আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
344 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (10 points)
আসসালামুআ'লাইকুম।
ভারতের শিয়া একজন কোরআনের কিছু আয়াত বাতিল করতে আদালতে  রিট করেছে।
তার ধারনা এই আয়াতগুলো  আবু বকর (রা:) উমার (রা), উসমান (রা:) কুরআনে সংযুক্ত করেছেন।
আমি নিউজ পড়তে গিয়ে ব্যক্তিকে কাফির বলে ফেলেছি।
আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছি কাফির বলার কারনে।
যেহেতু কুফরি কাজ করলে একজন মুসলিমকে কাফির আখ্যা দেওয়া যায় না।
এখন আমার কি করনীয়?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


রাসূল সাঃ হাদীসে মুসলমান হওয়ার পরিচয় দিয়েছেন। 
عن أنس بن مالك قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( من صلى صلاتنا واستقبل قبلتنا وأكل ذبيحتنا فذلك المسلم 

অনুবাদ-হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি আমাদের মত নামায পড়ে, আমাদের কিবলাকেই কিবলা নির্ধারণ করে, এবং আমাদের জবাইকৃত পশু খায়, সে মুসলমান। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩৮৪} অন্য হাদীসে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন।

صلوا على كل ميت من أهل القبلة

অর্থাৎ তোমরা আহলে কিবলার উপর জানাযা নামায পড়বে। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৯} প্রথম হাদীসটিতে তিনটি বিষয়কে যদিও মৌলিকভাবে মুসলমানিত্বের প্রমাণবাহী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় হাদীসে আহলে কিবলা তথা আমাদের কিবলা নির্ধারণ করলেই তাকে মুসলমান ধর্তব্য করে জানাযা পড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখানে প্রশ্ন হল আমাদের কিবলাকে কিবলা নির্ধারণ করা তথা আহলে কিবলা হওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য কি? শুধু কিবলাকে নিজের কিবলা মনে করে সকল প্রকার গুমরাহী আক্বিদা রাখলেও ব্যক্তি মুসলমান থাকবে? বিষয়টি আসলে এমন নয়। একথার ব্যাখ্যা আছে। আহলে কিবলা বলতে কি অর্থ? ফুক্বাহায়ে কেরাম এর ব্যাখ্যা করেছেন।

মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহুর ফিক্বহুল আকবারে “আহলে কিবলা” এর ব্যাখ্যায় লিখেন-

اعلم ان المراد باهل القبلة الذين اتفقوا على ما هو من ضروريات الدين كحدوث العالم وحشر الاجاد وعلم الله تعالى بالكليات والجزئيات وما اشبه ذلك من المسائل المهمات، فمن واذب طول عمره على الطاعات والعبادات مع اعتقاد قدم العالم ونفى الحشر او نفى علمه سبحانه وتعالى بالجزئيات لا يكون من اهل القبلة، وان المراد بعدم تكفير احد من اهل القبلة عند اهل السنة انه لا يكفر احد ما لم يوجد شيئ من امارات الكفر وعلاماته، ولم يصدر عنه شيئ من موجباته، (شرح الفقه الاكبر-189

ভাল করে জেনে রাখ যে, আহলে কিবলা দ্বারা উদ্দেশ্য হল ঐ ব্যক্তি, যে ঐ সকল আক্বিদাকে মান্য করে, যা দ্বীনের আবশ্যকীয় বিষয়। যেমন পৃথিবী সৃজিত বস্তু, কিয়ামত, হাশর-নশর, আল্লাহ তাআলার ইলম সমস্ত দেখা অদেখা বস্তুর উপর বিস্তৃত। এমন ধরণের অন্যান্য আক্বিদা। যে ব্যক্তি সারা জীবন ইবাদত বন্দেগীতে কাটায়, কিন্তু এর সাথে পৃথিবী সৃজিত নয় বরং প্রাকৃতিক বলে বিশ্বাস করে, কিংবা কিয়ামতে মানুষের জীবিত হওয়াকে বা অথবা আল্লাহ তাআলার ইলম বিস্তৃত হওয়াকে অস্বিকার করে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি আহলে কেবলার অন্তুভূক্ত নয়। আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতে আহলে কেবলাকে কাফের না বলার দ্বারা উদ্দেশ্য এটাই যে, এসব ব্যক্তিদের মাঝে কাউকে ততক্ষণ পর্যন্ত কাফের বলা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের থেকে এমন কোন কাজ সংঘটিত হয় যা কুফরীর আলামত বা কুফরকে আবশ্যক করে। (শরহুল ফিক্বহিল আকবার-১৮৯} 

কাফের বলা হয়ঃ
ইসলাম ধর্মের আবশ্যকীয় কোন একটি বিশ্বাসকে অস্বিকার করার নাম কুফরী। শুধু কালিমা পড়ে, তারপর রাসূল সাঃ এর আখলাক ও জীবনাচারকে অমান্য ও অবজ্ঞা করলেও কেউ মুসলমান থাকতে পারে না। যেমনটি আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দিয়েছেন-

فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا [٤:٦٥


অতএব,তোমার পালনকর্তার কসম,সে লোক ঈমানদার হবে না,যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হৃষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।{সূরা নিসা-৬৫} সুতরাং বুঝা গেল যে, কাফের ঐ ব্যক্তি যে জরূরিয়্যাতে দ্বীনের মধ্য থেকে সর্বনিম্ন যে কোন একটি বিষয়কে অস্বিকার করে। বেশি করলে যে কাফের তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি মহান আল্লাহ তায়ালার কুরআনের আয়াতকে অস্বীকার করেছে,তাহা মহান আল্লাহ তায়ালার আয়াত বলে মানেনা,সুতরাং সে ব্যাক্তি স্পষ্ট কাফের।
এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
আপনি যে তাকে কাফের বলেছেন,এটি ঠিক আছে।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...