ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) সিজদারত অবস্থায় পুরুষদের দু’পায়ে স্বাভাবিক ফাঁক বজায় থাকবে ।
(২)জামাত হয়ে যাওয়ার পর মুনফারিদের জন্য মসজিদে আযান ইকামত দ্বারা নামায পড়া মাকরুহ। জামাতের পূর্বে উচ্ছস্বরে মাকরুহ।(আহসানুল ফাতাওয়া২/২৭৯)
মসজিদে একাকি কা'যা নামাযের জন্য আযান ইকামত প্রচলিত নয়।(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম৪/২৪৭)বিস্তারিত জানুন-১৭২৫
মহল্লার মসজিদে আযান-ইকামত হওয়ার পরও আপনি নিজ গৃহে নামায পড়তে চাইলে আযান-ইকামত দিতে পারবেন।এবং দেয়াই মুস্তাহাব। বুঝদ্বার নাবালক থাকলে সেই ইকামত দিবে। নতুবা যিনি ইমামতি করছেন তিনিই দিবেন।মহিলারা ইকামত দিবেনা এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।তবে নামাযে গায়রে মাহরাম কেউ না থাকলে মহিলাদের নিম্নস্বরে ইকামতের ব্যাপারে কেউ কেউ রুখসত দিয়ে থাকেন।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/৪৬৩)কিন্তু মহিলা কখনো আযান দিতে পারবেন না।কেননা আযান উচ্ছস্বরে দিতে হয়।সর্বোত্তম হল,যিনি আযান দিবেন,তিনিই ইকামত দিবেন।একজন আযান দিবেন,আর অন্যজন ইকামত দিবেন,এমনটা করলে মাকরুহে তানযিহি হয়ে যায়।একই ব্যক্তি আযান ইকামত এবং ইমামতি সবকিছুই করতে পারেন।এতে কোনো সমস্যা নেই। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/5284
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বাসায় একা একা নামায পড়ার সময়ে আযান ইকামত দেওয়া যাবে। মসজিদে জামাত শেষ হয়ে যাওয়ার পর আযান ইকামত দেওয়া মাকরুহ। চায় মসজিদে মুসল্লি থাকুক বা না থাকুক। উচ্ছস্বরের নামাযগুলোকে একাকী অবস্থায় উচ্ছস্বরে ও নিম্নস্বরে উভয়ভাবেই পড়া যাবে।
(৩)
আউযু বিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ্ যেহেতু ক্বেরাতের সুন্নাত।তাই যার যিম্মায় ক্বেরাত রয়েছে,অর্থাৎ কুরআন তেলাওয়াত কারী চায় ইমাম হোক বা মুনফারিদ(একাকী নামায আদায় কারী)তিনিই একমাত্র আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ্ পড়বেন।
এবং পড়াই সুন্নাত।
আল্লাম কা'সানি রাহ লিখেন,
ان التعوذ سنة للقراءة فيأتي به كل قارئ للقرآن .....لا يأتي به المقتدي
আউযুবিল্লাহ ক্বেরাতের সুন্নত। সুতরাং ক্বারী সাহেবগণই একমাত্র পড়বেন।মুক্বতাদি পড়বেন না।
(আল-বাহরুর রায়েক্ব-১/৩১১)
আউযু বিল্লাহ শুধুমাত্র প্রথম রাকাতে পড়া সুন্নত।
আর নামাযের প্রত্যেক রা'কাতে সূরায়ে ফাতেহার পূর্বে নিম্নস্বরে বিসমিল্লাহ্ পড়া সুন্নত।এবং সূরায়ে ফাতেহার পর সূরা মিলানোর পূর্বে বিসমিল্লাহ্ পড়া উত্তম।অবশ্য এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে।তবে সুন্নত না হওয়ার উপর সবাই-ই একমত।(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৫১,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১৭২)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/5645
(৪)
নামাযে কেরাত সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- ৩৪৫।
প্রথম রা'কাতে সূরা ফিল তেলাওয়াতের পর,দ্বিতীয় রা'কাতে সূরা কুরাইশ তেলাওয়াত করতে হবে।ইচ্ছাকৃত এক সূরা মধ্যখানে ছেড়ে দিয়ে পরবর্তী সূরা তেলাওয়াত মাকরুহ।এবং প্রথম রা'কাতে যে সূরা তেলাওয়াত করা হয়েছে,দ্বিতীয় রা'কাতে এর পূর্বের সূরা তেলাওয়াত করা মাকরুহ।ফরয নফল সকল নামাযের ক্ষেত্রে বিধান সমান নয়।বরং ফরয নামাযের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব।কিন্তু নফল নামাযের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব নয়।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
প্রমাণ
وَيُكْرَهُ الْفَصْلُ بِسُورَةٍ قَصِيرَةٍ وَأَنْ يَقْرَأَ مَنْكُوسًا إلَّا إذَا خَتَمَ فَيَقْرَأُ مِنْ الْبَقَرَةِ. وَفِي الْقُنْيَةِ قَرَأَ فِي الْأُولَى الْكَافِرُونَ وَفِي الثَّانِيَةِ – أَلَمْ تَرَ – أَوْ – تَبَّتْ – ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ وَقِيلَ يَقْطَعُ وَيَبْدَأُ،
وقال ابن عابدين الشامى رح: (قَوْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ) أَفَادَ أَنَّ التَّنْكِيسَ أَوْ الْفَصْلَ بِالْقَصِيرَةِ إنَّمَا يُكْرَهُ إذَا كَانَ عَنْ قَصْدٍ، فَلَوْ سَهْوًا فَلَا كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع القراءت مطلقا-2/269)
قَرَأَ فِي الْأُولَى – {قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ} [الناس: 1]- أَعَادَهَا فِي الثَّانِيَةِ إنْ لَمْ يَخْتِمْ نَهْرٌ لِأَنَّ التَّكْرَارَ أَهْوَنُ مِنْ الْقِرَاءَةِ مَنْكُوسًا بَزَّازِيَّةٌ، (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة-2/268)
(৫)
ফরজ নামাজ একাকী পড়ার সময় নামাজের মাঝখখানে যদি কেউ ভুলবশত জোড়ে তাকবীর না দিয়ে এক বা অধিক তাকবীর আস্তে আস্তে দেয়, এবং খেয়াল হওয়ার পর বাকি তাকবীর জোড়ে আদায় করে নামাজ শেষ করে, তাহলে এক্ষেত্রে নাময আদায় হয়ে যাবে।