আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
154 views
in সালাত(Prayer) by (32 points)
edited by
শাইখ,
আপনারদের এই ফতোয়াতে https://ifatwa.info/25869/
বলা আছে যে সুন্নাতের কাযা নামায আদায় করা লাগবে নাহ্।তবে ফরজের সুন্মাত কাযা হলে আদায় করতে হবে,আমি জানতে চাই এখানে
রাসূলআল্লাহ যে শব্দ ব্যবহার করছেন সেটা কোন ধরণের,
মানে এই কাযা নামায কি দীর্ঘসময় বাদ থাকলে তাও আদায় করার কথা বলছে কি না?
নাকি আজকের দিনে কাযা হলো তা সাথেসাথে সূর্যউদয়ের পর আদায় করার কথা বলছে?

আপনাদের মতনুযায়ী যখন সুন্নাতের কাযা নামায আদায় জরুরী নয়,তবে নবীজির একটা হাদীস আছে তা হলো
যে নামায পড়তে ভুলো গেলো সে যেন স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে আদায় করে নেয়।
এখানে আপনারা বুঝাতে চাইছেন যে
রাসূলআল্লাহ যে শব্দটি ব্যবহার করছেব কাযা এর জন্য সেটা দীর্ঘসময় ধরে থাকলে ও হবে।
∞আপনাদের ফতোয়াhttps://ifatwa.info/23761/

∞এখানে বলা আছে যে প্রত্যেক ফরজ বা ওয়াজিব নামায কাযা আদায় আবশ্যক।
∞তাহলে ফরজের ২ রাকাত সুন্নাত, যোহরের ৪ রাকাত সুন্নাত নামায পড়া তো ওয়াজিব,আর এসব ১ বছর অবধি কাযা থাকলে তাতো আদায় করা ওয়াজিব।
তাহলে আপনারা কেন বলছেন যেন সুন্নাত নামায আদায় করা জরুরী নয়?

তাহলে এই নিয়ম অনুযায়ীতো এখানে রাসূলআল্লাহ ফরজ এবং সুন্নাত নামাযের কথা ও বলছে।যেন তা আদায় করে নেই।
কারণ নবীজি এখানে নির্দিষ্ট করে বলেননি যে ফরজ নামায কাযা করতে হবে,সুতরাং ধরে নেয়া যায় যে তা ফরজ এবং সুন্নাত ও বটে।তাই নয় কি?

তাহলে সুন্নাত নামায কাযা আদায় জরুরী হবে নাহ কে?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুন্নাত নামাজের কাজা আদায় আবশ্যকীয় নয়।
তবে কেহ চাইলে তাহা আদায় করতে পারে,এতে সমস্যা নেই।

প্রত্যেক ফরজ বা ওয়াজিব নামাযের কাযা আদায় আবশ্যক।
ফরজের ২ রাকাত সুন্নাত, যোহরের ৪ রাকাত সুন্নাত নামায পড়া ওয়াজিব নয়,বরং সুন্নাত।
তাই তার কাজা আবশ্যক নয়।
কেহ চাইলে আদায় করলে কোনো সমস্যা নেই। 

সুন্নাতের কাজার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ফজরের সুন্নাত, যেদিন ফজরের সুন্নাতের কাজা হয়েছে,শুধুমাত্র সেদিন সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে জোহরের আগ পর্যন্ত আদায় করার কথা হাদীস শরীফে এসেছে।

অন্য কোনো নামাজের সুন্নাতের কাজা আদায়ের কথা হাদীস শরীফে নেই।  
 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ قَيْسِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ : رَأَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يُصَلِّي بَعْدَ صَلَاةِ الصُّبْحِ رَكْعَتَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " صَلَاةُ الصُّبْحِ رَكْعَتَانِ". فَقَالَ الرَّجُلُ : إِنِّي لَمْ أَكُنْ صَلَّيْتُ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا فَصَلَّيْتُهُمَا الآنَ . فَسَكَتَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم - صحيح 

ক্বায়িস ইবনু ‘আমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সলাতের পর এক ব্যক্তিকে দু’ রাক‘আত আদায় করতে দেখে বললেনঃ ফজরের সলাত তো দু’ রাক‘আত। সে বললো, আমি তো ফজরের পূর্বের সেই দু’ রাক‘আত আদায় করিনি, সেটাই এখন আদায় করে নিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন।
(আবু দাউদ ১২৬৭.তিরমিযী (অধ্যায় : সলাত, অনুঃ কারো ফজরের পূর্বে দু’ রাক‘আত সুন্নাত ছুটে গেলে, হাঃ ৪২২), ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ কেউ ফাজরের পূর্বে দু’ রাক‘আত সুন্নাত না পড়তে পারলে তা কখন ক্বাযা করবে, হাঃ ১১৫৪), আহমাদ (৫/৪৪৭), হুমাইদী ‘মুসনাদ’ (হাঃ ৮৬৮) 

وفى جامع الترمذى- عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من لم يصل ركعتي الفجر فليصلهما بعدما تطلع الشمس (جامع الترمذى-أبواب الصلاة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم، باب ماجاء في إعادتهما بعد طلوع الشمس ،رقم-423)

