আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
817 views
in সালাত(Prayer) by (20 points)
edited by
১। নামাজে ২ রাকাতেই সূরা ফাহিতার পর ভুলে একই সূরা পড়ে ফেললে নামাজ হবে? ভুলে পড়ে ফেললে কি সাহু সিদজাহ্ দিতে হবে?

যেমন: প্রথম রাকাআতে সূরা ফাতিহা + সূরা ক্বদর

দ্বিতীয় রাকাআতেও সূরা ফাহিতা + সূরা ক্বদর

২। ফরজ নামাজ ২ বার পড়া যাবে? যেমন আমি যোহরের ৪ রাকাআত ফরজ নামাজ ২ বার পড়লাম। ধরুন, আমি মসজিদে যোহর নামাজ শেষ করে বাসায় আসলাম, এসে দেখলাম আমার স্ত্রী যোহর নামাজ পড়তে যাচ্ছে। তখন আমি আবার যোহর নামাজ পড়তে পারব? আমি ইমামতি করব/নামাজ পড়াবো আমার স্ত্রী আমার সাথে নামাজ পড়বে।

এমনটা করা যাবে?

৩। ইস্তিখারার নামাজ পড়তে চাই। তবে আরবি দোয়াটা পারি না যেটা নামাজ শেষে পড়তে হয়। বাংলায় সেই দোয়ার অর্থটা পড়লে হবে?

৪। সালাতুত-তাসবিহ্ এ বিশেষ দোয়াটি ৩০০ বার পড়তে হয়। ভুল ক্রমে কোনো ধাপে বেশি পড়া হয়ে গেলে মোট আঙ্কটি ৩০০ এর বেশিতে গিয়ে দাঁড়ায়। তাতে কি নামাজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
কুরআনে কারীমের কয়েকটি সূরা জানা থাকলে, প্রত্যেক রা'কাতে পৃথক পৃথক সূরা পড়াই নিয়ম ও উত্তম।কিন্তু কেউ যদি পরপর একাধিক রা'কাতে একই সুরাকে পড়ে নেয়,তাহলে সেটা তার জন্য জায়েয রয়েছে।

 عن رجل من جهينة : " سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : يَقْرَأُ فِي الصُّبْحِ ( إِذَا زُلْزِلَتْ الْأَرْضُ ) فِي الرَّكْعَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا ، فَلَا أَدْرِي أَنَسِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمْ قَرَأَ ذَلِكَ عَمْدًا "

রাসূলুল্লাহ সাঃ পরপর দুই রা'কাতে সূরা যিলযাল পড়েছেন।রাবী বলছেন,আমি জানি না, রাসূলুল্লাহ ভুলে পড়েছেন না ইচ্ছাকরে পড়েছেন।(সুনানু আবি-দাউদ-৮১৬)

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো সমস্যা নেই।
,
তবে অন্যান্য সুরা মুখস্ত থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাপূর্বক ভাবে এমনটি কেহ করলে সেটি মাকরুহ তথা অনুত্তম হবে।
۔
 ফকীহগণ বলেন, ইচ্ছাকৃত ফরযের উভয় রাকাতে একই সূরা পাঠ করা অনুত্তম হলেও এ ভুলের কারণে সাহু সিজদা দিতে হয় না।
ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৪০; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬৷
۔
আরো জানুনঃ 

