আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
328 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (22 points)
closed by
ক) আমার শাওয়াল এ হজের টাকা আছে কিন্তু জিলহজ্জ এ আবার নাই হয়ে গেলো, আমার উপর কি হজ ফরয হইছে?
খ) শাওয়াল এ ফরয থাকা অবস্থায় আমি শাওয়াল এর পরে যিলহজের আগে মারা গেলে আমার কি বদলি হজ লাগবে?
গ) হজ এর কাজ করার সময় কোন মাস থেকে শুরু? রমজান নাকি শাওয়াল(তাফসিরে পেলাম রমজান, বইয়ে পেলাম শাওয়াল)

ঘ) আমার কাছে আগে টাকা ছিলো কিন্তু হজে যাইনাই। পরে আবার টাকা নাই হয়ে গেছে। আর সারাজীবনেও টাকা হয় নাই হজে যাওয়ার। ফরয যে আগে আদায় হয় নাই আর গুনাহ ও হইছে সেটা বুঝেছি। কিন্তু পরে যখন টাকা নাই হয়ে গেলো আর সারাজীবন হলো না টাকা আমার কি বদলি হজের দরকার আছে? নিজের টাকায় তো হজ করা সম্ভব হলো না, নাকি এক্ষেত্রে শুধু একটাই রাস্তা যে ওসিয়ত করে যেতে হবে!

ঙ) আমার থেকে বেশি টাকা লাগে এমন দেশ থেকে কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো যাবে? (কম টাকা লাগলে হবে না জানি)

চ) মৃত যদি ওসিয়ত করে যায় যে, 'অমুক আমার বদলি হজ করবে, আর কেউ পারবে না। ' এক্ষেত্রে অমুককে না পাঠিয়ে অন্য কাউকে বদলি হজে পাঠালো ওয়ারিশরা। আদায় হবে নাকি গুনাহ সহ আদায় হবে নাকি আদায় হবেই না?

ছ) বদলি হজ মেয়েকে দিয়ে করাচ্ছি ধরেন। এ সময় তাওয়াফে যিয়ারতের সময় তার হায়েয চলে। ফলে সে না করেই চলে আসলো বাসায়। এক্ষেত্রেও কি তাকে নিজ খরচ এ পরে যেয়ে এই যিয়ারত করতে হবে?

জ) বদলি হজের সময়,যাকে পাঠিয়েছি সে আমার ও তার নিজের হজের দুই নিয়ত একসাথে করে ইহরাম বাঁধলো।
i) এরপর হজের কাজ শুরু করে দিলো, মাঝে যেয়ে নিজের নিয়ত ছেড়ে আমার নিয়ত রাখলো। এতে আসলে কার পক্ষ থেকে হজ আদায় হলো?
ii) দুইজনের নিয়তেই হজ শেষ করলো। কার পক্ষ থেকে হজ আদায় হলো?

iii) মাঝে যেয়ে শুধু নিজের নিয়ত করলো। আমার নিয়ত বাদ দিয়ে দিলো। এতে কার পক্ষ থেকে হজ আদায় হলো?
ঝ) আমি হজে তামাত্তুর সময়, হজের আগে যত খুশি তত বার উমরাহ করতে পারবো? মানে একবার উমরাহ এর পরে ইহরাম আবার বাঁধবো মক্কার লোকের মত? নাকি আবার মিকাতে আসতে হবে?

ঞ) জমজমের পানি খাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে খাওয়া কি মুস্তাহাব না ওয়াজিব না বিদয়াত?
closed

1 Answer

+1 vote
by (567,630 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(ক)
হজ্ব ফরজ হয় দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।

সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
 وَ لِلّٰہِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡہِ سَبِیۡلًا ؕ وَ مَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۹۷﴾ 
আর মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য। আর যে কেউ কুফরী করল সে জেনে রাখুক, নিশ্চয় আল্লাহ্ সৃষ্টিজগতের মুখাপেক্ষী নন।
(সুরা আল ইমরান ৯৭)

