আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,034 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
১. মসজিদে কি কথা বলা হারাম? অনেক মসজিদে এটা লেখা থাকে।

২.মসজিদে কি হাতের আংগুল ফুটানো যাবে? অনেক সময় মনের অজান্তে হাতের আংগুল ফুটাই ফেলি।

৩.আবু দাউদ ৫৬২ নং হাদিসে আংগুল একত্রিত করা বলতে কি বুঝায়সে?
باب مَا جَاءَ فِي الْهَدْىِ فِي الْمَشْىِ إِلَى الصَّلاَةِ

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، أَنَّ عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ عَمْرٍو، حَدَّثَهُمْ عَنْ دَاوُدَ بْنِ قَيْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعْدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، حَدَّثَنِي أَبُو ثُمَامَةَ الْحَنَّاطُ، أَنَّ كَعْبَ بْنَ عُجْرَةَ، أَدْرَكَهُ وَهُوَ يُرِيدُ الْمَسْجِدَ أَدْرَكَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ قَالَ فَوَجَدَنِي وَأَنَا مُشَبِّكٌ بِيَدَىَّ فَنَهَانِي عَنْ ذَلِكَ وَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِذَا تَوَضَّأَ أَحَدُكُمْ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ خَرَجَ عَامِدًا إِلَى الْمَسْجِدِ فَلاَ يُشَبِّكَنَّ يَدَيْهِ فَإِنَّهُ فِي صَلاَةٍ ‏"‏ ‏.‏

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান মতে কোনো দীনি কাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার পর প্রসঙ্গক্রমে দুনিয়াবি কোনো বৈধ কথাবার্তা বলা জায়েয। এর বৈধতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।

মসজিদ তৈরির উদ্দেশ্য সালাত আদায়, আল্লাহর যিকির, দীনের আলোচনা ইত্যাদি। মসজিদের বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
إِنَّمَا هِىَ لِذِكْرِ اللَّهِ وَالصَّلاَةِ وَقِرَاءَةِ الْقُرْآنِ
‘‘এগুলো শুধু আল্লাহর যিকর, সালাত ও কুরআন তিলাওয়াতের জন্য’’
মুসলিম, আস-সহীহ ১/২৩৬।

মসজিদের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয় করতে এবং হারানো বা পলাতক কিছু খোঁজ করতে, উচ্চস্বরে কথা বলতে বা চিৎকার করতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে।
বুখারী, আস-সহীহ ১/১৭৯; মুসলিম, আস-সহীহ ১/৩৯৭; তিরমিযী, আস-সুনান ৩/৬১০; ইবনু খুযাইমা, আস-সহীহ ২/২৭৪; হাকিম, আল-মুসতাদরাক ২/৬৫; বাইহাকী, আস-সুনানুল কুবরা ২/৪৪৭।

এ ছাড়া সাধারণ জাগতিক কথাবার্তা বলার কোনো সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা কোনো সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয় নি। সাহাবীগণ মসজিদের মধ্যেই কবিতা পাঠ করতেন, জাহিলী যুগের গল্প-কাহিনী আলোচনা করতেন। জাবির (রা) বলেন:

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ إِذَا صَلَّى الْفَجْرَ جَلَسَ فِي مُصَلاَّهُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَيَتَحَدَّثُ أَصْحَابُهُ وَيَذْكُرُونَ حَدِيثَ الْجَاهِلِيَّةِ وَيُنْشِدُونَ الشِّعْرَ وَيَضْحَكُونَ وَيَتَبَسَّمُ ﷺ.

‘‘রাসূলুল্লাহ ﷺ যে স্থানে ফজরের সালাত আদায় করতেন সেখানে সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে থাকতেন। সূর্যোদয়ের পরে তিনি উঠতেন। তাঁর বসা অবস্থায় সাহাবীগণ কথাবার্তা বলতেন, জাহেলী যুগের কথা আলোচনা করতেন, কবিতা পাঠ করতেন এবং হাসতেন। আর তিনি শুধু মুচকি হাসতেন।’
সহীহ মুসলিম ১/৪৬৩, নং ৬৭০, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ১/৪০৪, ৬/৫১।

একটি বানোয়াট হাদীস পেশ করা হয়ঃ

مَنْ تَكَلَّمَ بِكَلاَمِ الدُّنْيَا فِيْ الْمَسْجِدِ أَحْبَطَ اللهُ أَعْمَالَهُ أَرْبَعِيْنَ سَنَةً
‘‘যে ব্যক্তি মসজিদের মধ্যে ‘দুনিয়াবী কথা’ বলবে, আল্লাহ তার চল্লিশ বছরের আমল বাতিল বা বরবাদ করে দিবেন।’’
আল্লামা সাগানী, তাহির পাটনী, মোল্লা আলী কারী, আজলূনী প্রমুখ মুহাদ্দিস একবাক্যে হাদীসটিকে জাল বলেছেন। মোল্লা কারী বলেন: ‘‘এ কথাটি যেমন সনদগতভাবে বাতিল, তেমনি এর অর্থও বাতিল’’
সাগানী, আল-মাউদূ‘আত, পৃ ৩৯; তাহির পাটনী, তাযকিরাতুল মাউদূ‘আত, পৃ ৩৬; মোল্লা কারী, আল-আসরার পৃ. ২২৭; আল-মাসনূ, পৃ. ১৪৭; শাওকানী, আল-ফাওয়াইদ ১/৪৪।

