আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
449 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
আমার পিতা-মাতা ঈদ উপলক্ষে আমার ও আমার সন্তানদের উদ্দ্যেশ্যে বেশ কিছু টাকা দিতে চান , কিন্তু অন্য সন্তানদের ( আমার ভাই-বোনদের ) জানাতে নিষেধ করেছেন , কিন্তু পিতা-মাতা কোন এক সন্তানকে অর্থ দিতে পারেন না  আর দিয়েছেন কিনা তাও আমি জানি না , কিন্তু আমি নিশ্চিত আমার সমপরিমান টাকা দিবেন না , এখন টাকা/সম্পদ দিলে সকল সন্তানকে দিতে হয় বলে রাসুলুল্লাহ ( সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) থেকে নিষেধ আছে।

কোথাও কোথাও পুত্রসন্তানদের মধ্যে এক ছেলেকে অন্য ছেলের ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়। ইসলামে এটিও নিষিদ্ধ। নুমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার তাঁর পিতা তাঁকে নিয়ে রাসুল (সা.)-এর কাছে গেলেন এবং বললেন, আমি আমার এ ছেলেকে একটি গোলাম (চাকর) দান করেছি। রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তোমার সব সন্তানকেই এমন দান করেছ? পিতা উত্তর দিলেন, না। রাসুল (সা.) বললেন, তাহলে এ গোলাম ফেরত নিয়ে নাও। (বুখারি, হাদিস : ২৫৮৬)

এখন আমি কি এই টাকা নিয়ে ভোগ করতে পারবো? এই টাকা ভক্ষন করা আমার জন্য কি হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


ব্যক্তি জীবিত এবং সুস্থ্য থাকা অবস্থায় তার মালিকানাধীন সম্পদ যাকে ইচ্ছে দান করতে পারে। যেখানে ইচ্ছে খরচ করতে পারে। এতে তার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।

ব্যক্তি জীবিত থাকা অবস্থায় তার অর্জিত সম্পদের একক মালিকানা তার হাতেই থাকে। তাতে যাচ্ছেতাই হস্তক্ষেপের অধিকার তার রয়েছে। এতে কেউ হক দাবী করার অধিকার রাখে না। হ্যা, মৃত্যুর পরের কথা ভিন্ন। তখন শরয়ী নীতিমালা অনুপাতে সম্পদ বন্টন করতে হয়।

জীবিত অবস্থায় সম্পত্তি দিলে সেটাকে হেবা বলে।
সমস্ত সন্তানদের মাঝে সমতা বজায় রেখে সেই সম্পত্তি দেওয়া মুস্তাহাব।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

  النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ أبَاهُ أتَى بِهِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: إِنِّي نَحَلْتُ ابْنِي هَذَا غُلاَماً كَانَ لِي، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَكُلَّ وَلَدِكَ نَحَلْتَهُ مِثْلَ هَذَا ؟» فَقَالَ: لاَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: فَأَرْجِعهُ وَفي رِوَايةٍ: فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَفَعَلْتَ هذَا بِوَلَدِكَ كُلِّهِمْ ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: اِتَّقُوا الله وَاعْدِلُوا فِي أَوْلاَدِكُمْ فَرَجَعَ أَبِي، فَرَدَّ تِلْكَ الصَّدَقَةَ . وفي روايةٍ : فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «يَا بَشيرُ أَلَكَ وَلَدٌ سِوَى هَذَا ؟» فَقَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «أكُلَّهُمْ وَهَبْتَ لَهُ مِثْلَ هذَا ؟» قَالَ: لاَ، قَالَ: فَلاَ تُشْهِدْنِي إِذاً فَإِنِّي لاَ أَشْهَدُ عَلَى جَوْرٍ وفي روايةٍ : «لاَ تُشْهِدْنِي عَلَى جَوْرٍ» . وفي رواية : «أَشْهِدْ عَلَى هذَا غَيْرِي !» ثُمَّ قَالَ: «أَيَسُرُّكَ أَنْ يَكُونُوا إِلَيْكَ فِي البِرِّ سَواءً؟» قَالَ: بَلَى، قَالَ: «فَلا إِذاً» . متفق عليه 

