আসসালামু আলাইকুম।
(১) আগে ছোটতে অনেকসময় অনেকের হক্ক মেরেছি যেমন: চরকিতে চরেছি, পরে বলেছি টাকা দেবো।কিন্তু পরে সেখান থেকে চলে আসায় আর টাকা দেওয়া হয়নি। আবার অনেক সময় স্কুলের দোকান থেকে ভীড়ের মাঝে না বলে একটা দুইটা চকলেট নিয়ে নিয়েছি, মানুষের বাসার টব গাছ চুরি করেছি।
কিন্তু এখন আমি বড় হয়ে হেদায়েত পেয়েছি। এখন তাদের নাম না মনে আছে, আর না চেহারা, দোকান মনে থাকলেও সেখানে যাওয়া আর সম্ভব না, সম্ভব হলেও সেখানে বলা সম্ভন না, কারণ স্কুলের ওটা।
এখন আমার করণীয় কী? আমি কিছুক্ষণ আগে ১০০০ টাকা এই হক্ক মেরে দেওয়ার নিয়তে দান করেছি। যাদের হক্ক মারা হয়েছে তাদের আমলের পাল্লায় যেন চলে যায় আরকি। আর নিয়ত করেছি, যত জানা অজানা মানুষের হক্ক মেরেছি সবার যেন ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়।
(আমি মনে করি আমি যত জনের হক্ক মেরেছি,সেটা এই দানের ১০০০ টাকার সমান বা বেশি হবে না। হলে কম ই হবে। আমার দান করার কাজটি কি ঠিক হয়েছে? আমি কি আখিরাতে ক্ষমা পাব হুজুর?)
(২) আগে অনেকসময় বাবা মার পকেট থেকে টাকা চুরি করে করেছি,না বলে নিয়েছি। নিয়ে বিভিন্ন জিনিস কিনেছি। এখন বড় হয়ে উপলব্ধি করেছি যে ঠিক করেনি। আমি বালেগা ছিলাম সে সময়।
আজ মায়ের কাছে এ নিয়ে ক্ষমা চেয়েছি,সত্য বলে। খুব সম্ভবত তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন।
কিন্তু বাবার কাছে কীভাবে ক্ষমা চাইব? তিনি শুনলে হয়তো আঘাত পাবেন,বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন। অথবা কিছু মনে নাও করতে পারেন। আল্লাহ ভালো জানেন। আমি তার খুব আদরের। আমার কী করণীয়?
(৩)আজ সন্ধ্যাবেলায় আমার মা আমার কাছে এক সংবাদ নিয়ে আসে,আমার পরিবারের এক মহিলার পরকিয়ার। এলাকার মানুষের কাছে শুনেছে নাকি। সেই মহিলা নাকি তার চাচা শশুর না কাকে রুনে ঢোকায় প্রতিদিন তার স্বামী গেলে।পরে তার স্বামীর হাতেনাতে ধরা পরেছে। আর মাইর খেয়েছে অনেক।
তখন আমি বলি এটা সত্যিই হবে হয়তো, কেননা এর আগেও তিনি একবার পরকিয়া করেছিলেন আরেকজনের সাথে,আমি নিজে দেখেছি তাদের ম্যাসেজ। আবার তার যে মেয়ে আছে সেই মেয়ে ও প্রেম করে, সেই মহিলা নিজের মেয়ের ব্যাপারেও জানে। কিছুই বলেনা। পছন্দ হলে বিয়ে দিয়ে দেবে।নিজেই বলছে পছন্দ করে বিয়ে করতে।
কিন্তু হুজুর কিছু মুহূর্ত পর আমি অনুধাবন করতে পারি যে, কার ও সম্পর্কে সঠিক না জেনে শুধুমাত্র এভাবে আজকের নতুন পরকিয়ার কথা বলায় এভাবে হয়তো অপবাদ হয়ে গেল। অথবা সত্য হলে গীবত।
কিন্তু এখন আমার করণীয় কী?
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি গীবত ও অপবাদ এড়াতে কখনোই আর অপ্রয়োজনীয় কথা কার ও সাথে বলব না।
আর এখন মূল কথায় আসা যাক,সেই মহিলার পরকিয়ার কথা যে বললাম আমার নিজের মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে একে অপরকে। তো সেই মহিলার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাওয়া সম্ভব নয় হুজুর কেননা, নইলে পরিবারের মধ্যে অশান্তি হয়ে যাবে ঝগড়া হবে।
এজন্য আমি সেই মহিলার পক্ষ থেকে ১০০০ বার ইস্তিগফার পাঠ করে দিয়েছি। আর সেই মহিলার মেয়ের প্রেমের কথা বলায় সেই মহিলার মেয়ের পক্ষ থেকে ১০০ ইস্তিগফার পাঠ করে দিয়েছি।
আমি কি আখিরাতে ক্ষমা পাব হুজুর? আমি আসলে মানুষের হক্ক এর ব্যাপারে অনেক সচেতন। এগুলো ভুলে হয়ে গেছে। আমি তাদের জন্য ইস্তিগফার পাঠ করেছি আর নিজের জন্য ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছি।
ঠিক হয়েছে কি? আমি আল্লাহর কাছে কি ক্ষমা পাব? আখিরাতে পাকড়াও হবো না তো? আমি ভবিষ্যতে আর ও সতর্ক থাকব ইনশাআল্লাহ যাতে কার ও গীবত বা অপবাদ না হয়।
(৪) ছোটবেলায় অনেক মানুষের গীবত করেছি, অপবাদ(হয়তো) দিয়েছি। আমি যে গীবত করেছি, অপবাদ দিয়েছি, সেটা তারা জানেনা অথবা হয়তো জানে, আসলে হুজুর আমার কিছুই মনে নেই সেভাবে যে কার নামে কী করেছি । এখন বর্তমানে তাদের নাম ও মনে নেই চেহারা ও মনে নেই, এখন যোগাযোগ নেই কেননা আমরা দূরে চলে এসেছি । আর ফেসবুকেও তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। মায়ের ফোনে তাদের কিছু নাম্বার থাকলেও, আমি সিওর না তার/তাদের নামে গীবত করেছি কিনা।
তাদের জন্য এখন কী করব? কতবার তাদের জন্য ইস্তিগফার পাঠ করে দেব? দোয়া করে জানাবেন হুজুর। নাকি নিজের জন্য ইস্তিগফার পাঠ করব।