আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,103 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (1 point)

আমি ইভ্যালি থেকে ৩টি বাইক অর্ডার করি এই আশায় যে ছাড় মূল্যে বাইকগুলি কিনে কিছু লাভে অন্যত্র পুনরায় বিক্রয় করব। ইভ্যালি ৪৫ দিনের ভিতরে প্রডাক্ট দেয়ার ঘোষনা দিয়েছিল। ফেসবুক পোস্ট থেকে আমার ধারনা ছিল যে, ৪৫ দিনের ভিতরে প্রডাক্ট দেয়ার ঘোষনা থাকলেও বাইকগুলির ডেলিভারী দেরী হবে-এমন কি ৫/৬ মাস পরেও বা তার পরেও হতে পারে। এটাও জানতাম যে, কোন কারণে এরা যদি বাইক না দেয় (যেমন স্টক নেই) তাহলে আমাকে বাইকগুলির বাজার মূল্য (এম.আর.পি.) চেক আকারে ফেরত দিবে যা দিয়ে আমি বাজার থেকে আমার বাইক কিনে নিতে পারি। এটা ইভ্যালির ক্যাশ-ব্যাক অফার না। এটা সরাসরি ডিস্কাউন্টেড অফার। ডিস্কাউন্ট রেট ছিল ৪০% যা বাজারের সাথে সঙ্গতীপূর্ণ কারণ অনলাইন বাজারে ৩০%-৫০% এর কয়েকটি কম্পানির অফার আছে। আমি মনে প্রাণে তাদের কাছ থেকে বাইকই আশা করেছিলাম এবং নিয়ত করেছিলাম চেক নিতে হলে একদম শেষমেষ নিব, রিস্ক এড়ানোর জন্য। সাথে এ নিয়তও করেছিলাম কোন কারণে যদি বাজার মূল্য (এম.আর.পি.) চেক রিফান্ড নিতে হয়, তাহলে সে টাকা দিয়ে আমি নিজে বাজার থেকে বাইক কিনে তারপর তা বিক্রি করে দিবো, যাতে সুদ এর সম্ভাবনা না থাকে (আমি তখন জানতাম না যে এভাবে অনির্দিষ্ট সময়- ৫/৬/৭ মাস পরে অনির্দিষ্ট মূল্যের- ১২,২৫,০০০/- টাকার স্থলে ১১,৬৫,০০০/- টাকার চেক নেয়া সুদ হবে)আমি গত ০১/১২/২০২০ ঈসায়ী তারিখে বাইকগুলির জন্য ছাড় মূল্যে অর্থাৎ ডিস্কাউন্টেড মূল্য হিসেবে ৭,২৯,০০০/- টাকা পরিশোধ করি। উল্লেখ্য তখন বাইক তিনটির এম.আর.পি. মূল্য দেখানো ছিলো ১২,২৫,০০০/- টাকা।

আমি যে বাইকগুলি অর্ডার করেছিলাম সেই বাইকগুলি ইভ্যালি শর্ত মোতাবেক মেয়াদ পার হয়ে যাবার পর ও দিতে না পারায় ছাড়কৃত মূল্যের পরিবর্তে আসল বাজারমূ্ল্যে গত ফেব্রুয়ারি’২১ মাসে আমাকে এম.আর.পি. হিসেবে  ১২,২৫,০০০/- টাকার স্থলে ১১,৬৫,০০০/- টাকার চেক দিয়েছে যা আমি তাদের দেয়া তারিখ মত ১৫/০৪/২১ এবং ২১/০৪/২১ ঈসায়ী তারিখে এপ্রিল’২১ মাসে ক্যাশ করেছি। ক্যাশ করার আগে আগে আরেক ভাই এর ফেসবুক পোস্ট থেকে জানতে পারি ছাড়কৃত মূল্যের পরিবর্তে বর্তমান বাজারমূ্ল্যে চেক গ্রহণ করা কখনো জায়েয হবে না। হয়তো ঐ মূল্য গ্রহণ করতে  হবে, যা তাকে ক্রয়ের সময়ে দেয়া হয়েছিলো অথবা সালামকৃত পণ্য গ্রহণ করতে হবে।