(০২)
একবার ফরজ নামাজ আদায় করার পর পুনরায় উক্ত ফরজ নামাজ আদায় করলে সেটি নফল নামাজ হবে।
সুতরাং ফজর,আছর নামাজের শেষে যেহেতু নফল নামাজ নেই,
তাই সেই নামাজগুলোর পর পুনরায় উক্ত ফরজ নামাজ আদায় করা জায়েজ নেই।
মাগরিবের নামাজ যেহেতু তিন রাকাত,তাই পুনরায় মাগরীবের নামাজ আদায় কালে তো উক্ত নামাজ নফলই হবে,আর তিন রাকাত যেহেতু নফল হয়না,তাই মাগরীব নামাজের পরেও তাহা জায়েজ নেই।
,
বাকি জোহর,ঈশা নামাজের ক্ষেত্রে পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করা যাবে,তবে সেটি নফল হবে।
,
যেহেতু আপনার জন্য উক্ত নামাজ হবে,তাই এক্ষেত্রে কোনো ফরজ নামাজ আদায় কারীর ইমাম আপনি হতে পারবেননা।
কেননা নফল নামাজ আদায়কারীর পিছনে ফরজ নামাজ আদায় কারীর ইক্তেদা জায়েজ নেই।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার নামাজ হলে সেটি আপনি ইমাম হলে তার নামাজ জায়েজ হবেনা।
আর সে ইমাম হলে তো নামাজ মাকরুহে তাহরিমি হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا يَعْلَى بْنُ عَطَاءٍ، حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ الأَسْوَدِ الْعَامِرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ شَهِدْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَجَّتَهُ فَصَلَّيْتُ مَعَهُ صَلاَةَ الصُّبْحِ فِي مَسْجِدِ الْخَيْفِ . قَالَ فَلَمَّا قَضَى صَلاَتَهُ وَانْحَرَفَ إِذَا هُوَ بِرَجُلَيْنِ فِي أُخْرَى الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّيَا مَعَهُ فَقَالَ " عَلَىَّ بِهِمَا " . فَجِيءَ بِهِمَا تُرْعَدُ فَرَائِصُهُمَا فَقَالَ " مَا مَنَعَكُمَا أَنْ تُصَلِّيَا مَعَنَا " . فَقَالاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا كُنَّا قَدْ صَلَّيْنَا فِي رِحَالِنَا . قَالَ فَلاَ تَفْعَلاَ إِذَا صَلَّيْتُمَا فِي رِحَالِكُمَا ثُمَّ أَتَيْتُمَا مَسْجِدَ جَمَاعَةٍ فَصَلِّيَا مَعَهُمْ فَإِنَّهَا لَكُمَا نَافِلَةٌ "

জাবির ইবনু ইয়াযীদ ইবনু আসওয়াদ (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (ইয়ামীদ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তার বিদায় হাজ্জে উপস্থিত ছিলাম। আমি তার সাথে (মিনায় অবস্থিত) মাসজিদে খাইফে ফযরের নামায আদায় করলাম। নামায শেষ করে তিনি মোড় ফিরলেন। তিনি লোকদের এক প্রান্তে দুই ব্যক্তিকে দেখলেন, তারা তার সাথে নামায আদায় করেনি। তিনি বললেনঃ এদেরকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তাদেরকে নিয়ে আসা হল, (কিন্তু ভয়ে) তাদের ঘাড়ের রগ কাপছিল। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ আমার সাথে নামায আদায় করতে তোমাদের উভয়কে কিসে বাধা দিল? তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা বাড়িতে নামায আদায় করে এসেছি। তিনি বললেনঃ এরূপ আর করবে না। তোমরা বাড়িতে নামায আদায়ের পর যদি মাসজিদে এসে জামা'আত হতে দেখ, তাহলে তাদের সাথে আবার নামায আদায় করবে। এটা তোমাদের উভয়ের জন্য নফল হবে। —সহীহ। তিরমিজি ২১৯,মিশকাত— (১১৫২), সহীহ আবু দাউদ- (৫৯০)।
,
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، - يَعْنِي مَوْلَى مَيْمُونَةَ - قَالَ أَتَيْتُ ابْنَ عُمَرَ عَلَى الْبَلَاطِ وَهُمْ يُصَلُّونَ فَقُلْتُ أَلَا تُصَلِّي مَعَهُمْ قَالَ قَدْ صَلَّيْتُ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لَا تُصَلُّوا صَلَاةً فِي يَوْمٍ مَرَّتَيْنِ " . - حسن صحيح

সুলায়মান ইবনু ইয়াসার অর্থাৎ মায়মূনাহ্ (রাঃ)-এর মুক্ত দাস সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বালাত নামক স্থানে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে দেখা করতে এসে লোকদেরকে সলাত আদায়রত পাই। আমি বললাম, আপনি তাদের সাথে সলাত আদায় করছেন না কেন? তিনি বললেন, আমি ইতিপূর্বে সলাত আদায় করেছি। আমি রসূলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা একদিনে কোন সলাত দু’বার আদায় করো না।

নাসায়ী (অধ্যায়ঃ ইমামাত, অনুঃ মাসজিদে ইমামের সঙ্গে জামা‘আতে সালাত আদায় করলে, হাঃ ৮৫৯), আহমাদ (২/১৯), ইবনু খুযাইমাহ (অনুঃ ফারয সালাতের নিয়্যাত করে পুনরায় সালাত আদায়ে নিষেধ, হাঃ ১৬৪১), বায়হাক্বী ‘সুনানুল কুবরা’ (৬/৩০৩), সকলে হুসাইন ইবনু জাকওয়ান সূত্রে।

(০৩)
হ্যাঁ বাংলায় অর্থটি পড়লেও হবে।
তবে আরবীতে পড়াই উত্তম, ফজিলত পূর্ণ। 
,
(০৪)
হ্যাঁ সালাতুত তাসবিহ  নামাজ হয়ে যাবে,কোনো সমস্যা নেই।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...