3 দিনের আগে কুরআন খতম করা কি হারাম??

Question

1. জনাব, তিন দিনের আগে কোরআন খতম করা কি হারাম। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, যে ব্যক্তি সর্বনিম্ন তিন দিনের আগে খতম করে সে কুরআনের কিছুই  বুঝেনা। এটা কি প্রমাণ করে যে, তিন দিনের আগে কুরআন খতম করা আগে হারাম।

2. জনাব, আমরা তো সাধারন মানুষ আমাদেরকে কুরআনের বাংলা অর্থ বুঝতে হলে অনেক সময় প্রয়োজন।  একমাস দূরের কথা  ছয় মাসে শেষ করতে পারবো কিনা সন্দেহ। কারণ  আলেমদের মতও আমরা কুরআনের অর্থ বুঝতে পারি না।

3. এখন জনাব,  কেউ যদি   নেকির  উদ্দেশ্যে কুরআন  খতম করতে চাই 3 দিনের আগেই তাহলে কি তা হারাম হবে।সে সারা দিনরাত পরল অর্থাৎ তার দ্বারা al-quran তিন দিনের আগেই শেষ করা সম্ভব। মানে এক রাতেই।  তাহলে কি এটা হারাম।  বাংলা অর্থ ছাড়া শুধু আরবি পড়া এটা তিন দিন হলে কি বা একদিন হলে কি?( খতম এর উদ্দেশ্যে)।

4. এমন কোন   সহিহ হাদিস  দাঁড়া প্রমাণিত হয়েছে কি  যে এটা হারাম । তিন দিন আগে কোরআন  খতম করা উচিত নয়। al-quran আস্তে আস্তে পড়াই ভালো।  কিন্তু  তারমানে এটা কি হারাম হয়ে যায়।( আরবি শুধু আরবি)

5. তাছাড়া, হযরত মুহাম্মদ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, কি স্পষ্ট  ভাবে বলেছেন কি এটা হারাম।         
6.অবশ্যই "হারাম" আর "উচিত নয় "এরমধ্য পার্থক্য আছে। কোন কিছু উচিত নয়  বলে তা কি হারাম।
7. জনাব তা ছাড়া দেখা যায়  অনেক বড় বড় লোকেরা মানে আল্লাহর বড় বড় ওলী তারপর মানে বুজুর্গরা আরো অনেক বড় বড় আলেমরাও দিনে অনেকবার কোরআন খতম করতও।
জনাব আমি জানতে চাই কোনটা সঠিক। মানে  এটা  কি আসলেই  হারাম কিনা।

Answer 1

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ- 

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ: " «لَمْ يَفْقَهْ مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فِي أَقَلَّ مِنْ ثَلَاثٍ» " رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ، وَأَبُو دَاوُدَ، وَالدَّارِمِيُّ.

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি তিন দিনের কম সময়ে কোরআন পড়লো, সে কুরআন বুঝেনি।

(সুনানু তিরমিযি-২৯৪৯, সুনানু আবি-দাউদ-১৩৯০, সুনানু ইবনি মা'জা-১৩৪৭,মিশকাত-২২০১)

উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় মিশকাতের টিকায় আহমদ আলী সাহরানপুরী (হানাফি) রাহ লিখেন,জনসাধারণের জন্য তিন দিনের কম কুরআন খতম করা মাকরুহে তানযিহি ( অপছন্দনীয়) । এবং ৪০দিনের ভিতর কুরআন খতম না দেয়া মাকরুহে তানযিহি।(মিশকাতুল মাসাবিহ-হিন্দি নুসখা)

ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻭﺭﺩ ﺍﻟﻨﻬﻲ ﻋﻦ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﻓﻲ ﺃﻗﻞ ﻣﻦ ﺛﻼﺙ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﺪﺍﻭﻣﺔ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ، ﻓﺄﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻷﻭﻗﺎﺕ ﺍﻟﻤﻔﻀﻠﺔ ﻛﺸﻬﺮ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺧﺼﻮﺻﺎً ﺍﻟﻠﻴﺎﻟﻲ ﺍﻟﺘﻲ ﻳﻄﻠﺐ ﻓﻴﻬﺎ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻘﺪﺭ ، ﺃﻭ ﻓﻲ ﺍﻷﻣﺎﻛﻦ ﺍﻟﻤﻔﻀﻠﺔ ﻛﻤﻜﺔ ﻟﻤﻦ ﺩﺧﻠﻬﺎ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺃﻫﻠﻬﺎ ﻓﻴﺴﺘﺤﺐ ﺍﻹﻛﺜﺎﺭ ﻓﻴﻬﺎ ﻣﻦ ﺗﻼﻭﺓ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﺍﻏﺘﻨﺎﻣﺎً ﻟﻠﺰﻣﺎﻥ ﻭﺍﻟﻤﻜﺎﻥ ، ﻭﻫﻮ ﻗﻮﻝ ﺃﺣﻤﺪ ﻭﺇﺳﺤﺎﻕ ﻭﻏﻴﺮﻫﻤﺎ ﻣﻦ ﺍﻷﺋﻤﺔ ، ﻭﻋﻠﻴﻪ ﻳﺪﻝ ﻋﻤﻞ ﻏﻴﺮﻫﻢ ﻛﻤﺎ ﺳﺒﻖ ﺫﻛﺮﻩ .

" ﻟﻄﺎﺋﻒ ﺍﻟﻤﻌﺎﺭﻑ " ( ﺹ 171 ) .

মর্মার্থ- অনেক বুজুর্গানে কেরাম তিন দিনের কম সময়েও সারা কুরআনকে খতম দিয়েছেন বলে বর্ণনায় পাওয়া যায়, এটা মূলত বিশেষ বিশেষ দিনে বুজুর্গানে কেরাম করেছেন। অর্থাৎ এমন দিনে বা রাত্রে যখন বেশী বেশী ইবাদত করা মুস্তাহাব। সাধারণত তিনদিনের কম সময়ে কুরআন খতম না হওয়াই কাম্য । এবং চল্লিশ দিনের বেশী কুরআনে খতম ছাড়া অতিবাহিত করা মাকরুহ। এখানে বিধান হারাম নয়। হ্যা প্রয়োজনে চল্লিশ দিনের বেশী সময় ধরেও কুরআন খতম দেওয়া যাবে।জায়েয রয়েছে।

আপনি সবগুলো প্রশ্ন প্রায় একই । তাই চিন্তা করলে এখানে সবগুলো্র উত্তর পেয়ে যাবেন।