আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
edited by
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

১।মুরসাল, গারিব হাদিসের হুকুম কি?
২। আলহামদুলিল্লাহ ফজিলতসংক্রান্ত যয়ীফ হাদিস আমাল করা যাবে কিন্তু আমাল করার সময় নিয়্যাত কেমন থাকবে? এটা কে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা ভেবে আমাল করতে হবে? নাকি এভাবে আমাল করতে হবে যে, ইয়া আল্লহ! যদি এটি সত্যি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা হয় তাহলে এর ফজিলত আমাকে দান করুন?

৩। তাকবির তাশরিক পড়তে ভুলে গেলে ও মুসল্লা থেকে উঠে গেলে পরে ওয়াক্তের ভেতর ইয়াদ হওয়ার সাথে সাথে পড়ে ফেললে ওয়াজিব আদায় হবে?

৪। কেউ সলাতের সামনে খাটে শুয়ে থাকা অবস্থায় সলাত আদায় করলে সলাত হবে? তাকবিরে তা

৫। পরিবারের কেউ যদি উনার জিনিস ব্যবহার করার অনুমতি দেন কিন্তু হয়তো অনেক সময় অপছন্দ করেন কিন্তু মুখে কিছু না বলেন তাহলে সেটি ব্যবহার করা জায়িয হবে? যেমন শ্যাম্পু, সাবান ইত্যাদি। ব্যবহার করে ফেললে কি করণীয় ?

৬। আলহামদুলিল্লাহ আমার বাবা-চাচা যৌথ পরিবার। এখন সবাই একসাথে (কেউ বেশি-কেউ কম) টাকা জমা করে কুরবানির জন্য দাদির কাছে টাকা দেন। এখন এটা কি শরিকানা কুরবানী হবে? কুরবানী কি আদায় হবে?

৭। পরিচিত কারও বাসার ওয়াইফাই বিল হারাম টাকায় পরিশোধ করা হলে, আমি যদি তাকে খোঁজ-খবর নেয়া ও শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ম্যাসেজ করি তাহলে হারাম কাজে সহযোগিতা হবে?

জাযাকুমুল্লহু খইরন কাসিরান ফিদ্দারাইন

1 Answer

0 votes
by (631,980 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মুরসাল হাদীসের হুকুম / গ্রহণযোগ্যতা:

উলামায়ে কেরামের মধ্যে এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে:

১. প্রত্যাখ্যান (অগ্রহণযোগ্য):

অনেক মুহাদ্দিস (হাদীস বিশারদ), যেমন ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম, মুরসাল হাদীসকে দুর্বল (ضعيف) গণ্য করেছেন। কারণ, মাঝখানের সাহাবি কে ছিলেন, তা জানা যায় না। যদিও সাহাবিরা সকলেই ন্যায়পরায়ণ, তবু পরের কোনো নাম না থাকায় তা “মুনকাতি” (ছিন্নসংযোগযুক্ত) হয়ে যায়।

২. শর্তসাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য:

ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক ও ইমাম আহমাদ (কোনো বর্ণনায়) বলেছেন, নির্ভরযোগ্য তাবেঈ যদি মুরসাল হাদীস বর্ণনা করেন, এবং তা অন্য দলিল দিয়ে সমর্থিত হয় (যেমন: কিয়াস, ইজমা, বা অন্য সহীহ হাদীস), তবে সেটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে।

৩. পূর্ণ গ্রহণযোগ্য (বিশেষ অবস্থায়):

ইমাম শাফি' বলেছেন, মুরসাল হাদীস তখনই গ্রহণযোগ্য, যদি—

বর্ণনাকারী তাবেঈ বিশ্বস্ত হন,

অন্য কোনো সহীহ বা হাসান হাদীস তা সমর্থন করে।

শর্তসাপেক্ষে ‘মুরসাল’ হাদীছ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যেমন ইমাম শাফেঈ সহ অপরাপর ইমামগণ উল্লেখ করেছেন- ১. রাবী উঁচু স্তরের তাবেঈ হওয়া। ২. রাবী যে রাবীর কাছ থেকে ‘ইরসাল’টি করেছেন তাঁকে ‘ছিক্বাহ’ বা বিশ্বস্ত বলে উল্লেখ করা। ৩. বিশ্বস্ত অন্য কোন রাবী’র বিরোধিতা না থাকা এবং ৪. নিম্নোক্ত চারটি শর্তের যে কোন একটি থাকা- যেমন  (ক) অন্য কোন মুসনাদ সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (খ) অপর কোন মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (গ) ছাহাবীর কওল দ্বারা সমর্থিত হওয়া। অথবা (ঘ) অধিকাংশ বিদ্বানের মতামতের অনুকূলে হওয়া। এ সকল শর্ত পাওয়া গেলেই কেবল মুরসাল হাদীছ দলীল হিসাবে বিবেচিত হতে পারে (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৬/২০৬, তায়সীরু মুছত্বলাহিল হাদীছ পৃঃ ৬০)।

★গরিব হাদীস তিন রকম হতে পারে:

1. গরিব সহীহ হাদীস: এটি গ্রহণযোগ্য।

যদি বর্ণনাকারীরা সব বিশ্বস্ত (ثقة) হন এবং সনদে কোনো বিচ্যুতি না থাকে।

যেমন: সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম-এ অনেক গরিব হাদীস আছে।

