আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (1 point)
আসসালামু আ'লাইকুম

আমার নিকট আমাদের বাসার ডেভেলপার কিছু টাকা পায় ।আমার বাসার কাজ উনি শেষ করে দিয়েছেন এবং এই পাওনার টাকাটা আমার বাসার কাজের বিল বাবদ পাওনা । আমার নিজের বাসার কাজ উনি সম্পূর্ণ করে দিলেও পুরো বাসার কিছু কাজ বাকি ( যেমন বাসার বাইরের গ্রিল, পারকিং এর ড্রেন ইত্যাদি) যাতে আমার এবং বাসায় বাকি সবার স্বার্থ জড়িত।এই অবস্থায়  আমি এই মুহূর্তে টাকাটা দিতে চাচ্ছি না যেন উনি বাকি কাজ গুলোও সম্পন্ন করে দেন  এবং ডেভেলপার থেকে আমাকে সেইভাবে ব্যাপারটা নিয়ে চাপ দেয়া হয়নি । কিন্তু কিছুদিন আগে আমার ভাই বলছে , যেহেতু পাওনা টাকা দেয়া বাকি, তাই সেটা না দিলে নাকি কুরবানি আদায় হবে না । যদিও আমার কুরবানির নিয়তে রাখা টাকা এবং পাওনাদার এর টাকা সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে গচ্ছিত রাখা । আমি তার যৎসামান্য কাজ যা বাকি আছে ,তা সম্পূর্ণ হওয়া মাত্রই তার পাওনা টাকা পরিশোধ করে দেয়ার নিয়ত রাখি । এমতাবস্থায় এই টাকার জন্য আমার কুরবানির কি কোন অসুবিধা হবে ? জানালে অনেক মেহেরবানি হবে ।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

কারোর কাছে যদি জিলহজ মাসের ১০,১১ ও ১২ তারিখে  নিজ ও নিজ পরিবারের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে ৫২ তোলা রুপা (যার বাজার মূল্য ৫৫/৬০ হাজার টাকা মত হতে পারে) বা তার সমপরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। সুতরাং যদি কারোর এই পরিমাণ সম্পত্তি  উক্ত দিনগুলোতে না থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়। প্রয়োজনীয় জিনিস বলতে বোঝায় এক বছরের খোরাকিবসবাসের জায়গাপ্রয়োজনীয় পরনের কাপড় ও বাসার প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ইত্যাদি। পক্ষান্তরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস বলতে বোঝায় সোনা রুপার অলংকারবসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে আসে না এমন জমিসঞ্চিত টাকাবসবাসের অতিরিক্ত বাড়ির অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ইত্যাদি। আর যদি শুধু স্বর্ণ থাকে তাহলে কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হলো সাড়ে সাত ভরি বা তার থেকে বেশি স্বর্ণ থাকা।

কুরবানির নেসাব পৃথক এবং যাকাতের নেসাব পৃথক। কুরবানি ওয়াজিব হলেই যে যাকাত দিতে হবেবিষয়টা মূলত এমন নয়। বরং যাকাত ওয়াজিব হলেই কুরবানিও ওয়াজিব হবে। কেননা যাকাতের জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত। কিন্তু কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/1688

 

ঋনগ্রস্ত ব্যক্তির যদি ঋনের টাকা ব্যতিত নেসাব পরিমান সম্পদ না থাকেতাহলে তার উপরে কুরবানী আদায় করা ওয়াজিব হবেনা।

,

তবে ব্যবসায়ী ঋণ হলে কুরবানী ওয়াজিব হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/14383/

 

কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " من وجد سعة فليضح" .

হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত  তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তির সামর্থ্য রাখে সে যেন কুরবানী করে। ( আল মুহাল্লা৭/৩৫৭)

 

অন্য এক হাদীসে এসেছে -

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا " .

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তেও কোরবানি করে নাসে যেন আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে। [সুনানে ইবনে মাজাহ৩১২৩]

সুতরাং যে ব্যক্তির উপর কুরবানী করা ওয়াজিব সে যদি ছাগলভেড়া বা দুম্বা কোরবানি দিতে চাই তাহলে একা একা দিতে হবে। দুইজন মিলে দিলে সহীহ হবে না। আর যদি গরুমহিষ ও  উট কোরবানি দিতে চাই তাহলে সর্বোচ্চ ৭ জন মিলে দিতে পারবে। সাত শরীকের বেশি হলে কুরবানী সহীহ হবে না। -সহীহ মুসলিম ১৩১৮মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৯কাযীখান ৩/৩৪৯বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭-২০৮

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পাওনাদারের টাকা পরিশোধ না করে কুরবানী দিলেও কুরবানী হবে ইনশাআল্লাহ। কারণ, পাওনাদারের টাকা দেওয়া, না দেওয়ার সাথে কুরবানী হওয়া, না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ভাইয়ের কথা সঠিক নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কুরবানী দিতে কোনো অসুবিধা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...