জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
ফরজ রোযা রাখা অবস্থায় রোযার নিয়ত করার পর যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো খাবার খায়,বা পান করে, বা সহবাস করে,তাহলে কাজা এবং কাফফারা উভয়টিই ওয়াজিব হবে।
,
তবে শুধু ভুলক্রমে এমনটি করলে রোযা ভেঙ্গে যাবেনা।
,
من نسي وهو صائم فأكل أو شرب فليتم صومه، فإنما أطعمه الله وسقاه
যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।-সহীহ মুসলিম ১/২০২
,
যদি রোযার নিয়ত করার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলে,তাহলেও কাফফারা ওয়াজিব হবেনা।
শুধু কাজা আদায় করা ওয়াজিব হবে।
,
রোযার কাফ্ফারা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন
عن أبي هُرَيْرَةَ رَضِي اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : ( بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ قَالَ مَا لَكَ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا قَالَ لا قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لا فَقَالَ فَهَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لا قَالَ فَمَكَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهَا تَمْرٌ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ ( وهو الزنبيل الكبير ) قَالَ أَيْنَ السَّائِلُ فَقَالَ أَنَا قَالَ خُذْهَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ الرَّجُلُ أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ فَوَ اللَّهِ مَا بَيْنَ لابَتَيْهَا يُرِيدُ الْحَرَّتَيْنِ أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ثُمَّ قَالَ أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ
আমরা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম,তখন একব্যক্তি এসে বলল,হে রাসূলুল্লাহ সাঃ আমি ধংস হয়ে গেছি।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তোমার কি হয়েছে?তিনি বললেন, আমি রোযা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তুমি কি কোনো গোলাম পাবে যাকে তুমি কাফ্ফারা হিসেবে আযাদ করবে?সাহাবী বললেন,আমি সক্ষম নই।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তাহলে কি তুমি ধারাবাহিক দুই মাস রোযা রাখতে পারবে?তিনি বললেন, না,এতে ও আমি সক্ষম নই।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তাহলে কি তুমি ষাটজন মিসকিন আহার করাতে পারবে?তখন তিনি বললেন,না,এতে ও আমি সক্ষম নই।রাসূলুল্লাহ সাঃ স্বস্থানেই নিরবে বসে থাকলেন।রাবী আবু হুরায়রা রাযি বলেন,আমরা এভাবেই আমরা স্ব স্ব স্থানে বসে রইলাম।তৎক্ষনাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এক আ'রাক্ব পরিমাণ খেজুর আসল,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, প্রশ্নকারী কোথায়?সাহাবী বললেন,জ্বী হুুজুর এই তো আমি।তুমি এগুলো নাও,এবং সদকাহ করো।তখন ঐ সাহাবী বললেন হে রাসূলুল্লাহ সাঃ আমি কি আমার থেকে মুহতাজ ব্যক্তিকে সদকাহ করবো?আল্লাহর কসম!মদিনা বাসীদের মধ্যে আমার থেকে গরীব লোক আর কেউ নেই।এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাঃ হেসে ফেললেন, এমনকি উনার দাত বেড়িয়ে পড়ল।অতপর রাসূলুল্লাহ সাঃ ঐ সাহাবীকে বললেন তাহলে তুমি তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও।
{সহীহ বুখারী(ফতহুল বারী নসখা)-১৯৩৬ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
যে কয় রমজান মাসে আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা রেখে রোযার নিয়ত করার পর সেই রোযা ভেঙ্গে ফেলেছেন,
আপনাকে প্রত্যেক রমজান মাসের একটি করে কাফফারা আদায়ই যথেষ্ট।
সব গুলো রোযার আলাদা আলাদা কাফফারা আদায় করতে হবেনা।
প্রতি রমজান মাসের একটি করে কাফফারা আদায় করবেন।
মাসয়ালা হলো কেহ যদি রোযার কাফফারা স্বরুপ লাগাতার ৬০ টি রোযা রাখতে শক্তি না রাখে,তাহলে সে ৬০ জন মিসকিনকে খাবার খাওয়াবে।
,
নতুবা একজন মিসকিনকে ৬০ বেলা খাবার খাওয়াবে।
বা ৬০ টি ছদকায়ে ফিতর আদায় করবে।
আরো জানুনঃ
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার উপর প্রতি রমজানের যেহেতু একটি করে কাফফারা আবশ্যক, তাই আপনি যদি প্রতি রমজানের কাফফারা স্বরুপ লাগাতার ৬০ টি রোযা রাখার শক্তি না রাখেন,তাহলে কাফফারায় ৬০ টা রোজা রাখার পরিবর্তে ৬০ জন মিসকিন কে খাওয়াবেন।
৬০ টি ছদকায়ে ফিতর আদায় করবেন।
,
এখন যদি আদায় না করতে পারেন,পরবর্তীতে ভবিষ্যতে আদায় করবেন।
,
ولو تکرر فطرہ ولم یکفر للأول یکفیہ واحدة ولو في رمضانین عند محمد رحمہ اللہ وعلیہ الاعتماد الخ وفي الشامي: قولہ وعلیہ الاعتماد ونقلہ في البحر عن الأسرار ونقل قبلہ عن الجوہرة لو جامع فی رمضانین فعلیہ کفارتان وإن لم یکفر للأولی فی ظاہر الروایة وہو الصحیح. اہ. قلت: فقد اختلف الترجیح کما تری ویقوی الثانی بأنہ ظاہر الروایة ․ (رد المحتار: ۲/۱۵۱، ط: ظفیریہ)
সারমর্মঃ
প্রাধান্য পাওয়া মত হলো কেহ যদি দুই রমজানে সহবাস করে,তার উপর দুটি কাফফারা ওয়াজিব হবে।