ইবন সা’দ তাঁর ব্যবসায় সম্পর্কে বলছেনঃ ‘খাদীজা ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত ও সম্পদশালী ব্যবসায়ী মহিলা। তাঁর বাণিজ্য সম্ভার সিরিয়া যেত এবং তাঁর একার পণ্য কুরাইশদের সকলের পণ্যের সমান হতো।’ ইবন সা’দের এ মন্তব্য দ্বারা খাদীজার ব্যবসায়ের পরিধি উপলব্ধি করা যায়। অংশীদারী বা মজুরী বিনিময়ে যোগ্য লোক নিয়োগ করে তিনি দেশ বিদেশে মাল কেনাবেচা করতেন।
তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ও সম্পদশালী ব্যবসায়ী নারী। তাঁর ব্যবসার মালামাল সিরিয়ায় যায়। তাঁর একার পণ্যসামগ্রীই কুরাইশদের সবার পণ্যের সমান। অংশিদারী বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যোগ্য লোক নিয়োগ করে তিনি দেশ-বিদেশে পণ্য বেচাকেনা করেন। তাঁর ব্যবসার মালামাল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে বহন করার জন্য নিজস্ব সত্তর হাজার উট আছে। তাঁর বিশাল একটি গুদাম ঘর আছে, সেখানে আছে সবুজ রেশমি কাপড়ের তৈরি সাইন বোর্ড ঝুলানো। সে ঘরটি বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রীতে ভরপুর। তাঁর আছে অনেক দাস-দাসী বা কর্মচারী, তারা তাঁর ব্যবসার মালামাল বিভিন্ন দেশে আমদানি-রপ্তানি করে। এর দ্বারা লাভবান হয় অন্যরাও।
(সীরাতে মুস্তফা সাঃ)
فقد وصلت تجارتها وسُمعتها الحسنة إلى بلاد الشام، والعراق، والفرس، والروم، وعُرف عنها أيضاً إحسانها للفقراء والمحتاجين، فكانت بمثابة يد العون لهم، كريمةً في عطائها، مُحسنةً للناس جميعاً.لم تكن السيدة خديجة -رضي الله عنها - تسافر للتجارة بأموالها، بل كانت تتفق على السفر للتجارة مع رجالٍ مقابل مبلغٍ معينٍ، أو تعقد معهم عقد مُضاربةٍ أو قِراضٍ؛ ويعني عقد اتفاقٍ مع طرفٍ آخرٍ بالخروج للتجارة مقابل نسبةٍ معينةٍ، على أن تملك المال، وتكون الخسارة عليها وحدها دون تأثّر الطرف الآخر، وفي ذلك يقول أبو زهرة -رحمه الله-: "كانت السيدة خديجة -رضي الله عنه- تتحرّى في أولئك العاملين لها الأمانة؛ لأنّهم في عملهم ينوبون عنها، لا تلقاهم إلّا في ذهابهم ومجيئهم
ابراهيم الجمل، ام المؤمنين خديجة بنت خويلد، القاهرة: دار الفضيلة، صفحة 59-63. بتصرّف.
সারমর্মঃ
হযরত খাদিজা রাঃ এর ব্যবসা বানিজ্য শাম,পারস্য,রোম ইত্যাদি এলাকায় ছড়িয়েছিলো।
ব্যবসার জন্য খাদিজা রাঃ সফর করতেননা,বরং তিনি বিশ্বস্ত পুরুষ পাঠাতেন,অথবা আকদে মুদারাবা করতেন।
(০২)
নবী ﷺ এর সাথে বিবাহের পরেও কি উনি ব্যবসা পরিচালনা করেছিলেন বলে জানা যায়নি।
বরং তিনি ইসলাম গ্রহণের পর হযরত খাদিজা রা. তাঁর সব ধন-সম্পদ ইসলাম প্রচার-প্রসারের কাজে ওয়াকফ করে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে আল্লাহর ইবাদত এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। সংসারের সব আয় বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে খাদিজার দুশ্চিন্তা। তিনি ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে সব প্রতিকূল অবস্থার মোকাবেলা করেন। ইসলামকে মুশরিকদের প্রত্যাখ্যান ও অবিশ্বাসের কারণে আল্লাহর রাসূল যে ব্যথা অনুভব করেন, খাদিজা রা.-এর কাছে এলে তা দূর হয়ে যায়। তিনি তাঁকে সান্ত¡না দেন, সাহস ও উৎসাহ যোগান। তাঁর সব কথাই তিনি বিনা দ্বিধায় বিশ্বাস করে নেন। মুশরিকদের সব অমার্জিত আচরণ তিনি রাসূলের কাছে হালকা ও তুচ্ছভাবে তুলে ধরেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘দুনিয়ার কোনো ধন-সম্পদই আমাকে এতটা লাভবান করেনি যতটা খাদিজার সম্পদ করেছে।’ আল্লাহর রাসূল খাদিজা রা.-এর সম্পদ থেকে ঋণগ্রস্তদের ঋণমুক্ত করার কাজে, রিক্তহস্তদের সাহায্যের কাজে, এতিমদের প্রতিপালনের কাজে ব্যয় করেন। মুসলমানদের মধ্যে যারা মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে আসে, মুশরিকরা তাদের ধন-সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়, তিনি তাদেরকে খাদিজার রা. সম্পদ থেকে সাহায্য করেন। এর মাধ্যমে তারা মদিনায় পৌঁছে যায়। এক কথায়, তিনি যেভাবে ভালো মনে করেন খাদিজার সম্পদ সেভাবেই খরচ করেন।
ইসলাম গ্রহণের পর হযরত খাদীজা তাঁর সকল ধন-সম্পদ তাবলীগে দ্বীনের লক্ষ্যে ওয়াকফ করেন। রাসূল সা. ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে আল্লাহর ইবাদাত এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। সংসারের সকল আয় বন্ধ হয়ে যায়। সেই সাথে বাড়তে থাকে খাদীজার দুশ্চিন্তা। তিনি ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে সব প্রতিকূল অবস্থার মুকাবিলা করেন। আল-ইসতিয়াব গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, ‘মুশরিকদের প্রত্যাখ্যান ও অবিশ্বাসের কারণে রাসূল সা. যে ব্যথা অনুভব করতেন, খাদীজার কাছে এলে তা দূর হয়ে যেত। কারণ, তিনি রাসূলকে সা. সান্ত্বনা দিতেন, সাহস ও উৎসাহ যোগাতেন। তাঁর সব কথাই তিনি বিনা দ্বিধায় বিশ্বাস করতেন। মুশরিকদের সকল অমার্জিত আচরণ তিনি রাসূলুল্লাহর সা. কাছে অত্যন্ত হালকা ও তুচ্ছভাবে তুলে ধরতেন।’ (তাবাকাত- ৩/৭৪০)