আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
433 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (29 points)
১/আমি জেনেছি যে যা বেশী নেশা তৈরী করে তা অল্পপরিমাণ ও হারাম,এখন যে ঔষুদ আমরা খায় তাতে যদি অল্প পরিমাণ মদ দেয় তা ও হারাম হবে,কারণ ইবনে মাজাহ হাদীস অনুযায়ী?

২/নবী বলেছেন যে হালাল হারামের মাঝখানে সন্দেহজনক জিনিস আছে তা হতে বেঁচে থাকো,তাহলে ঔষুধে মদ দিতে ও পারে নাও দিতে পারে এখন কি করবো?

৩/মদকে সির্কা করলে তা হালাল হবে,এতে কি সাহাবীরা আমল করেছিল?

৪/ফিকহরা বলেন যে পূর্ণ ভাবে না জেনে সন্দেহ করলে তা হারাম হবে না,কিন্তু নবী বলেছে সন্দেহজনক বস্তু ও হতে বেঁচে থাকতে,এখন কি করবো?

৫/যে জিনিস বেশী হারাম তা অল্প ও হারাম এখন ওষধে মদ দিলে তো তাও হারাম যদি ও তা নেশা তৈরী না করুক।কারণ ইবনে মাজাহ হাদীস অনুসারে,

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ عَبْدِ اللّٰهِ بْنِ عَمْرٍو : أَنَّ النَّبِىِّ ﷺ نَهٰى عَنْ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَالْكُوبَةِ وَالْغُبَيْرَاءِ وَقَالَ : «كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ». رَوَاهُ أَبُوْ دَاودَ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদ, জুয়া, কূবাহ্ (দাবা) ও গুবায়রা (গম হতে প্রস্তুতকৃত মদ) থেকে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেনঃ নেশা আনয়নকারী প্রত্যেক জিনিসই হারাম।
সহীহ : আবূ দাঊদ ৩৬৮৫, আহমাদ ৬৪৭৮। 

নিহায়াহ্ গ্রন্থে বলা হয়েছে, পাশা বা দাবা খেলা অথবা তবলা ও সারিন্দা ইত্যাদি বাজানো হারাম। আর الْغُبَيْرَاءِ ‘গুবায়রা’ হলো এক প্রকার মদ যা হাবশার লোকেরা ভুট্টা থেকে তৈরি করে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
,
وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَجُلًا قَدِمَ مِنَ الْيَمَنِ فَسَأَلَ النَّبِىَّ ﷺ عَنْ شَرَابٍ يَشْرَبُوْنَه بِأَرْضِهِمْ مِنَ الذُّرَةِ يُقَالُ لَهُ الْمِزْرُ فَقَالَ النَّبِىُّ ﷺ : «أوَ مُسْكِرٌ هُوَ؟» قَالَ : نَعَمْ قَالَ : «كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ إِنَّ عَلَى اللّٰهِ عَهْدًا لِمَنْ يَشْرَبُ الْمُسْكِرَ أَنْ يَسْقِيَه مِنْ طِينَةِ الْخَبَالِ». قَالُوا : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! وَمَا طِينَةُ الْخَبَالِ؟ قَالَ : «عَرَقُ أَهْلِ النَّارِ أَوْ عُصَارَةُ أَهْلِ النَّارِ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ইয়ামান থেকে জনৈক ব্যক্তি এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ‘জোয়ার’ হতে প্রস্তুতকৃত মদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করল, যা ‘মিয্র’ বলে পরিচিত তাদের দেশে পান করা হয়। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তা কি নেশা উদ্রেক করে? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, নেশা উদ্রেককারী এমন প্রত্যেক জিনিসই হারাম। আর আল্লাহ তা‘আলার ওয়া‘দাহ্ হলো, যে ব্যক্তি কোনো নেশা সৃষ্টিকারী জিনিস পান করবে, তিনি তাকে ‘ত্বীনাতুল খবাল’ পান করাবেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন : হে আল্লাহর রসূল! ‘ত্বীনাতুল খবাল’ কি জিনিস? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা জাহান্নামীদের শরীরের ঘাম অথবা বলেছেন, জাহান্নামীদের রক্ত ও পুঁজ। 
সহীহ : মুসলিম ২০০২, নাসায়ী ৫৭০৯, আহমাদ ১৪৮৮০, সহীহ আল জামি‘ ৪৫৫১।
,
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ الْحِزَامِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو يَحْيَى، زَكَرِيَّا بْنُ مَنْظُورٍ عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ وَمَا أَسْكَرَ كَثِيرُهُ فَقَلِيلُهُ حَرَامٌ " .

আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন নেশা উদ্রেককর জিনিস হারাম। আর যে জিনিসের অধিক পরিমাণ নেশা সৃষ্টি করে, তার সামান্য পরিমাণও হারাম।

মুসলিম ৩৭৩৩, ৩৭৩৪, ৩৭৩৫, তিরমিযি ১৮৬১, আহমাদ ৪৬৩০, ৪৮১৫, ৪৮৪৮, ৫৬১৬, ৫৬৯৭, ৫৭৮৬, ৬১৪৪, ৬১৮৩, ইরওয়া ২৩৭৩, ২৩৭৫।
,
শাইখ আব্দুল্লাহ্ বিন কুয়ুদ, শাইখ আব্দুল্লাহ্ বিন গাদইয়ান, শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আফিফি, শাইখ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ্ বিন বায” প্রমুখ বলেনঃ
যে জিনিস বেশি পান করলে মাতলামি ধরে সেটাই মদ। এ জিনিসের অল্প বা বেশি বিধান সমান। এটাকে এলকোহল বলা হোক কিংবা অন্য কোন নাম দেয়া হোক। আবশ্যকীয় কর্তব্য হচ্ছে– এটা ঢেলে ফেলে দেয়া। নানাবিধ কাজে যেমন– ড্রেসিং করা, শোধন করা, জ্বালানি পদার্থ, পারফিউম তৈরী কিংবা ভিনগারে রূপান্তরিত করণ ইত্যাদি কাজে লাগানোর জন্য এটি রেখে দেওয়া হারাম।
আর যে পদার্থ বেশি পান করলেও মাতলামি ধরে না– সেটা মদ নয়। সে পদার্থ পারফিউম তৈরীতে, ঔষধ হিসেবে, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা জায়েয।
,
বিশেষ কোন প্রতিষ্ঠান যদি ঔষধের সাথে এলকোহল কিংবা হারাম জিলাটিন মিশিয়ে থাকে তাহলে সে প্রতিষ্ঠান এর জন্য গুনাহগার হবে; যেমনটি ইতিপূর্বেও আমরা উল্লেখ করেছি। এরপর ঔষধটি পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি এতে মিশ্রিত পদার্থের পরিমাণ এত কম হয় যে, এ ঔষধ বেশি পরিমানে সেবন করলেও মাতলামি ধরবে না কিংবা মিশ্রিত পদার্থটি পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যায়; এর স্বাদ, রঙ কিংবা গন্ধ কোনটির চিহ্ণ না পাওয়া যায়– এমন ঔষধ সেবন করা ও এটা দিয়ে চিকিৎসা করা জায়েয আছে।
,
★★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
যদি কোনো ঔষধে মদের ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়,তাহলে তো সেটি সেবন জায়েজ নেই।
(মদের ব্যবহার আছে কিনা,জানার জন্য ঔষধ টির উপাদান কি কি,সেটি দেখতে হবে।)
           
,
আর যদি সন্দেহ হয়,তাহলে তাহা সেবন হারাম হবেনা,তবে মুমিনদের জন্য তা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। 
,
ইসলামী স্কলার গন হারাম বস্তু দ্বারাও চিকিৎসা করার অনুমতি দিয়েছেন।
শর্ত হলোঃ 
 যদি বৈধ বস্তু দিয়ে তৈরি কোনো বিকল্প কোনো ওষুধ না থাকে এবং কোনো মুসলিম চিকিৎসক সুস্থতা অর্জনের বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করে থাকে। তাহলে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হারাম বস্তু দ্বারা চিকিৎসা জায়েজ আছে।
সুতরাং এহেন ছুরতে মদ মিশ্রিত ঔষধ দ্বারাও চিকিৎসা জায়েজ আছে।
যদি এ শর্ত গুলো পাওয়া যায়।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...