আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
246 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (58 points)
edited by
সম্প্রতি বিয়ে করতে চাইছি। আলহামদুলিল্লাহ, দ্বীনদার পরিবার ও প পাত্রী পেয়ে গেছি। মা কে নিয়ে পাত্রী দেখেও এসেছি। আবার মেয়ের ফ্যামিলি থেকেও আমার বাসায় এসে দেখে গেছে। আমরা দুজন দুজনকে পছন্দ করে ফেলেছি।

বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য - আমার পরিবার পুরপুরি ইসলাম অনুযায়ী চলেনা।

আমার পরিস্থিতি উল্লেখ করছিঃ

১.আমার বাবা নেই আবার আমার ইনকাম নেই। তবে চাকুরির চেস্টা করছি। এখনো ব্যবস্থা হয়নি।

২. আমি আমার পরিবারের উপর নির্ভরশীল।  বাড়িভাড়া ও আমার বাবার রেখে যাওয়া টাকা থেকে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে কোনভাবে আমরা চলি। এছাড়া আমি আমার দিক থেকে সর্বোচ্চ চেস্টা করেও কোন হালাল ইনকাম সোর্সের ব্যবস্থা এখন অবধি করতে পারিনি।

৩. নারী ফিতনা থেকে বাচতে,  সুন্নত পালন করতে, ইবাদতের অংশ হিসেবে এবং হালাল ভাবে জৈবিক চাহিদা পূরণ করা জরুরি হয়ে পড়ায় বিয়ে করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

৪. সাওম পালন করেও আমি ফিতনা থেকে বেচে থাকতে পারছিনা।

৫. ঢাকায় আমার নিজের বাড়ি আছে। আমি যদি বিয়ে করি তবে মেয়ের কেবল থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারব যদিও আনুষংগিক খরচের ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছিনা।

৬. মেয়ের পরিবার এর এপ্রোচ দেখে মনে হয়েছে তারা যথেষ্ট সাপোর্টিভ এবং সব জেনে বুঝে বিয়েতে আগ্রহী।

৭. মেয়ের পরিবার ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী চলে। উনাদের কথা হল আমরা যেভাবে চাই সেভাবেই রাজি।

৮. মেয়ের দ্বীনিদারিতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তদ্রুপ, আমার দ্বীনদারিতাও মেয়েকে মুগ্ধ করেছে। অর্থাৎ আমরা একে অপরকে দ্বীনিদারিতার দিক থেকে পছন্দ করেছি।

৯. আমার ছোট কাকা বিয়েতে রাজি নয়। কারণ, আমার জব নেই। তাছাড়া উপার্জন করে এমন ব্যক্তিও আমাদের পরিবারে নেই। আমি বেকার তবে চেস্টায় আছি।

১০. আমরা অনেকটা যৌথ পরিভারের মত। এক বিল্ডিং এ সব কাকারা থাকি।

১১. বাবা না থাকায় আমার মার পক্ষে ছোট কাকার বিপক্ষে গিয়ে বিয়েতে আগানো সম্ভব হচ্ছেনা।

১২. মেয়ের পরিবার বিয়েতে সম্পূর্ণ রাজি। আমার জব না গওয়া পর্যন্ত তারা মেয়েকে তাদের কাছে রেখে ভরণপোষণ দিতে রাজি আছে।

উপরোক্ত পরিস্থিতির আলোকে,

১.ফিতনা থেকে বাচতে, ইবাদতের অংশ হিসেবে বিয়ে করতে পারব কি? (মার অনুমতি থাকতেও পারে আবার নাও পারে)

২. উপরোক্ত পরিস্থিতিতে ইসলামের আলোকে কোন পরামর্শ দিবেন?

৩. আর আমি যদি বিয়ে করেও ফেলি তবে কি গুনাহ হবে? এক্ষেত্রে মেয়ে তার পরিবারের সাথেও থাকতে পারে আবার আমার সাথেও থাকতে পারে যা মেয়ের আন্তরিক ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
পূর্বের এক ফতোয়াতে আমরা উল্লেখ করেছিঃ     
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
‘আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। 

عن علقمة، قال: كنت مع عبد الله، فلقيه عثمان بمنى، فقال: يا أبا عبد الرحمن إن لي إليك حاجة فخلوا، فقال عثمان: هل لك يا أبا عبد الرحمن في أن نزوجك بكرا، تذكرك ما كنت تعهد؟ فلما رأى عبد الله أن ليس له حاجة إلى هذا أشار إلي، فقال: يا علقمة، فانتهيت إليه وهو يقول: أما لئن قلت ذلك، لقد قال لنا النبي صلى الله عليه وسلم: «يا معشر الشبابمن استطاع منكم الباءة فليتزوج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء»

তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে।(সহীহ বোখারী-৫০৬৫)

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   

اَلرِّجَالُ قَوّٰمُوۡنَ عَلَی النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللّٰہُ بَعۡضَہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ وَّ بِمَاۤ اَنۡفَقُوۡا مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ ؕ فَالصّٰلِحٰتُ قٰنِتٰتٌ حٰفِظٰتٌ لِّلۡغَیۡبِ بِمَا حَفِظَ اللّٰہُ ؕ وَ الّٰتِیۡ تَخَافُوۡنَ نُشُوۡزَہُنَّ فَعِظُوۡہُنَّ وَ اہۡجُرُوۡہُنَّ فِی الۡمَضَاجِعِ وَ اضۡرِبُوۡہُنَّ ۚ فَاِنۡ اَطَعۡنَکُمۡ فَلَا تَبۡغُوۡا عَلَیۡہِنَّ سَبِیۡلًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیًّا کَبِیۡرًا ﴿۳۴﴾

পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক, ঐ (বিশেষত্বের) কারণে, যার দ্বারা আল্লাহ তাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং ঐ সম্পদের কারণে, যা তারা ব্যয় করেছে। সুতরাং সৎ নারীরা হল অনুগত, (স্বামীর) অবর্তমানে (নিজের সতিত্ব ও স্বামীর সম্পদ) রক্ষাকারী, আল্লাহ রক্ষা করার কারণে ... -সূরা নিসা : ৩৪

এই আয়াতে ‘পুরুষের ব্যয়কৃত সম্পদ’ মানে স্ত্রীর মোহরানা, খোরপোষ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ, কুরআন ও সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী যা বহন করা অবশ্যকর্তব্য। এ আয়াত প্রমাণ করে, স্ত্রীর নাফাকা ও খোরপোষ স্বামীর উপর ফরয। -তাফসীর ইবনে কাছীর ১/৪৯২; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/১৮৮

রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

★কোন মুসলমানের যদি কামভাব বা জৈবিক চাহিদার আধিক্যতার দরুন যিনা. ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে থাকে এবং সে মোহর, আহার এবং পারিবারিক প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহনে সক্ষম হয় তাহলে এমন ব্যক্তির উপর বিবাহ করা ওয়াজিব। 

বিস্তারিত জানুনঃ  
,

★★প্রশ্নে উল্লেখিত রয়েছেঃ
৫. ঢাকায় আমার নিজের বাড়ি আছে। আমি যদি বিয়ে করি তবে মেয়ের কেবল থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারব যদিও আনুষাংগিক খরচের ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছিনা।
,
এখানে যেহেতু স্পষ্ট যে আপনার তার ভরনপোষণ এর দায়িত্ব নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে,আবার আপনি নারী ফিতনাহ থেকে বাঁচার তাগিদেই বিবাহ করতে চাচ্ছেন,সাওম পালন করেও আপনি নারী ফিতনা থেকে বেঁচে থাকতে পারছেননা।
 সুতরাং বুঝা গেলো আপনার জন্য বিবাহ জরুরি।
আর এক্ষেত্রে যেহেতু আপনি নিজ স্ত্রীর থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও করতে পারবেন,আবার মেয়ে চাইলে নিজ বাবার বাসায়েও থাকতে পারবে মর্মে তার পরিবার আপনাকে নিশ্চয়তা দিয়েছে,চাকুরী পাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা ভরনপোষণ এর দায়িত্বও নিতে চাইছে,আর আপনাদের মাঝে কুফুও মিলে গিয়েছে,তাই দ্রুত আপনাদের বিবাহ সম্পন্ন হওয়া জরুরি। 
,
এক্ষেত্রে যদি আপনার সেই কাকা রাজি না হয়,কোনো সমস্যা নেই।
আপনার মা যদি শেষে অমত পোষন করে,তারপরেও আপনি যেহেতু প্রাপ্ত বয়স্ক (বালেগ) তাই আপনার বিবাহ ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকে ছহীহ হবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (58 points)
আমার জন্য এখনই বিয়ে করা জরুরি দুটি কারণেঃ
১. ফিতনা থেকে বেচে থাকা
২. মেয়ে বিবাহযোগ্যা,  তাই তার উপর বিয়ের প্রেশার আছে। অনেক জায়গা থেকে প্রস্তাব আসছে। আমার জন্য কতদিন ই বা তারা মেয়েকে বসিয়ে রাখবে?


এ অবস্থায় আমার পরিবারকে আমি বুঝিয়েছি সুন্দর ভাবে। কিন্তু ইসলামিক না হওয়ায় তারা মানতে চাইছেনা। আমি একা হয়ে পড়েছি। আমার পাশে বলতে গেলে কেউই নেই। 

উল্টা আমার আর আমার মার সাথে যে প্রতিকূল আচরণ করা হচ্ছে তাতে আমরা চাপের মধ্যে আছি উলটা।

এখন আমি একজন এতিম।

আমার মা ও পরিবারের ভয়ে কোন নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত দিতে পারছেনা। আবার আমাকে বলেছে আমাকে ওই ফ্যামিলিতে বিয়ে দিবে। আমার মা কি চায় তা আমি বুঝতে পারছিনা। 


অপরদিকে  আমরা যদি পারিবারিকভাবে আগাই তবে মেয়ের পরিবার পূর্ণ সম্মত আছে বিয়ের ব্যাপারে। 

এখন আমি চাচ্ছি, পারিবারিকভাবে এনগেজমেন্ট করানোর পর ফিতনা থেকে বাচতে আমি আর মেয়ে নিযে নিজে বিয়ে করে নিব৷ আমাদের কারো পরিবারকে এখন ই কিছু জানাব না। জব হলে আমার পরিবার পুনরায় অনুষ্ঠান করে কাবিন করিয়ে নিবে। এখানে,  উল্লেখ্য, আমি যদি পারিবারিক ভাবে এনগেজমেন্ট করাতে পারি তবে পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ে নিশ্চিত ই বলা হয়েছে।


এই পরিস্থিতিতে আমার প্রশ্নঃ

পারিবারিকভাবে এনগেজমেন্ট এর পর দু পরিবার কে না জানিয়ে ফিতনা থেকে বাচার উদ্দেশ্যে নিজেরা বিয়ে করতে পারব কি? আর যদি বিয়ে করেও ফেলি তবে কি গুনাহ বা বাতিল হবে? আমি পারিবারিকভাবেই আগাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সর্বোচ্চ চেস্টার পরেও এখন ই বিয়ে করতে পারছিনা। ইসলাম অনুযায়ী আগানোর রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ ই বলা যায়।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...