জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
কুরআনে কারীমের কয়েকটি সূরা জানা থাকলে, প্রত্যেক রা'কাতে পৃথক পৃথক সূরা পড়াই নিয়ম ও উত্তম।কিন্তু কেউ যদি পরপর একাধিক রা'কাতে একই সুরাকে পড়ে নেয়,তাহলে সেটা তার জন্য জায়েয রয়েছে।
عن رجل من جهينة : " سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : يَقْرَأُ فِي الصُّبْحِ ( إِذَا زُلْزِلَتْ الْأَرْضُ ) فِي الرَّكْعَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا ، فَلَا أَدْرِي أَنَسِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمْ قَرَأَ ذَلِكَ عَمْدًا "
রাসূলুল্লাহ সাঃ পরপর দুই রা'কাতে সূরা যিলযাল পড়েছেন।রাবী বলছেন,আমি জানি না, রাসূলুল্লাহ ভুলে পড়েছেন না ইচ্ছাকরে পড়েছেন।(সুনানু আবি-দাউদ-৮১৬)
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো সমস্যা নেই।
,
তবে অন্যান্য সুরা মুখস্ত থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাপূর্বক ভাবে এমনটি কেহ করলে সেটি মাকরুহ তথা অনুত্তম হবে।
۔
ফকীহগণ বলেন, ইচ্ছাকৃত ফরযের উভয় রাকাতে একই সূরা পাঠ করা অনুত্তম হলেও এ ভুলের কারণে সাহু সিজদা দিতে হয় না।
ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৪০; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬৷
۔
আরো জানুনঃ
(০২)
একবার ফরজ নামাজ আদায় করার পর পুনরায় উক্ত ফরজ নামাজ আদায় করলে সেটি নফল নামাজ হবে।
সুতরাং ফজর,আছর নামাজের শেষে যেহেতু নফল নামাজ নেই,
তাই সেই নামাজগুলোর পর পুনরায় উক্ত ফরজ নামাজ আদায় করা জায়েজ নেই।
মাগরিবের নামাজ যেহেতু তিন রাকাত,তাই পুনরায় মাগরীবের নামাজ আদায় কালে তো উক্ত নামাজ নফলই হবে,আর তিন রাকাত যেহেতু নফল হয়না,তাই মাগরীব নামাজের পরেও তাহা জায়েজ নেই।
,
বাকি জোহর,ঈশা নামাজের ক্ষেত্রে পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করা যাবে,তবে সেটি নফল হবে।
,
যেহেতু আপনার জন্য উক্ত নামাজ হবে,তাই এক্ষেত্রে কোনো ফরজ নামাজ আদায় কারীর ইমাম আপনি হতে পারবেননা।
কেননা নফল নামাজ আদায়কারীর পিছনে ফরজ নামাজ আদায় কারীর ইক্তেদা জায়েজ নেই।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার নামাজ হলে সেটি আপনি ইমাম হলে তার নামাজ জায়েজ হবেনা।
আর সে ইমাম হলে তো নামাজ মাকরুহে তাহরিমি হবে।
.
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا يَعْلَى بْنُ عَطَاءٍ، حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ الأَسْوَدِ الْعَامِرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ شَهِدْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَجَّتَهُ فَصَلَّيْتُ مَعَهُ صَلاَةَ الصُّبْحِ فِي مَسْجِدِ الْخَيْفِ . قَالَ فَلَمَّا قَضَى صَلاَتَهُ وَانْحَرَفَ إِذَا هُوَ بِرَجُلَيْنِ فِي أُخْرَى الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّيَا مَعَهُ فَقَالَ " عَلَىَّ بِهِمَا " . فَجِيءَ بِهِمَا تُرْعَدُ فَرَائِصُهُمَا فَقَالَ " مَا مَنَعَكُمَا أَنْ تُصَلِّيَا مَعَنَا " . فَقَالاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا كُنَّا قَدْ صَلَّيْنَا فِي رِحَالِنَا . قَالَ فَلاَ تَفْعَلاَ إِذَا صَلَّيْتُمَا فِي رِحَالِكُمَا ثُمَّ أَتَيْتُمَا مَسْجِدَ جَمَاعَةٍ فَصَلِّيَا مَعَهُمْ فَإِنَّهَا لَكُمَا نَافِلَةٌ "
জাবির ইবনু ইয়াযীদ ইবনু আসওয়াদ (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (ইয়ামীদ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তার বিদায় হাজ্জে উপস্থিত ছিলাম। আমি তার সাথে (মিনায় অবস্থিত) মাসজিদে খাইফে ফযরের নামায আদায় করলাম। নামায শেষ করে তিনি মোড় ফিরলেন। তিনি লোকদের এক প্রান্তে দুই ব্যক্তিকে দেখলেন, তারা তার সাথে নামায আদায় করেনি। তিনি বললেনঃ এদেরকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তাদেরকে নিয়ে আসা হল, (কিন্তু ভয়ে) তাদের ঘাড়ের রগ কাপছিল। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ আমার সাথে নামায আদায় করতে তোমাদের উভয়কে কিসে বাধা দিল? তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা বাড়িতে নামায আদায় করে এসেছি। তিনি বললেনঃ এরূপ আর করবে না। তোমরা বাড়িতে নামায আদায়ের পর যদি মাসজিদে এসে জামা'আত হতে দেখ, তাহলে তাদের সাথে আবার নামায আদায় করবে। এটা তোমাদের উভয়ের জন্য নফল হবে। —সহীহ। তিরমিজি ২১৯,মিশকাত— (১১৫২), সহীহ আবু দাউদ- (৫৯০)।
,
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، - يَعْنِي مَوْلَى مَيْمُونَةَ - قَالَ أَتَيْتُ ابْنَ عُمَرَ عَلَى الْبَلَاطِ وَهُمْ يُصَلُّونَ فَقُلْتُ أَلَا تُصَلِّي مَعَهُمْ قَالَ قَدْ صَلَّيْتُ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لَا تُصَلُّوا صَلَاةً فِي يَوْمٍ مَرَّتَيْنِ " . - حسن صحيح
সুলায়মান ইবনু ইয়াসার অর্থাৎ মায়মূনাহ্ (রাঃ)-এর মুক্ত দাস সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বালাত নামক স্থানে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে দেখা করতে এসে লোকদেরকে সলাত আদায়রত পাই। আমি বললাম, আপনি তাদের সাথে সলাত আদায় করছেন না কেন? তিনি বললেন, আমি ইতিপূর্বে সলাত আদায় করেছি। আমি রসূলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা একদিনে কোন সলাত দু’বার আদায় করো না।
নাসায়ী (অধ্যায়ঃ ইমামাত, অনুঃ মাসজিদে ইমামের সঙ্গে জামা‘আতে সালাত আদায় করলে, হাঃ ৮৫৯), আহমাদ (২/১৯), ইবনু খুযাইমাহ (অনুঃ ফারয সালাতের নিয়্যাত করে পুনরায় সালাত আদায়ে নিষেধ, হাঃ ১৬৪১), বায়হাক্বী ‘সুনানুল কুবরা’ (৬/৩০৩), সকলে হুসাইন ইবনু জাকওয়ান সূত্রে।
(০৩)
হ্যাঁ বাংলায় অর্থটি পড়লেও হবে।
তবে আরবীতে পড়াই উত্তম, ফজিলত পূর্ণ।
,
(০৪)
হ্যাঁ সালাতুত তাসবিহ নামাজ হয়ে যাবে,কোনো সমস্যা নেই।