আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
322 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)

আমি নিচের এ লেখা বিষয়ে জানতে চাচ্ছি।

 

একই সাথে চার মাযহাবের উপর আমল কীভাবে হবে?
----------------------------------------------------------
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) যখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আমলকে সংরক্ষণ করেন, তখন চার মাযহাবের মধ্যে শুধু হানাফী মাযহাবই ছিলো। অন্য কোন মাযহাবের অস্তিত্ব ছিলো না। সে সময় মাযহাবের অনুসারীগণ প্রায় সবাই হানাফী মাযহাব মানতেন।

এরপর যখন ইমাম শাফিয়ী (রহ.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আমল সংরক্ষণ করেন, তখন তার মাযহাবের অনুসারীগণ তার মাযহাবের উপর আমল করতেন, কিন্তু হানাফী মাযহাবের অনুসারীগণকে হক বলে জানতেন। আবার হানাফী মাযহাবের অনুসারীগণও হানাফী মাযহাবের উপর আমল করতেন, কিন্তু শাফিয়ী মাযহাবের অনুসারীগণকে হক বলে জানতেন।এভাবেই চার মাযহাবের উপর আমল হবে। প্রত্যেক মাযহাবের অনুসারীগণ নিজেদের মাযহাবের উপর আমল করবেন এবং অন্য মাযহাবের অনুসারীগণকে হক বলে জানবেন। এমনি করেই সবাই চার মাযহাবের থেকে কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করবেন এবং অন্যান্য মাযহাবকে হক বলে জানবেন। তাই কেউ কারো মাযহাবকে ইনকার করবেন না।
অবশ্য চার মাযহাবের মধ্যে মূল ইখতিলাফের ভিত্তি যেহেতু দলীলের ভিত্তিতে আমলের নিয়মসমূহের মধ্যে তারজীহ দেয়ার উপর তথা আমলের এক নিয়মকে রাজেহ ও অপর নিয়মকে মারজূহ সাব্যস্ত করার উপর, তাই তাদের এ কথা বিশ্বাস করতে কোন অসুবিধা নেই যে, তিনি যে মাযহাবের অনুসরণ করছেন, তার আমল-পদ্ধতি তার দলীলের ভিত্তিতে তার নিকট রাজেহ (প্রাধান্যপ্রাপ্ত) এবং অপর মাযহাবের আমল-পদ্ধতি তার নিকট মারজূহ (প্রাধান্যহীন) । কিন্তু উভয় আমল-পদ্ধতি যেহেতু উপযুক্ত দলীলের ভিত্তিতে নির্ণীত হয়েছে, তাই উভয় আমল-পদ্ধতিকেই সবাই যার যার দলীলের অনুকূলে হক বলে বিশ্বাস করবেন। এতে গৃহিত সকল দলীল বা কুরআন/হাদীসের প্রতি তার ঈমান প্রতিফলিত হবে যে, এ আমল-পদ্ধতিও কুরআন/হাদীসে আছে এবং ওই আমল-পদ্ধতিও কুরআন/হাদীসে আছে। শুধু পালনীয়ভাবে কোনটা সাব্যস্ত বা অগ্রগণ্য হবে সে ব্যাপারে মতভেদ।
আবার এ মতভেদেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়--মাযহাবসমূহের এ মতভেদ শুধু উত্তমতার দিক দিয়ে। জায়িয হওয়ার দিক দিয়ে কোন ইখতিলাফ নেই। অর্থাৎ সব মাযহাবেই সেই কাজকে উভয় নিয়মে পালন করাকে জায়িয বলা হয়েছে। শুধু উক্ত দুই নিয়মের মধ্যে কোনটা উত্তম বা মুস্তাহাব বা বেশী ভাল সে ব্যাপারে দলীলের বিভিন্নতার কারণে ইখতিলাফ করা হয়েছে। কাজেই এ ধরনের ইখতিলাফ বা মতভেদ কোনরূপ ঝগড়া বা ফাসাদের কারণ হতে পারে না। বরং সবাই যার যার তাহকীক অনুযায়ী আমল করবেন এবং অপরের আমলকেও তাদের দলীলের ভিত্তিতে হক বলে স্বীকৃতি দিবেন--এভাবেই মাযহাবের ভিন্নতার মাঝেও চার মাযহাবের অনুসারীগণের মধ্যে ঐক্য বজায় থাকবে। এভাবেই সবাই মুসলমানদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা সূচিত করে চার মাযহাব মানবেন।
.
--মুফতী আবুল হাসান শামসাবাদী (সম্পাদক, মাসিক আদর্শ নারী)

