আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
48 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম।

এক বোনের বিয়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ বছর। তার স্বামী বিয়ের আগে গয়রে মাহরামদের সাথে কলে,ম্যাসেজে সবসময় কথা বলতো,এমনকি তাদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় দেখাও করতো, গিয়ে আড্ডা দিতো।

বোনটা বিয়ের পর এসব জানার পর স্বামীর অতীত জীবনের বিষয়ে কোনো কথাই তুলেনি,খোঁচাও দেয়নি, কটাক্ষও করেনি।শুধু বলেছিলো আপনার অতীত নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই।আপনি যদি বর্তমানে এবং ভবিষ্যৎ এ নিজেকে হিফাজত রাখতে পারেন তাহলেই আমার হলো।( বোনটা নিজেকে সবসময় হিফাজত রেখেছিলো একজনের জন্যই।নিজের ইজ্জত আব্রু,ভালোবাসা সবকিছু একজনের জন্যই হিফাজত করে রেখেছিলো। জীবনসঙ্গী এমন পায়নি তারপরেও বোনটা তাকে ভালোবেসে সংসার করে গিয়েছে,তার অতীত নিয়ে ভাবেনি,তার প্রতি অবহেলাও করেনি কোনোদিন)।

এই সাড়ে ৩ বছরেও সে শুধড়ায়নি আসলে।সে স্ত্রী থালা স্বত্তেও গয়রে মাহরামদের সাথে ফোনে কথা বলা,ম্যাসেজে কথা বলা চালিয়েই গিয়েছে। ধরা পড়ার পর স্ত্রী থাকতে চায়নাই,ছাড়াছাড়ি করতে চেয়েছে।তারপর স্বামী মাফ চায়, আর কখনও করবেনা বলার পর স্ত্রী মাফ করে দেয়।তারপর মাঝে দেড় বছর কিছুই ছিলোনা। স্ত্রীও ভেবেছিলো সে হিদায়াতের পথে ফিরে এসেছে তাই আবার স্ত্রী বিশ্বাস করে সংসার করতে থাকে।তারপর দেড় বছর পর আরেকটা মেয়ের সাথে ধরা পড়ে।এবারও স্ত্রী এসবের জন্য থাকতে চায়নাই।চলে যেতে চেয়েছিলো।সে আবারও মাফ চেয়েছে,ওয়াদা দিয়েছে আর করবেনা।

তারপর খুব কষ্টে,অনেক বেশি যন্ত্রণা নিয়ে আবারও বিশ্বাস করেছে।কিন্তু এই যে বারবার একই কাজের পুনরাবৃত্তি হওয়ার কারনে স্ত্রীর প্যানিক এ্যাটাকের সমস্যা হয়ে গিয়েছে।তারপরেও সে সংসার করে,তবে স্বামীর প্রতি ভালোবাসা, টান সব অনেকটাই কমে গিয়েছে।কিন্তু সে স্বামীকে বুঝতে দেয়নাই। সব হক্ব পূরণ করে গিয়েছে।এরপর আবারও প্রায় ৭ মাস হলো একটা মেয়ের সাথে ধরা পড়লো।এই মেয়ের সাথেও ফোনে কথা বলে,ম্যাসেজে কথা রাতের ২/৩ টা পর্যন্ত।

স্বামী ভরনপোষণের সব দ্বায়িত্ব পালন করে কিন্তু স্ত্রী কে সময় দেয়না।স্ত্রীর বরাদ্দ সময় সে ওই মেয়েকে দেয় আর ফোনে এমনিই ইউটিউব, ফেসবুকে ব্যয় করে।

