আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
430 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (28 points)
আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি কিন্তু আমি কোন মাযহাবের অনুসারী তা জানি না।মাযহাব কি তাও জানতাম না।এখন জানি মাযহাব কি।কিন্তু আমি কোন মাযহাব এর অনুসরণ করে জীবন যাপন করছি তা বুঝতে পারছি না।কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতে পারছি না।তাই আমি জানতে চাই যে আমি আমার মাযহাব কে কিভাবে চিহ্নিত করতে পারি???

1 Answer

0 votes
by (697,000 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আখেরাতের মুক্তি পরকালের অনন্ত জীবন ব্যাপী সুখ সমৃদ্ধির জন্য মাযহাব বড় কথা নয়,বরং কুরআন সুন্নাহর অনুসরণই বড় কথা।হ্যা কুরআন সুন্নাহ কে যথাযথ পালন করার স্বার্থে আম জনতার জন্য যেকোনো একটি মাযহাব মানা ফরয।মাযহাব ব্যতীত কুরআন সুন্নাহর উপর যথাযথ আ'মল করা কখনো সম্ভবপর হবে না।

দ্বীনে ইসলাম তথা শরীয়ত হলো,কুরআন এবং হাদীসের সমষ্টির নাম।প্রথমত কুরআন এবং হাদীস আরবী। দ্বিতীয়ত আরবী বাগধারা অনেক কঠিন ও একই বাক্য বহুঅর্থের বাহক হওয়ার দরুণ কুরআন এবং হাদীসের সুস্পষ্ট ব্যখ্যা প্রয়োজন।তাছাড়া নাসিখ মানসূখ পরিচয় লাভ করাও একটা জটিল বিষয়।ইত্যাদি ইত্যাদি।সুতরাং এ সব অস্পষ্টতাকে স্পষ্টকরে যে ব্যখ্যা প্রদান করা হয়,মূলত সেটার নামই হল মাযহাব।যেহেতু অস্পষ্টতাকে দূর করে স্পষ্ট ব্যখ্যা করতে যেয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে,তাই ভিন্ন ভিন্ন মাযহাবের সৃষ্টি হয়েছে।আরো জানুন- নাওয়াযিল-৪/৬২৯)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/3009



তাকলীদ(মুজতাহিদের অনুসরণ) করা ফরয।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ 
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)
উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال 
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে?

যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল।
মাযহাব ও তাকলীদ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি কোন মাযহাবে আছেন? বা কোন মাযহাবের অনুসারী? কয়েকটি মতপার্থক্য পূর্ণ মাস'আলা ও অবস্থান স্থল  বিবেচনায় আপনি নির্ধারণ করে নিতে পারবেন যে,আপনি কোন মাযহাবের অনুসারী।

বাংলাদেশ যেহেতু হানাফি মাযহিবের অনুসারীই বেশী, সে হিসেবে, আপনি এবং এবং আপনার ফ্যমিলা হানাফিই হবেন।

তাছাড়া হানাফি ফিকহের সাথে অন্যান্য ফিকহের কিছুটা পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।

(১)হানাফি ফিকহে নামাযে তাকবীরে তাহরিমা ব্যতীত অন্যান্য রুকুনে রফে-ঈয়াদাইন করা হয় না।তবে অন্যান্য মাযহাবে রা'ফে ইয়াদাইন মুস্তাহাব বা সুন্নত।

(২)হানাফি ফিকহে ঈদের নামায ৬ তাকবিরে হয়।তবে অন্যান্য ফিকহে ৭ থেকে ১২তাকবিরে হয়।

(৩)হানাফি ফিকহে জামাতের নামাযে মুক্তাদির জন্য কিরাত পড়া হারাম তবে অন্যান্য ফিকহে ও ফরয/ওয়াজিব।
(৪) হানাফি ফিকহে নারা পুরুষের নামাযে মধ্যে  পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে,তবে অন্যান্য ফিকহে কোনো পার্থক্য নেই।ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চিন্তা করলেই বেড়িয়ে আমসবে যে,আপনি কোন মাযহাবের অনুসারী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (697,000 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...