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত যে, নবীজি সা: বলেন-যে ফজরের দুই রাকআত সুন্নত (সময়মতো) পড়ল না সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে। ( জামে তিরমিজী-১/৯৬)

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   
أي لا یقضي سنۃ الفجر إلا إذا فاتت مع الفجر یقضیہا تبعاً لقضائہ قبل الزوال۔ (شامي ۲؍۵۱۲ زکریا) 
সারমর্মঃ
ফজরের সুন্নাতের কাজা আদায় করবেনা,হ্যাঁ যদি ফজরের ফরজের সাথে সুন্নাতের কাজা হলে তাবে' হিসেবে সেটিরও যাওয়ালের আগে কাজা আদায় করবে।

★★অন্য কোনো নামাজের সুন্নাতের কাজা আদায়ের কথা হাদীস শরীফে নেই।  
প্রশ্নে যে হাদীসটির কথা বলা হয়েছে,সেখানে ফরজ নামাজের কাজাই আবশ্যক বুঝানো হয়েছে।
সুন্নাত নয়।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ اِنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ حِينَ قَفَلَ مِنْ غَزْوَةِ خَيْبَرَ سَارَ لَيْلَهً حَتّى إِذَا أَدْرَكَهُ الْكَرى عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلَالٍ اِكْلأ لَنَا اللَّيْلَ فَصَلّى بِلَالٌ مَا قُدِّرَ لَه وَنَامَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأَصْحَابُه فَلَمَّا تَقَارَبَ الْفَجْرُ اسْتَنَدَ بِلَالٌ إِلى رَاحِلَتِه مُوَاجِهَ الْفَجْرِ فَغَلَبَتْ بِلَالًا عَيْنَاهُ وَهُوَ مُسْتَنِدٌ إِلى رَاحِلَتِه فَلَمْ يَسْتَيْقِظْ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَلَا بِلَالٌ وَلَا أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِه حَتّى ضَرَبَتْهُمْ الشَّمْسُ فَكَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَوَّلَهُمْ اسْتِيقَاظًا فَفَزِعَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَقَالَ أَيْ بِلَالُ فَقَالَ بِلَالٌ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ بِنَفْسِكَ قَالَ اقْتَادُوا فَاقْتَادُوْا رَوَاحِلَهُمْ شَيْئًا ثُمَّ تَوَضَّأَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأَمَرَ بِلَالًا فَأَقَامَ الصَّلَاةَ فَصَلّى بِهِم الصُّبْحَ فَلَمَّا قَضَى الصَّلَاةَ قَالَ مَنْ نَسِيَ الصَّلَاةَ فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللّهَ قَالَ أَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي قَالَ يُونُسُ وَكَانَ ابْنُ شِهَابٍ يَقْرَؤُهَا لِلذِّكْرى. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার যুদ্ধ হতে ফেরার পথে রাতে পথ চলছেন। এক সময়ে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শেষ রাতে বিশ্রাম গ্রহণ করলেন। বিলাল (রাঃ)-কে বলে রাখলেন, সলাতের জন্য রাতে লক্ষ্য রাখতে। এরপর বিলাল, তার পক্ষে যা সম্ভব হয়েছে সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাথীগণ ঘুমিয়ে রইলেন। ফজরের (ফজরের) সলাতের সময় কাছাকাছি হয়ে আসলে বিলাল সূর্যোদয়ের দিকে মুখ করে নিজের উটের গায়ে হেলান দিলেন। বিলালকে তার চোখ দু’টো পরাজিত করে ফেলল (অর্থাৎ- তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন)। অথচ তখনো বিলাল উটের গায়ে হেলান দিয়েই আছেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জাগলেন না। বিলালও জাগলেন না, না রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথীদের কেউ। যে পর্যন্ত না সূর্যের তাপ তাদের গায়ে লাগলো।

এরপর তাদের মধ্যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই প্রথম ব্যক্তি, যিনি ঘুম থেকে জাগলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ব্যতিব্যাস্ত হয়ে বললেন, হে বিলাল! (কী হলো তোমার)। বিলাল উত্তরে বললেন, রসূল! আপনাকে যে পরাজিত করেছে সেই পরাজিত করেছে আমাকে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সওয়ারী আগে নিয়ে চলো। উটগুলো নিয়ে কিছু সামনে এগিয়ে গেলেন। এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলেন। বিলালকে তাকবীর দিতে বললেন, বিলাল তাকবীর দিলেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের ফজরের (ফজরের) সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন। সলাত শেষে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সলাতের কথা ভুলে গেলে যখনই তা মনে পড়বে তখনই আদায় করে নিবে। কারণ আল্লাহ বলেছেন, ‘‘সলাত ক্বায়িম কর আমার স্মরণে’’।
সহীহ : মুসলিম ৬৮০, আবূ দাঊদ ৪৩৫, ইবনু মাজাহ্ ৬৯৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ২০৬৯।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
হাদীসের শেষ অংশে যেই আয়াত রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন এর দ্বারা ফরজ নামাজই উদ্দেশ্য,সুন্নাত নয়। 

তাই উপরোক্ত হাদীস দ্বারা সুন্মাতের কাজা আদায় আবশ্যকীয়তার উপর কোনো ভাবেই দলিল পেশ করা যায়না।          


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 98 views
0 votes
1 answer 290 views
...