বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সমাধানঃ-
(১)
তেলাওয়াতে সেজদার হুকুম?
তেলাওয়াতে সেজদা আদায় করা ওয়াজিব,যারা তেলাওয়াত করবেন বা শুনবেন সবাইকে আদায় করতে হবে নতুবা গুনাহ হবে।কখন আদায় করতে হবে?নামজের মধ্যে হলে ততক্ষনাৎ আদায় করা ওয়াজিব,
আদ্দুরুল মখতার ২খন্ড১১০পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছেঃ
ﻭَﻟَﻮْ ﺗَﻼَﻫَﺎ ﻓِﻲ اﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺳَﺠَﺪَﻫَﺎ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻻَ ﺧَﺎﺭِﺟَﻬَﺎ
তরজমাঃ- যদি নামাজে তেলাওয়াতে সেজদা পাঠ করা হয় তাহলে নামাজেই সেজদা করতে হবে,বাহিরে করলে হবে না।নামাজে আদায় করার পদ্ধতি হচ্ছে, যদি সূরার শেষাংশে সেজদায়ে তেলাওয়াত হয়,তাহলে নামাজের মধ্যেই উক্ত আয়াতের পর তিন আয়াত পড়ার পূর্বে আদায় করতে হবে এবং করাই ওয়াজিব।কিন্তু মধ্যাংশে হলে উক্ত আয়াতের পর তিন আয়াত থেকে একটু বেশীও পড়া যাবে।(আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৫৬)
নামজের বাইরে তেলাওয়াতে সেজদা পড়লে তৎক্ষণাৎ আদায় করা ওয়াজিব নয় বরং যে কোনো সময় আদায় করা যাবে তবে তারাতারি আদায় করে নেওয়া উত্তম,এবং বেশী দেরী করা যাবে না,কেননা ভুলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে গোনাহ হবে।এ প্রসঙ্গে ফাতওয়ায়ে শামীতে বর্ণিত আছে.............
مافي الدرالمختار) ﻭَﻫِﻲَ ﻋَﻠَﻰ اﻟﺘَّﺮَاﺧِﻲ) ﻋَﻠَﻰ اﻟْﻤُﺨْﺘَﺎﺭِ ﻭَﻳُﻜْﺮَﻩُ ﺗَﺄْﺧِﻴﺮُﻫَﺎ ﺗَﻨْﺰِﻳﻬًﺎ،
و في رد المحتار تحت قوله "على المختار " اﻹِْﺟْﻤَﺎﻉَ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﻮْ ﺗَﺮَاﺧَﻰ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺩَاءً ﻣَﻊَ ﺃَﻥَّ اﻟْﻤُﺮَﺟَّﺢَ ﺃَﻧَّﻪُ ﻋَﻠَﻰ اﻟْﻔَﻮْﺭِ ﻭَﻳَﺄْﺛَﻢُ ﺑِﺘَﺄْﺧِﻴﺮِﻩِ
তরজমাঃ- দেরীতে তেলাওয়াতে সেজদা আদায় করলে আদায়-ই হবে,(ক্বাযা হবে না) যদিও ততক্ষনাৎ আদায় করা উত্তম,এবং বেশী দেরী করা মাকরুহে তানযিহি ও গোনাহ।২/১০৯
ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে
وَفِي الْغِيَاثِيَّةِ وَأَدَاؤُهَا لَيْسَ عَلَى الْفَوْرِ حَتَّى لَوْ أَدَّاهَا فِي أَيِّ وَقْتٍ كَانَ، يَكُونُ مُؤَدِّيًا لَا قَاضِيًا، كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة هَذَا فِي غَيْرِ الصَّلَاتِيَّةِ أَمَّا الصَّلَاتِيَّةُ إذَا أَخَّرَهَا حَتَّى طَالَتْ الْقِرَاءَةُ تَصِيرُ قَضَاءً وَيَأْثَمُ، هَكَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ.
তরজমাঃ- গিয়াছিয়্যাহ নামক কিতাবে বর্ণিত আছে,তেলাওয়াতে সেজদা যেকোনো সময় আদায় করলে আদায়-ই হবে ক্বাযা হবে না।তাতাখানিয়ায় বর্ণিত আছে ইহা নামাজের বাইরে এবং নামাজের ভিতরের হুকুম হচ্ছে যদি আয়াতে সেজদার পর ক্বেরাতকে বেশী লম্বা করা হয় তাহলে ক্বাযা হবে এবং গোনাহ হবে।(১/১৩৫)
(২)
والسجدة واجبة في هذه المواضع على التالي والسامع سواء قصد سماع القرآن أو لم يقصد، كذا في الهداية.
তেলাওয়াত কারী এবং শ্রবণকারী উভয়ের উপর তেলাওয়াতে সেজদা ওয়াজিব।চায় তারা শ্রবণের ইচ্ছা করুক বা না করুক।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩২)
জ্বী, আয়াতে সেজদা তেলাওয়াত করলে সেজদা দেওয়া ওয়াজিব।এবং শ্রবণ করলে সেজদা দেওয়া ওয়াজিব।
ঐ আয়াতটি সেজদার আয়াত, সেটা না জেনেও যদি কেউ শ্রবণ করে নেয়,তাহলেও তার উপর সেজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হবে।যে পড়ছে, তার সেজদা দেওয়া বা না দেওয়ার উপর সেজদায়ে তেলাওয়াত নির্ভর করবে না।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।