(ক)
হজ্ব ফরজ হয় দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।
সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ لِلّٰہِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡہِ سَبِیۡلًا ؕ وَ مَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۹۷﴾
আর মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য। আর যে কেউ কুফরী করল সে জেনে রাখুক, নিশ্চয় আল্লাহ্ সৃষ্টিজগতের মুখাপেক্ষী নন।
(সুরা আল ইমরান ৯৭)
বিস্তারিত জানুনঃ
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির উপর হজ্জ ফরজ হবেনা।
,
(খ)
যদি সেই বছরেই হজ্জ ফরজ হওয়ার মতো সামর্থবান হয়,তাহলে বদলি হজ্জ করতে হবেনা।
(গ)
হজ্জের মূল কাজ যিলহজ্জ মাসের ৯.১০.১১.১২.১৩ তারিখ।
,
শাওয়ালের পূর্বে হজ্জের ইহরাম বাধা জায়েজ নেই।
শাওয়ালের পূর্বে হজ্জের ইহরাম বাধলে কিছু ইমামের মতে সেই ইহরাম দ্বারা হজ্জ আদায় হবেনা।
আবু হানিফা রহঃ এর মতে হজ্জ আদায় হলেও মাকরুহ হবে।
(মা'আরেফুল কুরআন ১/৪৮২)
(ঘ)
তাকে হজ্জ করতেই হবে।
জীবনের শেষ পর্যন্তও হজ্জ করতে না পারলে অছিয়ত করে যেতে হবে।
(ঙ)
বদলী হজ্বের জন্য নিজ দেশ থেকেই কাউকে পাঠাতে হবে। নিজ দেশ থেকে কাউকে পাঠানোর সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অন্য দেশে অবস্থানরত কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব করানো হলে প্রেরণকারীর ফরয হজ্ব আদায় হবে না। এক্ষেত্রে নিজ দেশ থেকে পুনরায় বদলী হজ্ব করাতে হবে।-মানাসিক ৪৪০; গুনইয়াতুন নাসিক ৩২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৫
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বদলি হজ্জ আদায় হবেনা।
(চ)
মৃত ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কাউকে দিয়ে তার বদলী হজ্ব করানোর অসিয়ত করে থাকে যে, অমুক আমার বদলী হজ্ব করবে, অন্য কেউ করতে পারবে না, তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে তার বদলী হজ্ব করানো জায়েয নয়। আর যদি অসিয়তের সময় কারো নাম বললেও অন্য কাউকে দিয়ে করাতে নিষেধ না করে থাকে অর্থাৎ শুধু এতটুকু বলেছে যে, অমুককে দিয়ে আমার বদলী হজ্ব করাবে, এক্ষেত্রে উত্তম হল ঐ নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দিয়েই হজ্ব করানো। তবে ঐ ব্যক্তি যদি রাজি না হয় বা কোনো কারণে করতে সক্ষম না হয় তাহলে অন্য কাউকে দিয়েও করাতে পারবে।
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই ব্যাক্তিকে না পাঠিয়ে অন্য কাউকে বদলি হজে যদি ওয়ারিশগন পাঠায়, তাহলেও মৃতের ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।
(আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০০।)
,
(ছ)
শরীয়তের বিধান হলোঃ
বদলী হজ্বকারী শুধু এক হজ্বের ইহরাম করবে। তার জন্য একত্রে দুই হজ্বের নিয়তে ইহরাম করা-একটি প্রেরণকারীর পক্ষ থেকে আর অপরটি নিজের জন্য-এটি জায়েয নয় এবং এর দ্বারা প্রেরণকারীর হজ্ব আদায় হবে না। তবে নিজের নিয়তে যে হজ্বের ইহরাম করেছে তা যদি ছেড়ে দেয় তাহলে প্রেরকের বদলী হজ্ব আদায় হবে।
বদলী হজ্বকারী নির্দিষ্ট এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে ইহরাম করবে। একই হজ্বের ইহরাম দুই ব্যক্তির পক্ষ থেকে করা জায়েয নয়। যদি এমনটি করে তাহলে দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না। এটি আদায়কারীর নিজের হজ্ব হবে।
(আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৭, ৬০১)
(!)
তাহলে দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না।
(!!)
তাহলেও দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না।
(!!!)
তাহলেও দু’জনের কারো হজ্ব আদায় হবে না।
(ঝ)
আবার ইহরাম বাধতে পারবেন।
মিকাতে আসতে হবেনা।
,
(ঞ)
এটি জরুরি বা বিদ'আত নয়।
মুস্তাহাব আমল।
জমজমের পানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তা’ই আমরাও জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম মনে করি।বাকি এভাবে জমজমের পানি পান করা জরুরী নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَرِبَ مِنْ زَمْزَمَ وَهُوَ قَائِمٌ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৬]