আমার জানতে চাওয়ার বিষয় হচ্ছে-

১। উপরে বর্ণিত অবস্থায় ডিস্কাউন্টেড মূল্য পরিশোধ করে স্টক না থাকার শর্তে এবং ইভ্যালির ইচ্ছায় আসল বাজারমূ্ল্যে চেক নেয়া সঠিক আছে কিনা? ইসলামি শরিয়তের দলিলে তা যায়েজ কিনা? এ অতিরিক্ত টাকাটা সুদ বলে গন্য হবে কি? যেহেতু আগে জানতাম না তাই নিয়ত করেছি এভাবে আর চেক নিব না।

আমি কি তাদের এ টাকা দিয়েই আমার চুক্তিকৃত বাইক বা বাজারে স্টক না থাকার শর্তে একই মুল্যের বা কাছাকাছি কম বেশী মূল্যের অন্য বাইক নিজে নিজেই কিনে নিতে পারি?

ক্রমিক নং ৩ এর প্রস্তাব জায়েজ না হলে আমি যদি গৃহীত চেকের সমমূল্য টাকাটা শরিয়তের এই সীমাবদ্ধতার কথা বলে ইভ্যালি ম্যানেজমেন্টকে ফিরিয়ে দেই এবং তাদেরকে বাইক কিনে দিতে বলি আর তারা যদি সে টাকা গ্রহণ করে তাদেরই প্রতিনিধি দিয়ে বাজার থেকে বাইক কিনে দেয় সেই বাইক আমার নেয়া যায়েজ কিনা? আর যদি চুক্তিকৃত বাইক বাজারে না থাকে তবে একই মুল্যের বা কাছাকাছি কম বেশী মূল্যের অন্য বাইক বা অন্য কোন মাল নেয়া যায়েজ হবে কিনা ?

৪। আর যদি ক্রমিক নং ৩ ও ৪ আমার জন্য যায়েজ না হয় তাহলে কি আমি মূল টাকা ৭,২৯,০০০/- নিজের কাছে রেখে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা ১১,৬৫,০০০- ৭,২৯,০০০ = ৪,৩৬,০০০/- টাকা আমার গরীব আত্নীয় স্বজনকে দিয়ে দিতে পারি? যদি না পারি অন্য কোন কোন ক্ষেত্রে তা খরচ করা যাবে? যদি দিয়ে দেই তাহলে যাকাত হিসেবেও কি অতিরিক্ত ৪,৩৬,০০০/- টাকার উপর আমাকে যাকাত দিতে হবে?

৫। যদি উপরের কোনটিই যায়েজ না হয় তাহলে এখন আমার কি করনীয়? দয়া করে জানাবেন। সমস্যাটি আমার মত আরো অনেকেরই। জানালে তাদেরকে জানাতে পারতাম। আল্লাহ পাক আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।

 

 

(মো. আবু কায়সার)

৫৯ দক্ষিণ বেগুনবাড়ি,

সাতরাস্তা, তেজগাঁও শিল্প এলাকা

০১৭৩০৩৩৫৩৯৫

*Emails are not allowed*

by
। ক্রমিক নং ৩ এর প্রস্তাব জায়েজ না হলে আমি যদি গৃহীত চেকের সমমূল্য টাকাটা শরিয়তের এই সীমাবদ্ধতার কথা বলে ইভ্যালি ম্যানেজমেন্টকে ফিরিয়ে দেই এবং তাদেরকে বাইক কিনে দিতে বলি আর তারা যদি সে টাকা গ্রহণ করে তাদেরই প্রতিনিধি দিয়ে বাজার থেকে বাইক কিনে দেয় সেই বাইক আমার নেয়া যায়েজ কিনা? আর যদি চুক্তিকৃত বাইক বাজারে না থাকে তবে একই মুল্যের বা কাছাকাছি কম বেশী মূল্যের অন্য বাইক বা অন্য কোন মাল নেয়া যায়েজ হবে কিনা ?