লাস্টবার ধরা পড়ার পর স্ত্রীর মন থেকে একেবারেই স্বামীর প্রতি ভালোবাসা,টান,মুহাব্বাত উঠে গিয়েছে।এখম তার দিকে তাকালে, তার কথা ভাবলে কেমন যেনো ঘৃনাবোধ আসে মনে।সে সন্তানও চায়না কোনোভাবে, এই দিক দিয়েও সে হক্ব নষ্ট করতেসে সবভাবেই।সন্তানের কথা বললে নানান বাহানা দেয়, পরে সময় হলে নিবে বা পরিকল্পনা করবে এসব বলে টালবাহানা করে।

এখন প্রশ্ন হলো, স্ত্রী যদি তালাক চায় স্বামীর থেকে তাহলে কি আল্লাহ নারাজ হবেন? বা বিচ্ছেদ হলে কি আল্লাহ সন্তুষ্ট থাকবেন? স্ত্রী কোনোভাবেই এই সংসারে থাকতে পারছেনা। তার যখনই মনে হয় যে তার স্বামী গয়রে মাহরামের জন্য তার হক্ব নষ্ট করছে তখনই তার প্যানিক এ্যাটাক হয়।শারীরিক, মানসিক সবদিক দিয়েই সে অনেক বেশি অসুস্থবোধ করে।এমতাবস্থায় স্ত্রীর আসলে কি করা দরকার অনুগ্রহ করে বলবেন। সে অনেক ধৈর্য ধরেছে কিন্তু এইবারের পর আর পারছেনা ধৈর্য ধরতে।প্রায় ১ মাস ধরে নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করেও সে আর মেনে নিতে পারছেনা এসব।এবার তার স্বামী অনুতপ্তও না বা এসব নিয়ে মাফও চায়নাই। বরং আক্রমণ করে অনেক কথা বলেছে।

1 Answer

0 votes
by (639,720 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া কোন মহিলা তার স্বামী থেকে তালাক চাওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ্।

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِيْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ ؛ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْـجَنَّةِ.

‘‘যে কোন মহিলা কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া নিজ স্বামীর নিকট তালাক চাইলো তার উপর জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে’’। (আবূ দাউদ ২২২৬; তিরমিযী ১১৮৭; ইব্নু মাজাহ্ ২০৫৫)

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, যেসব কারণে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে তা হলোঃ-

★যদি কোনো বাস্তবসম্মত কারণে উভয়ের পক্ষে একসঙ্গে বসবাস করাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে তাহলে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে।

★যদি স্বামীর মাঝে দৈহিক এমন ত্রুটি থাকে, যার কারণে দাম্পত্যজীবনের স্বাভাবিকতা খুবই দুরূহ হয়ে যায়। যেমন—পাগল হওয়া, যৌন অক্ষম হওয়া, কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হওয়া। 
বলা বাহুল্য, স্বামীর মাঝে উক্ত ত্রুটিগুলো থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে ভালোভাবে রাখা সম্ভব নয়।

★স্বামী স্ত্রীর আবশ্যকীয় জরুরত তথা ভরণ-পোষণ দিতে অক্ষম হলে। কেননা, এটা স্ত্রীর মৌলিক অধিকার। 

★শরিয়ত নির্দেশিত কারণ ছাড়া স্বামী স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া বা জুলুম করা।

এটা শারীরিকভাবেও হতে এবং মানসিকভাবে হতে পারে। যেমন—স্ত্রীকে মারধর করা, গালাগাল করা, স্ত্রীকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে দেখা সাক্ষাতে বাধা প্রদান করা, বেপর্দা কিংবা হারাম কাজে স্ত্রীকে জোরপূর্বক বাধ্য করা। 

★স্বামীর মধ্যে দ্বিনদারির প্রতি অবহেলা চরম পর্যায়ের হলে। যেমন—নামাজ না পড়া, মদ পান করা, পরকীয়া কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হওয়া। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি স্ত্রী তালাক চায়,সেক্ষেত্রে এটি জায়েজ হবে।
এতে আল্লাহ তায়ালা তার উপর নারাজ হবেননা।

এক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্য করনীয় সম্পর্কে জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...