2. গরিব হাসান হাদীস: এটি শর্ত সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য।

রাবিরা ন্যায়পরায়ণ, তবে তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল।

3.  গরিব দুর্বল (ضعيف) হাদীস:

যদি রাবিদের মধ্যে কেউ মিথ্যাবাদী, ভুলকারী বা সন্দেহজনক হন।

এর বিধান জয়ীফ হাদীসের মতোই।

(০২)
এটা হাদীস,এই মনে করে আমল করা যাবে।

(০৩)
সুনানে দারাকুতনী'র ১৭৩৪ নং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

عَنْ جَابِرٍ ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ ، عَنْ عَلَيَّ ، وَعَمَّارٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُكَبِّرُ يَوْمَ عَرَفَةَ صَلَاةَ الْغَدَاةِ، وَيَقْطَعُهَا صَلَاةَ الْعَصْرِ آخِرَ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ"

অর্থ: হযরত জাবির, আবুত তুফাইল, হযরত আলী এবং হযরত আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত, নবীয়ে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরাফার দিন তথা নয় জিলহজ্ব ফজর থেকে আইয়ামে তাশরীকের শেষ দিন তথা ১৩ জিলহজ্ব আসর পর্যন্ত ফরজ নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক পাঠ করতেন। (সুনানে দারাকুতনী: ১৭৩৪)

অনুরূপভাবে সুনানে বাইহাকীতে ৬২৭৮ নং বর্ণনায় একই হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে,

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : " كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُكَبِّرُ يَوْمَ عَرَفَةَ صَلَاةَ الْغَدَاةِ إِلَى صَلَاةِ الْعَصْرِ آخِرَ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ 

হযরত জাবির রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবীয়ে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরাফার দিন তথা নয় জিলহজ্ব ফজর থেকে আইয়ামে তাশরীকের শেষ দিন তথা ১৩ জিলহজ্ব আসর পর্যন্ত ফরজ নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক পাঠ করতেন। (সুনানে বাইহাকী: ৬২৭৮)

শরীয়তের বিধান হলো, ফরজ নামাজের পর পরই তাকবীর বলবে, নামাজের সালামের পর নামাজ শুদ্ধ হওয়ার পরিপন্থী কোন কাজ করার পূর্বে তাকবীর বলা ওয়াজিব। 

তাই যদি কেউ তাকবীর না বলে মসজিদ থেকে বের হয়ে যায় অথবা ইচ্ছাকৃত বা ভুলবশত কথা বলে ফেলে, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে ওযু ভেঙ্গে ফেলে, তাহলে তার দায়িত্ব থেকে তাকবীর রহিত হয়ে যাবে পুনরায় পড়লেও ওয়াজিব আদায় হবে না, কিন্তু যদি সালামের পর ভুলবশত ওযু ভেঙ্গে যায় তাহলে ওই অবস্থায় তাকবীর বলবে পবিত্রতা অর্জনের জন্য মসজিদ থেকে বের হতে হবে না। (ফাতওয়ায়ে শামীঃ ৩য় খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা, আল-বাহরুর রায়েকঃ ২য়খন্ড ২৮৮ পৃষ্ঠা)

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সালামের পর নামাজ শুদ্ধ হওয়ার পরিপন্থী কোন কাজ না করে থাকলে মসজিদ থেকে বের না হয়ে থাকলে তাকবির বলা যাবে।

অন্যথায় নয়। এমতাবস্থায় তাকবির বললে ওয়াজিব আদায় হবেনা।

(০৪)
এমতাবস্থায় সালাত হবে।
তবে শুয়ে থাকা ব্যাক্তিত চেহারা নামাজির দিকে থাকলে নামাজ মাকরুহ হবে।

(০৫)
কাহারো সন্তুষ্টি ব্যাতিরেকে এভাবে তার জিনি ব্যবহার করা যাবেনা।
এটা জুলুমের পর্যায়ের।

(০৬)
না,এতে কুরবানী সহীহ হবেনা।

এক্ষেত্রে গরু বা মহিষ ইত্যাদি পশু দিয়ে কুরবানী দিলে সকলের ভাগের টাকা সমান সমান দিতে হবে 

উদাহরণস্বরূপ, গরুর মূল্য ৭০ হাজার টাকা হলে সেখানে ৭ ভাগ হলে সকলে ১০ হাজার টাকাই দিতে হবে। 
কম বেশির সুযোগ নেই।

(০৭)
এক্ষেত্রে হারাম কাজে সহযোগিতা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (631,980 points)
قال في الدر: ولا یکرہ صلاة إلی ظہر قاعد أو قائم ولو یتحدث إلا إذا خیف الغلط بحدیثہ اھ قال الشامی - رحمہ اللہ- تحت قولہ (إلی ظہر قاعد الخ) قید بالظہر احترازا عن الوجہ فانہا تکرہ إلیہ ․․․․․․ وفي شرح المنیة : أفاد بہ نفي قول من قال بالکراہة بحضرة المتحدثین وکذا بحضرة النائمین اھ (ج: ۱/۴۲۲، ط: زکریا) ۔

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...