আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,107 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম জনাব,

একজন বোনের পক্ষ থেকে জানতে চাইছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (জেনারেল) হিসেবে কর্মরত পাত্রের চাকুরী কি হালাল? আমার পিতা আমাকে একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (জেনারেল) হিসেবে কর্মরত পাত্রের সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি মোটেও রাজি নই। আমার বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় তারা আমার কথা শুনতে চাচ্ছে না। আমার করনীয় কি? এছারা ব্যাংক এর পাত্রের বিয়ের প্রস্তাব কি গ্রহন করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/10152নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে,
ব্যাংকের চাকুরি হারাম হওয়ার মূল কারণ দু’টি।যথা-
১-হারাম কাজে সহায়তা করা।
২-হারাম মাল থেকে বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকা।

হারাম কাজের সহায়তার বিভিন্ন স্তর আছে। শরীয়তে সব প্রকার সহায়তা হারাম নয়।বরং সে সব সহায়তাই হারাম যা সরাসরি হারাম কাজের সহিত জড়িত থাকে। যেমন, সুদী লেনদেন করা। সুদী লেনদেন লিখে রাখা। সুদী টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ থেকে উসুল করা, ইত্যাদি ইত্যাদি।

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-
“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়,যে তার সাক্ষী হয়, এবং যে দলিল লিখে রাখে, তাদের সকলের উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন।(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

তবে যদি ব্যাংকের এমন কোনো সেক্টরের কাজ হয়,যাতে  সুদী কাজে জড়িত হতে হয় না।যেমনঃ ড্রাইভার, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়,তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি সুদের সহায়তা নেই তাই এমন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে।

প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে বেতনের উৎস কি হবে?কর্মিবৃন্দকে কোথা থেকে দেওয়া হবে?

তাই বলা যায় যে,
হারাম সংমিশ্রিত মাল থেকে বেতন আদান-প্রদাণের ক্ষেত্রে শরয়ী মূলনীতি হল-
যদি বেতন হালাল-হারাম এর সংমিশ্রিত মাল থেকে দেওয়া হয়, এবং হারাম মালের পরিমাণ অাধিক্য থাকে , তাহলে সেই বেতন গ্রহণ জায়েজ হবে না। তবে যদি হারাম মাল পরিমাণে কম থাকে, তাহলে বেতন গ্রহণ এক্ষেত্রে জায়েজ হবে।

যেমন,জালেম বাদশাহর হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ নয়। কাররণ তার অধিকাংশ মালের উৎস হারাম থেকেই হয়। তবে যদি কারো ব্যাপারে জানা যায় যে, তার অধিকাংশ মাল হালাল, এ হিসেবে যে সে ব্যাবসায়ী বা জমিদার, তাহলে তার থেকে হাদিয়া গ্রহণ জায়েয।এতে কোনো সমস্যা নেই। কেননা সম্পদে হারামের সামান্য সংমিশ্রণ থেকে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।অর্থাৎ অধিকাংশ মানুষের মাল অল্প হারাম থেকে মুক্ত নয়। তাই এতে আধিক্যের বিষয়টি বিবেচিত হবে। { ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২}


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
সুদী কারবারে জড়িত সকল প্রকার চাকুরী হারাম।আর হারাম মাল দ্বারা ভালো কিছু আশা করা যায়।
সুতরাং যথাসম্ভব এমন রিশতায় কখনো রাজি হবেন না।

হ্যা যদি এছাড়া আপনার নিকট আরো কোনো অপশন না থাকে,তাহলে আপনি তার নিকট থেকে শুধুমাত্র শরয়ী ভরণপোষণ নিতে পারবেন।এ ছাড়া আর কিছুই গ্রহণ করতে পারবেন না।এবং গ্রহণ করা জায়েযও হবে না।

https://www.ifatwa.info/2362 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
নাবালক ছেলে সন্তান এবং সকল বয়সের মেয়ে সন্তানের লালনপালনের দায়িত্ব নিকটাত্মীয় মাহরাম পুরুষের উপর।পিতা,ভাই,চাচা ইত্যাদি মাহরাম পুরুষরা ধারাবাহিক মেয়ে সন্তানদের লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এটা তাদের উপর ওয়াজিব।তারা এ দায়িত্ব পালন না করলে গোনাহগার হবে।
ونفقة البنت بالغة والابن بالغا زمنا أو أعمى على الأب خاصة به يفتى 
বালেগ মেয়ে এবং বালেগ পঙ্গু বা অন্ধ ছেলের ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতার উপর।এটার উপরই ফাতাওয়া।(আল-উকুদুদ-দুররিয়া-১/৮২)

যেহেতু স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামীর।সে যেখান থেকেই ভরণপোষণ সংগ্রহ করুক,গোনাহ শুধুমাত্র স্বামীরই হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...