাহ সম্পাদন কারী উকিলকে অবশ্যই মজলিসে উপস্থিত থাকতেই হবে,নতুবা বিয়ে হবে না।
সুতরাং বর্ণিত পদ্ধতিতে বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।কারণ বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার সকল শর্ত তাতে উপস্থিত রয়েছে।
দ্বিতীয় পদ্ধতিতে বিয়ে শুদ্ধ এ জন্য যে,এখানে কাজী সাহেব মূলত শরয়ী উকিলের স্থলাভিষিক্ত। অর্থাৎ তিনি ঐ মহিলার পক্ষ্য থেকে তাকে অমুকের নিকট সু-নির্দিষ্ট মহরের বিনিময়ে বিয়ে দেয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন।উকিল হিসেবে বিয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য সাক্ষী শর্ত নয় বরং মুস্তাহাব।এবং এখানে দুইজন সাক্ষীও ছিলো।পরবর্তীতে তিনি মসজিদে গিয়ে বরের সম্মুখে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন,এবং দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে তখন বর কবুলও করেছেন।তাই এখানে শরীয়তের সকল শর্তাদি উপস্থিত থাকায় বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে।
বিঃদ্রঃ
আমাদের দেশে মেয়ের কাছ থেকে ইযন বা অনুমতি নেয়া হয়।এই অনুমতি মেয়ের অভিভাবকরা নিবেন, এটাই স্বাভাবিক। যেমন, পিতা, বড় ভাই, চাচা ইত্যাদি যাদেরকে আসাবার ভিত্তিতে শরয়ী ওয়ারিছ গণ্য করা হয়।এছাড়া অন্য কেউ নিতে পারবে।যারাই ইযন নিবে,তাদেরকে শরয়ী উকিল গণ্য করা হবে,যদি কনে বরের সামনে উপস্থিত না থাকে।যদি কনে বরের সামনে উপস্থিত থাকে, তখন ইযন গ্রহণকারীকে শরয়ী উকিল হিসেবে গণ্য করা হবে না।কারণ যেখানে মূল ব্যক্তি উপস্থিত রয়েছেন,সেখানে প্রতিনিধির কোনো প্রয়োজন নেই।