আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
655 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

হুজুর,


১) এই প্রথম ব্যবসা করতে চাচ্ছি,তাই পরামর্শ চাচ্ছি । ব্যবসার মূলনীতি গুলো জানালে ভাল হয়।

২) আর আমি যদি খেদমতের নিয়তে বিভিন্ন জায়গায় ইসলামিক বই বিক্রি করে তাহলে বইয়ের মূল্য বেশি কম হওয়ার ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন কমিশনে বই বিক্রি করা যাবে কিনা।

যেমন- * গায়ের রেট ১০০ থেকে ২০০ টাকার ক্ষেত্রে ২০% কমিশন, ২০০ থেকে ৩০০ টাকার ক্ষেত্রে ৩০%, এবং ৩০০ টাকা থেকে উপরের দিকে মুল্যের জন্য ৪০% কমিশন ইত্যাদি। মানে আমি এভারেজ এ একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ লভ্যাংশ টারগেট করেছি। সমস্যা আছে কিনা এতে!

৩) আমি যেই  ছাত্রকে পড়াই তার বাবা মা যদি বীমার কাজ করে ইনকাম করে, আর এটা জানা সত্ত্বেও আমার জন্য সেখানের ইনকাম জায়েজ কিনা, আর জায়েজ না হলে অপারগতাবশত আপাতত চালিয়ে যেতে পারব কিনা অন্য টিউশন না পাওয়া পর্যন্ত। জানালে ভাল হয়।


জাজাক আল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (559,410 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
ব্যবসার ক্ষেত্রে মৌলিকভাবে ইসলামের দু’টি মূলনীতি রয়েছে।

এক- ব্যবসায়িক পণ্য, উপাদান ও কায়কারবারগুলো বৈধ হতে হবে। অবৈধ পণ্যের ব্যবসা ও অবৈধ কায়কারবারকে ইসলাম বৈধতা দেয় না। যেমন, মদ, জুয়া, সুদ, ঘুষ ইত্যাদির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হওয়া ইসলামে অনুমোদন নেই। কারণ, এসব বিষয়কে ইসলামে মৌলিকভাবেই হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং আপনার ব্যবসার সাথে এসবের সংমিশ্রণ আপনার ব্যবসাকে কলুষিত করে।

দুই- ব্যবসা-বাণিজ্য সকল অবস্থায় বৈধ পন্থায় হতে হবে। অর্থাৎ সেখানে কোনো ধরনের ধোঁকাবাজি, ভেজাল ও ফাঁক-ফোকর থাকতে পারবে না। কোনো ধরনের মিথ্যার আশ্রয় থাকতে পারবে না। 

কারো ক্ষতি যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিদ্ধান্ত দেন যে,
«أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَضَى أَنْ لَا ضَرَرَ وَلَا ضِرَارَ».
“নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যের ক্ষতি করা কোনোটিই উচিত নয়”।
ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ২৩৪১

ধোঁকা, প্রতারণা ও ফাঁকিবাজি করা যাবে না।
,
মন্দ জিনিস ভালো বলে চালিয়ে দেওয়া, ভালোর সঙ্গে মন্দের মিশ্রণ ঘটিয়ে ধোঁকা দেওয়া ইত্যাদি সম্পূর্ণ হারাম। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى صُبْرَةِ طَعَامٍ فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِيهَا، فَنَالَتْ أَصَابِعُهُ بَلَلًا فَقَالَ: «مَا هَذَا يَا صَاحِبَ الطَّعَامِ؟» قَالَ أَصَابَتْهُ السَّمَاءُ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: «أَفَلَا جَعَلْتَهُ فَوْقَ الطَّعَامِ كَيْ يَرَاهُ النَّاسُ، مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّي».

“একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাজারে গিয়ে একজন খাদ্য বিক্রেতার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তিনি খাদ্যের ভিতরে হাত প্রবেশ করে দেখলেন ভিতরের খাদ্যগুলো ভিজা বা নিম্নমান। এ অবস্থা দেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে খাবারের পন্যের মালিক এটা কী? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, এতে বৃষ্টি পড়েছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সেটাকে খাবারের উপরে রাখলে না কেন; যাতে লোকেরা দেখতে পেত? “যে ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মত নয়”।
 সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০২

অন্যকে দেওয়ার সময় ওজনে কম দেওয়া জঘন্য অপরাধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَيۡلٞ لِّلۡمُطَفِّفِينَ ١ ٱلَّذِينَ إِذَا ٱكۡتَالُواْ عَلَى ٱلنَّاسِ يَسۡتَوۡفُونَ ٢ وَإِذَا كَالُوهُمۡ أَو وَّزَنُوهُمۡ يُخۡسِرُونَ ٣﴾ [المطففين: ١، ٣]
“ধ্বংস যারা পরিমাপে কম দেয় তাদের জন্য। যারা লোকদের কাছ থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে। আর যখন তাদেরকে মেপে দেয় অথবা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়”। [সূরা আল-মুতাফফিফীন, আয়াত: ১-৩]

(০২)
ব্যবসায় কি পরিমান লাভ করা যায়?

ইসলামী শরীয়তে এর কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই, বরং যেকোনো জিনিষ উভয়ের সন্তুষ্টিতে যেকোনো মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। ক্রয়-বিক্রয়ে আমাদেরকে অবশ্যই দুটি দিক খেয়ালে রাখতে হবে।

*প্রথমতঃউভয়ের সন্তুষ্টি আছে কি না।
*দ্বিতীয়তঃকারো উপর জুলুম হচ্ছে কি না।
,
বিস্তারিত জানুনঃ
,
★সুতরাং তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত দুটি বিষয় লক্ষ্য রেখে পন্যের মূল্য যথাসম্ভব  বাড়িয়ে দেওয়া যাবে।  
বইয়ের মূল্য বেশি কম হওয়ার ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন কমিশনে বই বিক্রি করা যাবে।
,

(০৩)
যদি তাদের বেশির ভাগ ইনকামই হারাম হয়,তাহলে আপনার এ ইনকাম জায়েজ নেই। 
আর বেশির ভাগ হালাল হলে আপনার ইনকাম জায়েজ আছে।  
,
আরো জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...