প্রশ্ন ছিল - বাবা মা এক প্রকার জোড় করেই বিয়ে দেয় মেয়ের বয়স থেকে 20 বা তারও বেশি বয়সী লোকের সাথে। মেয়ের বাড়িতে কাবিন বা আকদ হয় কিন্তু কখনো সহবাস এবং বাসর রাত কিছুই হয় নি। কাবিন এর পর থেকে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কখনো দেখা এবং কথা হয় নি। আর স্ত্রী অর্থাৎ মেয়ে তার স্বামীর সংসার করতে রাজি না এবং কোনোদিন স্বামীর বাড়ি যায় নি। একদিন স্বামী তার স্ত্রীর বাড়িতে আসে হুট করে এবং স্ত্রী তা জানতেন না । জানলে স্ত্রী তাদের বাড়ি থেকে তার বোনের বাড়ি চলে জেতেন পালিয়ে। তো স্বামী হুট করে স্ত্রী এর রুম এ ঢুকে পড়ে আর দরজা লাগিয়ে দেয়, আর সেসময় মেয়ে অর্থাৎ স্ত্রী খাবার খাচ্ছিল ডাইনিং টেবিলে বসে, তো দরজা লাগালে স্ত্রী তার স্বামীকে দেখে ফেলে এবং রুম থেকে বের হয়ে যেতে চায়। কিন্তু স্বামী মেয়েকে জোড় জবরদস্তি করে দরজা খুলতে বাধা থাকে আর তাই মেয়ে চিল্লানো শুরু করে এবং গালাগাল দিতে থাকে এবং তাকে বের হতে দিতে বলে বারবার, আর তখন মেয়ের বাড়ির মানুষ দরজা বাইরে উপস্থিত হয়ে ছিলেন, কিন্তু কিছু বলেন নি। তো এভাবে চিল্লানো এবং ধস্তাধস্তির এক পর্যায় স্বামী স্ত্রী কে মারধর করে এবং মেরে তার মুখ দিয়ে রক্ত বের করে দেয় এবং স্ত্রী কোনমতে রুম থেকে বের হয়ে যায়। এবং এর কিছুদিন পর মেয়ের পক্ষ থেকে ডিভোর্স লেটার পাঠালে স্বামী তা গ্রহণ করে এবং সাইন করে তালাক সম্পন্ন করে। এবং স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে ফেলেন।
বলে রাখা ভালো স্বামী ঘরের দরজা লাগানোর সাথে সাথেই স্ত্রী টেবিল এ খাওয়া রেখে বেরিয়ে যেতে চায়, এবং না যেতে দিলে চেঁচামেচি, গালাগাল, মারামারি হয়। স্ত্রী কোনো অবস্থাতেই স্বামীর সাথে থাকতে চায় নি তাই তৎক্ষণাৎ বের হয়ে যেতে চেয়েছিল।
তো হুজুর এখানে, খলওয়াত সহিহা হবে কিনা এবং মেয়ের কি ইদ্দত পালন করা লাগবে কিনা?
আপনার উত্তর ছিল --
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
বিবাহের পর স্বামী স্ত্রী খালওয়াত তথা নির্জন অবস্থায় থাকার পর স্ত্রী নিজেকে স্পর্শ করতে না দিলে, স্বামী যদি তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে কি স্ত্রী পূর্ণ মহরের অধিকারী হবে না অর্ধেক মহর প্রাপ্ত হবে? এ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হল, এক্ষেত্রে স্ত্রী অর্ধেক মহর নিবে।
لما في الهندية ج١،ص:٣٠٥
وَإِنْ خَلَا بِهَا وَلَمْ تُمَكِّنْهُ مِنْ نَفْسِهَا اخْتَلَفَ الْمُتَأَخِّرُونَ فِيهِ قَالَ بَعْضُهُمْ: لَا تَصِحُّ الْخَلْوَةُ وَقَالَ بَعْضُهُمْ تَصِحُّ كَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ
খালওয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/117985
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু স্ত্রী স্বামীকে স্পর্শ করতে দিচ্ছেন না, স্ত্রী অর্ধেক মহরের হকদার হওয়াই যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে। যেহেতু প্রশ্নের বিবরণমতে এই পরিস্থিতিতে সহবাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। তাই ইদ্দতও ওয়াজিব হওয়ার কথা না, তবে সতর্কতামূলক ইদ্দতের সময় পরিমাণ অপেক্ষার পর অন্যত্র বিয়ে বসা উচিত যদিও ওয়াজিব না।
ﺍﺭﺑﻊ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﻻ ﻋﺪﺓ ﻋﻠﻴﻬﻦ ﺍﻟﻤﻄﻠﻘﺔ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺪﺧﻮﻝ، ( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﺍﻟﺒﺎﺏ ﺍﻟﺜﺎﻟﺚ ﻋﺸﺮ ﻓﻰ ﺍﻟﻌﺪﺓ 526\1- )
ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻔﺴﺎﺩ ﺑﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺍﻟﻮﻃﺊ ﺣﻘﻴﻘﺔ ﻻ ﻳﺠﺐ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺍﻟﻌﺪﺓ، ﻭﻛﺬﺍ ﻟﻮ ﻃﻠﻘﻬﺎ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺨﻠﻮﺓ، ( ﺧﺎﻧﻴﺔ ﻋﻠﻰ ﻫﺎﻣﺶ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ 549\1- )
ﻭﺳﺒﺐ ﻭﺟﻮﺑﻬﺎ ﻋﻘﺪ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ ﺍﻟﻤﺘﺄﻛﺪ ﺑﺎﻟﺘﺴﻠﻴﻢ، ﻭﻣﺎ ﺟﺮﻯ ﻣﺠﺮﺍﻩ ﻣﻦ ﻣﻮﺕ ﺃﻭ ﺧﻠﻮﺓ ﺃﻯ ﺻﺤﻴﺤﺔ ( ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ ﻣﻊ ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ 180\5- )
ﺃﻣﺎ ﺳﺒﺐ ﻭﺟﻮﺑﻬﺎ ﻓﻠﻜﻞ ﻧﻮﻉ ﻣﻨﻬﺎ ﺳﺒﺐ، ﺍﻟﺜﺎﻧﻰ ﺍﻟﺪﺧﻮﻝ ﺣﻘﻴﻘﺔ ﺃﻭ ﺣﻜﻤﺎ ( ﺍﻟﺒﺤﺮ ﺍﻟﺮﺍﺋﻖ 216\4- ، ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﺘﺎﺗﺎﺭﺧﺎﻧﻴﺔ 226\5- ، ﺭﻗﻢ 7722- )
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে
এখানে ইদ্দত ওয়াজিব না হলে তালাক এর ১ মাস পর বিয়ে হলে শুদ্ধ হবে? কারণ এখানে ইদ্দত ওয়াজিব নেই দেখে মেয়ের তালাকের ১ মাস পর বিয়ে হয় এবং একটি বাচ্চা হয়। বলে রাখা ভালো যে তালাক এর সময় বলা হয়েছিল যে তালাক সম্পন্ন হলেই বিয়ে করতে পারবে, আর তাই তালাক সম্পন্ন হবার ১ মাস পর বিয়ে হয়। এবং বিয়ের প্রায় ১.৫ বছর পর একটি বাচ্চা হয়। তো হুজুর এক্ষেত্রে বিয়ে টা কি শুদ্ধ হবে?
দয়া করে দ্রুত উত্তর দিলে খুব উপকৃত হই