আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
394 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (22 points)
closed by
ক) হজ্বের সময় হাজির দম (পশু কোরবানির) আসলে নিজে কোরবানি করবো নাকি অন্যকে দিয়ে? যেহেতু ইহরাম বেঁধে কোরবানি করা যায় না।

খ) নিজে নখ চুল কাটলে সমস্যা আছে তাওয়াফ ও উমরাহ এর পরে? নাকি অন্যকে দিয়ে করতে হবে

গ) একসাথে অনেক উমরাহ এর নিয়ত করতে হলে কি করতে হবে? আবার মীকাত এ আসতে হবে?

ঘ) হজে তামাত্তুতে উমরাহ করে হজ শুরুর আগে পর্যন্ত হিলের ভিতরে থাকা যাবে নাকি হিলের বাইরে মক্কায় থাকা লাগে?

চ) ইহরামের জিনায়াত এ পূর্ণ একদিন কিছু কাজ করলে দম আসে। পূর্ণ একদিন মানে কি? একদিন একরাত ২৪ ঘন্টা নাকি শুধু একটা দিন(১২ ঘন্টার মত)?

ছ) মুহরিম ব্যক্তি বিনা ওজরে চুল বা দাড়ি একটু কেটে ফেললেও কি দম আসবে? (শীটে লিখা চেঁছে ফেললে দম আসে)

জ)অনেকের নখ একটু বড় হলেই মাংসের ভিতরে ঢুকে ব্যথা করে অনেক। এই ওযরের কারণে সব নখ কেটে ফেললে দম আসবে?

ঝ) আমার হজ ভেঙে গেছে ধরেন। এরপরের বছর কাযা করতে হবে। তখন যদি যাওয়ার থাকার ফিরে আসার টাকা না থাকে, তবে কি করবো? সারাজীবনেও এই পরিমাণ টাকা না হলে কি করবো?

ঞ) হজের মধ্যে জিনায়াত হিসেবে রোযা আসলে, সেই রোযা কখন রাখতে হবে? রোযা রেখে হজের কাজ করা কষ্ট হতে পারে।

ট) ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার জিনায়াত কি? (যেমনঃ তাওয়াফে সদর ছেড়ে দেওয়া)

ঠ) মাথা ঢেকে রাখলে জিনায়াত কি?
closed

1 Answer

+1 vote
by (657,800 points)
edited by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(ক)
উক্ত দম হারামের সীমানার ভিতরেই জবাই করতে হবে।
যদি নিজে হালাল হওয়ার পূর্বেই উক্ত দম জবাই করা,তাহলে অন্যকে দিয়ে জবাই করাবে।
আর যদি নিজে হালাল হওয়ার পর দম জাবাই করে,তাহলে নিজেও জবাই করতে পারবে।
অন্যকে দিয়েও করাতে পারবে।
,
(খ)
প্রথমেই কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
১০ যিলহজ্ব কুরবানীর পর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যেই মাথা মুণ্ডাতে বা চুল কাটতে হবে।

ইফরাদ হজ্বকারীদের যেহেতু ওয়াজিব কুরবানী নেই তাই তারা রমীর পরই চুল কাটতে পারবে। রমীর আগে চুল কাটলে দম ওয়াজিব হবে। -শরহু মাআনিল আছার ১/৪৪৭

হাজ্বীদের ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মিনাতে মাথা মুণ্ডানো বা চুল কাটা সুন্নত।
আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় এসে জামরা আকাবায় কংকর নিক্ষেপ করলেন। অতপর মিনায় নিজ অবস্থানস্থলে গেলেন এবং কুরবানী করলেন। এরপর চুল মু-নকারীকে চুল মুণ্ডানোর আদেশ করলেন। প্রথমে ডান পাশের চুলের দিকে ইশারা করলেন। অতপর বাম পাশের চুলের দিকে। অতঃপর কেশ মোবারক লোকদের মাঝে বিতরণ করে দিলেন। -সহীহ মুসলিম ১/৪২১

জামরা আকাবার কংকর নিক্ষেপের পর হজ্ব আদায়কারী নিজের চুল কাটার আগে অন্যের চুল কাটতে পারবে।
ইবনে জুরাইজ রাহ. বলেন, আমি আতা রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যক্তি জামরা আকাবার রমী (কংকর নিক্ষেপ) করেছে কিন্তু এখনো চুল মুণ্ডন করেনি। সে কি অন্যের চুল কামিয়ে দিতে পারবে? তিনি বললেন,  হাঁ, পারবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ১৬১৩৯