বিস্তারিত জানুনঃ 
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির উপর হজ্জ ফরজ হবেনা।
,
(খ)
যদি সেই বছরেই হজ্জ ফরজ হওয়ার মতো সামর্থবান হয়,তাহলে বদলি হজ্জ করতে হবেনা।
(গ)
হজ্জের মূল কাজ যিলহজ্জ মাসের ৯.১০.১১.১২.১৩ তারিখ।
,
শাওয়ালের পূর্বে হজ্জের ইহরাম বাধা জায়েজ নেই।
শাওয়ালের পূর্বে হজ্জের ইহরাম বাধলে কিছু ইমামের মতে সেই ইহরাম দ্বারা হজ্জ আদায় হবেনা।
আবু হানিফা রহঃ এর মতে হজ্জ আদায় হলেও মাকরুহ হবে।
(মা'আরেফুল কুরআন ১/৪৮২)

(ঘ)
তাকে হজ্জ করতেই হবে।
জীবনের শেষ পর্যন্তও হজ্জ করতে না পারলে অছিয়ত করে যেতে হবে।

(ঙ)
বদলী হজ্বের জন্য নিজ দেশ থেকেই কাউকে পাঠাতে হবে। নিজ দেশ থেকে কাউকে পাঠানোর সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অন্য দেশে অবস্থানরত কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব করানো হলে প্রেরণকারীর ফরয হজ্ব আদায় হবে না। এক্ষেত্রে নিজ দেশ থেকে পুনরায় বদলী হজ্ব করাতে হবে।-মানাসিক ৪৪০; গুনইয়াতুন নাসিক ৩২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৫

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বদলি হজ্জ আদায় হবেনা।

(চ)
মৃত ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কাউকে দিয়ে তার বদলী হজ্ব করানোর অসিয়ত করে থাকে যে, অমুক আমার বদলী হজ্ব করবে, অন্য কেউ করতে পারবে না, তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে তার বদলী হজ্ব করানো জায়েয নয়। আর যদি অসিয়তের সময় কারো নাম বললেও অন্য কাউকে দিয়ে করাতে নিষেধ না করে থাকে অর্থাৎ শুধু এতটুকু বলেছে যে, অমুককে দিয়ে আমার বদলী হজ্ব করাবে, এক্ষেত্রে উত্তম হল ঐ নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দিয়েই হজ্ব করানো। তবে ঐ ব্যক্তি যদি রাজি না হয় বা কোনো কারণে করতে সক্ষম না হয় তাহলে অন্য কাউকে দিয়েও করাতে পারবে।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই ব্যাক্তিকে না পাঠিয়ে অন্য কাউকে বদলি হজে যদি ওয়ারিশগন পাঠায়, তাহলেও মৃতের ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।
(আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০০।)
,
(ছ)
শরীয়তের  বিধান  হলোঃ 
বদলী হজ্বকারী শুধু এক হজ্বের ইহরাম করবে। তার জন্য একত্রে দুই হজ্বের নিয়তে ইহরাম করা-একটি প্রেরণকারীর পক্ষ থেকে আর অপরটি নিজের জন্য-এটি জায়েয নয় এবং এর দ্বারা প্রেরণকারীর হজ্ব আদায় হবে না। তবে নিজের নিয়তে যে হজ্বের ইহরাম করেছে তা যদি ছেড়ে দেয় তাহলে প্রেরকের বদলী হজ্ব আদায় হবে।

বদলী হজ্বকারী নির্দিষ্ট এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে ইহরাম করবে। একই হজ্বের ইহরাম দুই ব্যক্তির পক্ষ থেকে করা জায়েয নয়। যদি এমনটি করে তাহলে দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না। এটি আদায়কারীর নিজের হজ্ব হবে। 
(আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৭, ৬০১)

(!)
তাহলে দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না।
(!!)
তাহলেও দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না।

(!!!)
তাহলেও দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না।

(ঝ)
আবার ইহরাম বাধতে পারবেন।
মিকাতে আসতে হবেনা।
,
(ঞ)
এটি জরুরি বা বিদ'আত নয়।
মুস্তাহাব আমল।
জমজমের পানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তা’ই আমরাও জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম মনে করি।বাকি এভাবে জমজমের পানি পান করা জরুরী নয়।

হাদীস শরীফে  এসেছেঃ 

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَرِبَ مِنْ زَمْزَمَ وَهُوَ قَائِمٌ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৬]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (22 points)
ছ এর প্রকৃত উত্তরঃ https://ifatwa.info/24575/

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 198 views
...