আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

আমি ইতেকাফে বসতে চাচ্ছিলাম, ভেবেছি ৩০ টা রোজা হবে।হিসেবে  আগের দিন আসরের পর বসতে চাচ্ছিলাম।  এখন সৌদিতে আজ ঈদের চাঁদ দেখা গেছে। তাহলে তো বিকেলে বসতে পারবো না।  এখন আমি কি ফজরের পর নিয়ত করে  সন্ধ্যা পর্যন্ত ইতিকাফ করতে পারব কিনা?
বা এখন আমার করনীয় কি?  দয়া করে জানাবেন। It's urgent.

1 Answer

0 votes
by (607,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইতিকাফ তিন প্রকার :

১. সুন্নত ইতিকাফ।

রমযানের শেষ দশকে একুশ তারিখের রাত [অর্থাৎ ২০ তারিখ সূর্যাস্তের আগ] থেকে ঈদের চাঁদ দেখা পর্যন্ত ইতিকাফ করা।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বছর এ দিনগুলোতে ইতিকাফ করতেন, তাই একে সুন্নত ইতিকাফ বলা হয়।

২. নফল ইতিকাফ।

রমযানের শেষ দশকে পূর্ণ দশ দিনের কম ইতিকাফ করা। অথবা বছরের অন্য যেকোনো সময় যতক্ষণ ইচ্ছা, ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা।

৩. ওয়াজিব ইতিকাফ।

মান্নতকৃত ইতিকাফ এবং সুন্নত ইতিকাফ ফাসেদ হয়ে গেলে তার কাযা আদায় করা।

হাদীস শরীফে এসেছে-

أن النبيَّ صلى الله عليه وسلم كان يعتكِفُ العشرَ الأواخِرَ من رمضانَ، فلم يعتكِفْ عاماً، فلما كان العامُ المُقْبِلُ اعتكفَ عشرينَ ليلةً.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন। কিন্তু এক বছর ইতিকাফ করতে পারেননি। পরবর্তী বছর বিশ রাত (দিন) ইতিকাফ করেছেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৬৩

ইতিকাফের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর লাভ করার সম্ভাবনাও অনেক বেশি থাকে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাইলাতুল কদর লাভের আশায় একবার রমযানের প্রথম দশ দিন ইতিকাফ করেন। এরপর কয়েকবার ইতিকাফ করেন মাঝের দশ দিন। এরপর একসময় শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতে শুরু করেন এবং ইরশাদ করেন-

تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ.

তোমরা রমযানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ কর। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২০২০)

নফল ইতেকাফের ক্ষেত্রে সময়ের ব্যপারে শুরু ও শেষের কোনো আবশ্যকীয় নিয়ম নেই।
,
এক মুহুর্তের জন্যেও ইতেকাফ করতে পারে।

অধিকাংশ আলেমের মতে ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় এক মুহূর্তের জন্যও হতে পারে। এটি ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদের মাযহাব।দেখুন:আদ্দুরুলমুখতার(১/৪৪৫), আলমাজমু (৬/৪৮৯), আলইনস্বাফ (৭/৫৬৬)।

ইমাম নববী আলমাজমূ (৬/৫১৪) গ্রন্থে বলেছেন:
“আর ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় সম্পর্কে অধিকাংশ আলেম দৃঢ়তার সাথে যে মত ব্যক্ত করেছেন সেটাই সঠিক মত। তা হচ্ছে-ইতিকাফের জন্য মসজিদে অবস্থান করা শর্ত।সেটা বেশি সময়ের জন্য হতে পারে, কম সময়ের জন্যেও হতে পারে। এমনকি সামান্য সময় বা এক মুহূর্তের জন্যেও হতে পারে।”

ইতিকাফ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে-অবস্থান করা।এটি দীর্ঘ সময়ের জন্যেও হতে পারে, অল্প সময়ের জন্যেও হতে পারে। 

শরিয়তের এমন কোন দলীল পাওয়া যায়না যা নির্দিষ্ট কোন সময় সীমার মধ্যে ইতিকাফকে সীমাবদ্ধ করে দিবে।

ইবনে হাযম বলেছেন:
“আরবী ভাষায় ইতিকাফ শব্দের অর্থ-অবস্থান করা। তাই আল্লাহর মসজিদে তাঁর নৈকট্য লাভের আশায় যে কোন অবস্থানই হল ইতিকাফ। সেটা কম সময়ের জন্যে হোক অথবা বেশি সময়ের জন্যে হোক। যেহেতু কুরআন ও সুন্নাহ নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বা সময় নির্ধারণ করেনি”সমাপ্ত। [আল-মুহাল্লা (৫/১৭৯)]

ইবনে আবু শাইবাহ ইয়ালা ইবনে উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেন:“আমি মসজিদে অল্প কিছু সময় অবস্থান করলেও সেটা আমি ইতিকাফের নিয়্যতে অবস্থান করি।”ইবনে হাযম‘আল-মুহাল্লা’ গ্রন্থে (৫/১৭৯) এই রেওয়ায়েতদিয়েদলীল পেশ করেছেন এবং হাফেজ ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারী’গ্রন্থে তা উদ্ধৃতকরেছেন; কিন্তু কোন মন্তব্য করেননি। রেওয়ায়েতটিতে الساعة (ঘন্টা) দ্বারা বর্তমান পরিভাষায় যা বুঝি ৬০ মিনিট সেটা উদ্দেশ্য নয়। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- কিছু সময়।

কিছু কিছু আলেমের মতে ইতিকাফেরসর্বনিম্ন সময় একদিন। ইমাম আবু হানিফা থেকে ও মালেকি মাযহাবের কোন কোন আলেম থেকে এ ধরনের একটি বর্ণনা পাওয়া যায়।

শাইখ ইবনে বায ‘মাজমুউল ফাতাওয়া’গ্রন্থে (১৫/৪৪১) বলেছেন:“ইতিকাফ হলো আল্লাহতাআলার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করা, সময় কম হোক অথবা বেশি হোক। কারণ আমার জানা মতে এমন কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না যা একদিন, দুইদিন বা এর চেয়ে বেশী দিনের জন্য ইতিকাফ করাকে নির্দিষ্ট করবে। ইতিকাফ শরিয়তসম্মত ইবাদত।তবে কেউ যদি মান্নত করে তখন মান্নতের কারণে তার উপর ইতিকাফ করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। ইতিকাফের বিধান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।”
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নফল ইতেকাফের ক্ষেত্রে আপনি ফজরের পর নিয়ত করে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইতিকাফ করতে পারবেন।

কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 31 views
...