প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যদি হজ্জে ইফরাদ কারী হয়,সেক্ষেত্রে রমির পরে নিজ চুল কাটতে পারবে।
আর যদি তামাত্তু' বা কারেন হয়,তাহলে কুরবানীর পর নিজের চুল কাটতে পারবে।
,
(গ)
১ম ওমরা শেষ করে মাথা মুন্ডিয়ে/চুল কেটে হালাল হবে।
পুনরায় নতুন করে নিয়ত করে হারাম এলাকার সীমানার বাহিরে গিয়ে  ইহরাম বাধবে।
(মসজিদে আয়েশা এক্ষেত্রে সব চেয়ে নিকটে)
এভাবেই যতগুলো ওমরা আদায় করতে চায়,আদায় করবে।
,
(ঘ)
এক্ষেত্রে ওমরাহ থেকে হালাল হওয়ার পর সে হিল ব্যাতিত অন্যত্রেও যেতে পারবে।
মক্কার বাহিরেও যেতে পারবে।
তবে নিজ বাড়িতে আসবেনা।
,
(চ)
ফিকহের কিতাবে এক দিন অথবা এক রাত এর কথা এসেছে। 
,
(ছ)
এক্ষেত্রে দম আসবেনা।
তবে ফিদইয়াহ আদায় করতে হবে।

 وَ لَا تَحۡلِقُوۡا رُءُوۡسَکُمۡ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡہَدۡیُ مَحِلَّہٗ ؕ فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ بِہٖۤ اَذًی مِّنۡ رَّاۡسِہٖ فَفِدۡیَۃٌ مِّنۡ صِیَامٍ اَوۡ صَدَقَۃٍ اَوۡ نُسُکٍ ۚ 
আর তোমরা মাথা মুন্ডন করো না যে পর্যন্ত হাদঈ তার স্থানে না পৌছে। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয় বা মাথায় কষ্টদায়ক কিছু হয় তবে সিয়াম কিংবা সাদাকা অথবা পশু যবেহ দ্বারা তার ফিদইয়া দিবে।
(সুরা বাকারা ১৯৬)

(জ)
যদি হাত পায়ের নখ এক বৈঠকেই কেটে ফেলে,তাহলে দম দিতে হবে।
যদি পাঁচ আঙ্গুল থেকে কম কাটে,তাহলে ছদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ আদায় করবে।

عن لیث عن عطاء وطاؤس ومجاہد: أنہم قالوا في المحرم: إذا نتف إبطہ أو قلَّم أظفارہ فإن علیہ الفدیۃ۔ (المصنف لابن أبي شیبۃ ۸؍۲۰۳ رقم: ۱۳۶۰۴ المجلس العلمي)

ولیس للمحرم أن یقص أظافیرہ قبل الحلق، إذا قلم المحرم جمیع أظافیرہ فعلیہ دم واحد، وإن قلم أظفار کف فعلیہ دم، وإن قلم أقل کف فعلیہ صدقۃ۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۳؍۵۸۶ رقم: ۵۱۰۰ زکریا، تبیین الحقائق ۲؍۳۱۱)
সারমর্মঃ 

(ঝ)
আদায় করতে হবে।
নতুবা মারা যাওয়ার আগে বদলি হজ্জের অছিয়ত করবে।
,
(ঞ)
প্রথম তিনটি রোযা যিলহজ্জ মাসের ৭ তারিখের মধ্যেই আদায় করবে।
বাকি সাতটি রোযা বাড়িতে এসে আদায় করবে।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ فِی الۡحَجِّ وَ سَبۡعَۃٍ اِذَا رَجَعۡتُمۡ ؕ تِلۡکَ عَشَرَۃٌ کَامِلَۃٌ ؕ ذٰلِکَ لِمَنۡ لَّمۡ یَکُنۡ اَہۡلُہٗ حَاضِرِی الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۱۹۶﴾
কিন্তু যদি কেউ তা না পায়, তবে তাকে হজের সময় তিন দিন এবং ঘরে ফিরার পর সাত দিন এ পূর্ণ দশ দিন সিয়াম পালন করতে হবে। এটা তাদের জন্য, যাদের পরিজনবর্গ মসজিদুল হারামের বাসিন্দা নয়। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং জেনে রাখ যে, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।
(সুরা বাকারা ১৯৬)

(ট)
হ্যাঁ দম দিতে হবে।

(ঠ)
পুরুষের জন্য মাথা ও মুখমণ্ডল আবৃত করা নিষেধ। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, মুখমণ্ডল ও তার উপরের অংশ মাথার অন্তর্ভুক্ত। অতএব ইহরাম গ্রহণকারী থুতনী থেকে উপরের দিকে আবৃত করবে না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং: ১৪৪৫২)

যদি একদিন অথবা এক রাত হয়,তাহলে দম ওয়াজিব হবে।

وإن لبس ثوبا مخیطا أو غطی رأسہ یوما کاملا فعلیہ دم۔ (ہدایۃ ۱؍۲۸۹)
সারমর্মঃ
কেহ যদি পূর্ণ একদিন সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করে,বা অনুরূপ সময় মাথা ঢেকে রাখে, তাহলে 
তার উপর দম ওয়াজিব হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 157 views
...