اَلْكَلاَمُ فِيْ الْمَسْجِدِ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ
‘‘মসজিদে কথাবার্তা নেক আমল খায়, যেরূপ আগুন কাঠ খায়।’’
কোনো কোনো প্রসিদ্ধ আলিম জনশ্রুতির উপর নির্ভর করে এ বাক্যটিকে হাদীস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আল্লামা ইরাকী, ফাইরোযআবাদী, তাহির পাটনী, মোল্লা আলী কারী ও অন্যান্য সকল মুহাদ্দিস একমত যে, এ বাক্যটি বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও সনদহীন একটি কথা যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নামে বলা হয়েছে।
তাহির পাটনী, তাযকিরাতুল মাউদূ‘আত, পৃ. ৩৬; মোল্লা আলী কারী, আল-আসরার, পৃ. ১১৩; আল-মাসনূ, পৃ. ৬৩; শাওকানী, আল-ফাওয়াইদ ১/৪৪।
মসজিদে কেউ প্রথমবার দুনিয়াবী কথা বললে ফিরিশতারা বলেন, হে আল্লাহর বন্ধু ‘আপনি’ চুপ করুন। আবার দুনিয়াবী কথা বললে ফিরিশতারা বলেন, হে আল্লাহর বান্দা ‘তুমি’ চুপ কর। তৃতীয়বার কথা বললে ফিরিশতারা বলেন, হে আল্লাহর দুশমন‘তুই’ চুপ কর।’’

★এই হাদীস গুলোর কোনো ভিত্তি নেই।
,
(০২)

শরীয়তের বিধান হলো নামাজ অবস্থায় আঙুল ফোটানো মাকরুহে তাহরিমি । আর নামাজের বাইরে মসজিদে অযথা আঙুল ফোটানো মাকরুহে তানযিহি । (আল বাহরুর রায়েক : ২/৩৬, রদ্দুল মুহতার : ২/৪৯৩)

বিস্তারিত জানুনঃ   
,
(০৩)
উল্লেখিত হাদীসে মসজিদে  আঙ্গুল ফোটানো এবং তার নিকটতম হওয়া থেকে নিষেধ করা উদ্দেশ্য। 
,
 حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، أَنَّ عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ عَمْرٍو، حَدَّثَهُمْ عَنْ دَاوُدَ بْنِ قَيْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعْدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، حَدَّثَنِي أَبُو ثُمَامَةَ الْحَنَّاطُ، أَنَّ كَعْبَ بْنَ عُجْرَةَ، أَدْرَكَهُ وَهُوَ يُرِيدُ الْمَسْجِدَ أَدْرَكَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ قَالَ فَوَجَدَنِي وَأَنَا مُشَبِّكٌ بِيَدَىَّ فَنَهَانِي عَنْ ذَلِكَ وَقَالَ إِنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا تَوَضَّأَ أَحَدُكُمْ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ خَرَجَ عَامِدًا إِلَى الْمَسْجِدِ فَلَا يُشَبِّكَنَّ يَدَيْهِ فَإِنَّهُ فِي صَلَاةٍ " .

আবূ সুমামাহ আল-হান্নাত সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি মাসজিদে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে কা’ব ইবনু ‘উজরাহর (রাঃ) সাথে তার সাক্ষাত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে আমার দু’ হাতের আঙ্গুলসমূহ পরস্পরের মধ্যে ঢুকিয়ে মটকাতে দেখতে পেয়ে আমাকে এরূপ করতে নিষেধ করলেন। তিনি আরো বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ উত্তমরূপে অযু করে মাসজিদের উদ্দেশে বের হলে সে যেন তার দু’ হাতের আঙ্গুল না মটকায়। কেননা সে তখন সলাতের মধ্যেই থাকে (অর্থাৎ ঐ অবস্থায় তাকে সলাত আদায়কারী হিসেবেই গণ্য করা হয়)।
তিরমিযী (অধ্যায়ঃ সালাত, হাঃ ৩৮৬), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ সালাত, ক্বায়িম, অনুঃ সালাতে যা করা অপছন্দনীয়, হাঃ ৯৬৭), দারিমী (১৪০৪), আহমাদ (৪/৩৪১, ৩৪২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...