আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
998 views
in পবিত্রতা (Purity) by (106 points)
closed by
ওযু সম্পর্কিত প্রশ্ন
১। ওযুতে কোনো অঙ্গ ১ বার আবার একই ওযুতে অপর অঙ্গ ২বার বা ৩ বার ধৌত করলে ওযু হবে?
২। ওযুতে কান মাসেহ করতে হয় কি?
৩। সলাত ব্যতীত অন্য কারণে বা এমনিতেই ওযু করলে ( যেমন রাতে ঘুমানোর পূর্বে) ওযুর পর কালিমা শাহাদাত ও ওযু শেষের দু'আ পড়া যাবে?
৪। বিসমিল্লাহ না বললে ওযু হয় না?
closed

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
অযুর ফরজ চারটি।
সুরা মায়েদার ০৬ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا قُمۡتُمۡ اِلَی الصَّلٰوۃِ فَاغۡسِلُوۡا وُجُوۡهَکُمۡ وَ اَیۡدِیَکُمۡ اِلَی الۡمَرَافِقِ وَ امۡسَحُوۡا بِرُءُوۡسِکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ اِلَی الۡکَعۡبَیۡنِ ؕ
হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতে দন্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
এই চারটি ফরজ যদি একবার করেও আদায় করা হয়,  তাহলেও অযু হয়ে যাবে।
তবে তিন বার করে ধৌত করা সুন্নাত। 
তাই কেহ যদি শুধু একবার করে ধৌত করে,তাহলে যদিও তার অযু হয়ে যাবে,তবে সুন্নাতের খেলাফ হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأُوَيْسِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَزِيدَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ".

হুমরান (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি ‘উসমান ইবনু আফফান (রাযি.)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। অতঃপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমন্ডল তিনবার ধুয়ে এবং দু’হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর মাথা মাসেহ করলেন। অতঃপর দুই পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। পরে বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম উযূ করবে, অতঃপর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পূর্বের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ১৬০, ১৬৪, ১৯৩৪, ৬৪৩৩; মুসলিম ২/৩, হাঃ ২২৬, আহমাদ ৪৯৩, ৫১৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৬১)

অযুর পদ্ধতি সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

 (০২)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  অযুর ভিতর কানের লতির বাহ্যিক অংশ পর্যন্ত পানি পৌছানো ফরজ। 
মুখমন্ডলের পরিসীমা হলো  কপালের চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ এবং উভয় কানের লতি পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।
একবার ধোয়া ফরয, তিন বার ধোয়া সুন্নাত।
(ইমদাদুল আহকাম  ১/৩৬৬) 

আরো জানুনঃ

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
অযুতে কান মাসাহ করা সুন্নাত।


(০৩)
হ্যাঁ পড়া যাবে।
এতে হাদীসে বর্ণিত ফজিলত পাওয়া যাবে।  

হাদীস শরীফে আছে যে অজুর শেষে কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে।

أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

বাংলা উচ্চারণ– আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহূ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। 

{সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৯৯১২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৬৯, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৭১৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৩৪, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৬০৭৪}

আরো জানুনঃ 

(০৪)
অযুর শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম পড়া সুন্নাত।
কেহ যদি বিসমিল্লাহ না বলে অযু করে,তাহলে তার অযু হয়ে যাবে। 
তবে সুন্নাত আদায় হবেনা।      

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَبِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْعَقَدِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَرْمَلَةَ، عَنْ أَبِي ثِفَالٍ الْمُرِّيِّ، عَنْ رَبَاحِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ بْنِ حُوَيْطِبٍ، عَنْ جَدَّتِهِ، عَنْ أَبِيهَا، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ "
রাবাহ ইবনু আবদির রহমান ইবনি আবী সুফিয়ান ইবনি হুআইত্বিব হতে তার দাদীর সূত্রে, তিনি তার পিতার (সাঈদ ইবনুযায়িদ) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি (সাঈদ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলেনি তার ওযু হয়নি। 
-হাসান। তিরমিজি ২৫. ইবনু মাজাহ– (৩৯৯)

অজু করার শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ার কথা হাদীসে এসেছে। {আবু দাউদ-১/১৪, তিরমিজী-১/১৩, কিতাবুল আজকার-২/২}
,
এই হাদীস গুলোর ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেন যে তার অযু সুন্নাতের খেলাফ হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ হয়নি।
,
তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে অযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া ফরজ,সুতরাং তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।          


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...