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حديث ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَنَا، لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ: لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلاَّ فِي بَنِي قُرَيْظَةَ فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمُ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ: لاَ نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا وقَالَ بَعْضُهُمْ: بَلْ نُصَلِّي، لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذلِكَ فَذُكِرَ لِلنَبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধ হতে ফিরার পথে আমাদেরকে বললেন, বনু কুরাইযা এলাকায় পৌছার পূর্বে কেউ যেন ‘আসর সলাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের রাস্তাতেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌছে সলাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সলাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার এ উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাদের কারোর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেননি।
(অর্থাৎ উভয়ই ছহীহ ছিলো)
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ১২ খাওফ, অধ্যায় ৫, হাঃ ৯৪৬; মুসলিম, পর্ব ৩২: জিহাদ, অধ্যায় ২৩, হাঃ ১৭৭০


ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﺹِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- « ﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﺍﻟْﺤَﺎﻛِﻢُ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺻَﺎﺏَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮَﺍﻥِ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺧْﻄَﺄَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮٌ

হযরত আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন কোন বিশেষজ্ঞ হুকুম বলতে গিয়ে ইজতিহাদ করে,

আর তার ইজতিহাদ সঠিক হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে দু’টি সওয়াব। আর যদি ইজতিহাদে ভুল হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে একটি সওয়াব।
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৯১৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৫৮৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৭৬}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
 প্রশ্নে উল্লেখিত লেখাটি সঠিক।
নিজ মাযহাব ও অন্য মাযহাব সম্পর্কে এমনই আকীদা পোষন করতে হবে।
,
যেকোনো এক মাযহাবই মানতে হবে,একই সাথে সকল মাযহাব মানা যাবেনা।

ইসলামী স্কলার গন বলেছেনঃ 
যাকে ইচ্ছে তাকে মানা শরীয়তের অনুসরন নয় মন পূজা যখন যে ইমামকে ইচ্ছে তাকে মানার প্রবণতা দ্বীনে শরীয়তের পাবন্দী হবে না, হবে কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ। মন যখন চাইবে ইমাম আবু হানীফার অনুসরণ করা, আবার মন যখন চাইবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতকে অনুসরন করা, কিংবা অন্য কোন ইমামের অনুসরণ করা এটা দ্বীনে শরীয়তের আনুগত্ব হবে? না মন আর খাহেশাতের আনুগত্ব হবে?
যখন মন চাইল ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুসরণ করে বলে দিলেন যে, মহিলাদের স্পর্শ করলে অজু ভাঙ্গবে না। আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর বক্তব্য যে, মহিলা স্পর্শ করলে অজু ভেঙ্গে যায়, মতটিকে ছেড়ে দিলেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য।
আবার কিছুক্ষণ পর হাত কেটে গেল, এবার যখন দেখা গেল যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুপাতে অজু ভেঙ্গে গেছে, আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে অজু ভাঙ্গেনি। তখন সাথে সাথেই মাযহাব পাল্টে বলতে শুরু করে দিলেন যে, না, না আমি হানাফী না, আমি শাফেয়ী। তাই আমার অজু ভাঙ্গেনি। এভাবে প্রতিটি মাসআলায় স্বীয় খাহেশাত অনুযায়ী মত পাল্টাতেই থাকলে এর নাম দ্বীন মানা? না মনপূজা?
,
এ কারণেই শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেনঃ “লাগামহীনভাবে যে মাযহাব যখন মনে চায়, সেটাকে মানা সুষ্পষ্ট হারাম ও অবৈধ।
{ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/২৪১}

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...