 নু’মান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তাঁর পিতা তাঁকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে হাজির হয়ে বললেন, ‘আমি আমার এই ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি। [কিন্তু এর মা আপনাকে সাক্ষী রাখতে বলে।]’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমার সব ছেলেকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তাহলে তুমি তা ফেরৎ নাও।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমার সব ছেলের সঙ্গেই এরূপ ব্যবহার দেখিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা কর। সুতরাং আমার পিতা ফিরে এলেন এবং ঐ সাদকাহ [দান] ফিরিয়ে নিলেন।’’

আর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘হে বাশীর! তোমার কি এ ছাড়া অন্য সন্তান আছে?’’ তিনি বললেন, ‘জী হ্যাঁ।’ [রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, ‘‘তাদের সকলকে কি এর মত দান দিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘জী না।’ [রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, ‘‘তাহলে এ ব্যাপারে আমাকে সাক্ষী মেনো না। কারণ আমি অন্যায় কাজে সাক্ষ্য দেব না।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আমাকে অন্যায় কাজে সাক্ষী মেনো না।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘এ ব্যাপারে তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে সাক্ষী মানো।’’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তুমি কি এ কথায় খুশী হবে যে, তারা তোমার সেবায় সমান হোক?’’ বাশীর বললেন, ‘জী অবশ্যই।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে এরূপ করো না।’’ 

(সহীহুল বুখারী ২৫৮৬, ২৫৮৭, ২৬৫০, মুসলিম ১৬২৩, তিরমিযী ১৩৬৭, নাসায়ী ৩৬৭২-৩৬৮৫, আবূ দাউদ ৩৫৪২, ইবনু মাজাহ ২৩৭৫, ২৩৭৬, আহমাদ ১৭৮৯০, ১৭৯০২, ১৭৯১১, ১৭৯৪৩, মুওয়াত্তা মালিক ১৪৭৩)

হেবাসূত্রে সন্তানদের মাঝে সম্পদ বণ্টন করার ক্ষেত্রে ইনসাফ এবং সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরী। এ জন্যই ইমাম আবু ইউসুফ রহ. বলেছেন, স্বাভাবিকভাবে সন্তানদের মাঝে সমানভাবে সম্পদ বণ্টন করা মুস্তাহাব হলেও যদি পিতার পক্ষ থেকে কোনো সন্তানের ক্ষতিসাধনের ইচ্ছা থাকে তখন সমানভাবে সম্পদ বণ্টন করা ওয়াজিব।(ফাতাওয়া আলমগীরী ৪/৩৯১; উমদাতুল কারী ৬/১৪৬ বৈরুত)

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার পিতা মাতার উপর এটি মুস্তাহাব ছিলো যে সকল সন্তানের মাঝে সমতা বজায় রেখে ঈদ উপলক্ষে টাকা দেওয়া। 
এটি আবশ্যকীয় বিধান নয়।
আর কোনো সন্তানের ক্ষতিসাধনের ইচ্ছা থাকলে সেক্ষেত্রে সমানভাবে সম্পদ বণ্টন করা ওয়াজিব হয়ে যায়,প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনারা পিতা মাতা আপনার সন্তানদের বেশি টাকা দিয়ে কোনো সন্তানের ক্ষতিসাধনের ইচ্ছা করতেছেনা,তাই এক্ষেত্রে সকল সন্তানদের মাঝে সমান ভাবে টাকা দেওয়া আপনার পিতা মাতার উপর ওয়াজিবও নয়।
,
তাই উল্লেখিত টাকা ভোগ করতে কোনো সমস্যা নেই।
এটি আপনার জন্য হালাল।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
Assalamo Alykom,

amar akta prosno silo mofti shaheber kase, jobab dile khoshi hobo.

1. oporer hadith e jekaha rasul (s) bolesen, ata  (1) onnai, (2) tomra insaf koro, (3) ata firie nao

ato kothar por o, shob shontan ke shoman vabe dewa ta mostahab keno, ata owajib noi keno?

-Amdad

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...