1 Answer

0 votes
by (589,620 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি প্রথমে টাকা দিচ্ছেন।১/২মাস পর প্রডাক্ট হাতে পাবেন।এটার নাম হল,বয়ে সালাম।অর্থাৎ টাকা আগে দেওয়া এবং মাল পরবর্তীতে হস্তগত হওয়া।বয়ে সালাম জায়েয।
أما إذا كان المبيع مما ينضبط بالوصف ، ويغلب على الظن وجوده في وقت التسليم ، فتبايعا على أن يوفر له المبيع في موعده ، فهذا هو بيع السلم ، وهو جائز بالكتاب والسنة وعلى ذلك عامة علماء المسلمين .

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا تَدَايَنْتُمْ بِدَيْنٍ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى فَاكْتُبُوهُ
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋনের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না।(সূরা বাকারা-২৮২)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : " قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ وَهُمْ يُسْلِفُونَ بِالتَّمْرِ السَّنَتَيْنِ وَالثَّلاَثَ، فَقَالَ: ( مَنْ أَسْلَفَ فِي شَيْءٍ، فَفِي كَيْلٍ مَعْلُومٍ، وَوَزْنٍ مَعْلُومٍ، إِلَى أَجَلٍ مَعْلُومٍ)
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী ফলে দু’ ও তিন বছরের মেয়াদি সালাম ব্যবসা করত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন ব্যক্তি সালাম ব্যবসা করলে সে যেন নির্দিষ্ট মাপে এবং নির্দিষ্ট ওজনে নির্দিষ্ট মেয়াদে সালাম করে।(সহীহ বোখারী-২২৪০,সহীহ মুসলিম-৪২০২)

ইবনে হজর মক্কী রাহ বলেন,
"واتفق العلماء على مشروعيته إلا ما حكي عن ابن المسيب "
ইবনুল মুসাইয়্যিব রাহ ব্যতীত সমস্ত উলামায়ে কেরাম, বয়ে সালাম জায়েয হওয়ার বিষয়ে একমত।(ফাতহুল বারী-৭/৭৬)

পশ্নে উল্লিখিত সূরত হল,ক্রয়বিক্রয়ের প্রসিদ্ধ পদ্ধতি ব'য়ে সালাম।তথা মূল্যকে পূর্বে দিয়ে দেয়া।এবং পরবর্তীতে মালকে হস্তগত করা।এ পদ্ধতির ক্রয়বিক্রয় শরীয়তে অনুমোদিত।(ফাতাওয়া মাহমুদিয়্যাহ-বয়ে সালাম-১৬/২০৯)

সুতরাং এভাবে ব্যবসা করা যাবে। এবং অগ্রীম মূল্য গ্রহণ করা যাবে।এভাবে অগ্রীম মূল্য গ্রহণ করলে  গ্রহণকারী সে মূল্যর মালিক হয়ে যাবে।উক্ত গৃহীত মূল্য দ্বারা যদি কোনো অবৈধ কাজ করা হয়,তাহলে সেই অবৈধ কাজের দায়ভার সেই গ্রহীতা বিক্রেতা ব্যক্তির-ই হবে।ক্রেতা বা মূল্যদান কারী ব্যক্তির এতে কোনো গোনাহ হবে না। ইভ্যালি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1536

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি ইভ্যালি বা এ জাতীয় সংস্থা থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারেন।তবে পণ্য আপনার হস্তগত হওয়ার পূর্বে সেই পণ্যকে ভিন্ন কোথাও বিক্রি করতে পারবেন না।এবং পণ্য গ্রহণ না করে,পণ্যর বাজার মূল্যর চেক গ্রহণ করতেও পারবেন না,কেননা সেটা সুদ হয়ে যাবে। আপনি ইভ্যালি থেকে হয়তো পণ্য গ্রহণ করবেন, অথবা বায়ে সালাম চুক্তিকে শেষ করে তার কাছ থেকে আপনার মূল টাকা গ্রহণ করে নিবেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
যেহেতু অতিরিক্ত কিছু কখনো গ্রহণ করে থাকলে, তা ফিরিয়ে দিতে হয় বা সদকাহ করতে হয়, আপনি উক্ত টাকা ইভ্যালি কে ফিরিয়ে দিবেন, বা সদকাহ করে দিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,620 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...