আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
941 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ الْجَرْجَرَائِيُّ، حِبِّي حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، حَدَّثَنِي حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، حَدَّثَنِي أَبُو الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنِي أَوْسُ بْنُ أَوْسٍ الثَّقَفِيُّ، سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ; مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ ثُمَّ بَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَمَشَى وَلَمْ يَرْكَبْ وَدَنَا مِنَ الإِمَامِ فَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ كَانَ لَهُ بِكُلِّ خُطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا
আওস ইবনু আওস আস-সাক্বাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি জুমুুুুআর দিন গোসল করবে এবং (স্ত্রীকেও) গোসল করাবে, প্রত্যুষে ঘুম থেকে জাগবে এবং জাগাবে, জুমুআহর জন্য বাহনে চড়ে নয় বরং পায়ে হেঁটে মাসজিদে যাবে এবং কোনরূপ অনর্থক কথা না বলে ইমামের নিকটে বসে খুতবা শুনবে, তার (মাসজিদে যাওয়ার) প্রতিটি পদক্ষেপ সুন্নাত হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে সে এক বছর যাবত সিয়াম পালন ও রাতভর সলাত আদায়ের (সমান) সাওয়াব পাবে। (সুনানে আবু দাউদ,হাদিস নং ৩৪৫
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD)

১. ওপরের হাদিসে স্ত্রীকে গোসল করানোর দ্বারা কি বোঝানো হয়েছে?এটা কি সাধারণভাবে তাকে গোসল করতে নির্দেশ দেওয়া নাকি সহবাসজনিত ফরজ গোসল?
২. আর স্ত্রীকে গোসল করানো বিষয়টি যদি না থাকে এবং বাকি আমলগুলো করে তাহলে কি উল্লেখিত জুমুয়ার ফজিলত পাওয়া যাবে না?

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

মোল্লা আলী কারী রাহ. উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন,
«مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح» (3/ 1034):
«" مَنْ غَسَّلَ ") : بِالتَّشْدِيدِ وَيُخَفَّفُ أَيْ: ثِيَابَهُ، (" يَوْمَ الْجُمُعَةِ ") قَالَ التُّورْبَشْتِيُّ: رُوِيَ بِالتَّشْدِيدِ وَالتَّخْفِيفِ، فَإِنْ شُدِّدَ فَمَعْنَاهُ: حَمَلَ غَيْرَهُ عَلَى الْغُسْلِ بِأَنْ يَطَأَ امْرَأَتَهُ، وَبِهِ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْأَسْوَدِ وَهِلَالٌ، وَهُمَا مِنَ التَّابِعِينَ كَأَنَّ مَنْ قَالَ ذَلِكَ ذَهَبَ إِلَى أَنَّ فِيهِ غَضَّةً لِلْبَصَرِ، وَصِيَانَةً لِلنَّفْسِ عَنِ الْخَوَاطِرِ الَّتِي تَمْنَعُهُ مِنَ التَّوَجُّهِ إِلَى اللَّهِ بِالْكُلِّيَّةِ، وَقِيلَ: التَّشْدِيدُ فِيهِ لِلْمُبَالَغَةِ دُونَ التَّعْدِيَةِ، كَمَا فِي قَطَّعَ وَكَسَّرَ ;.»
তাশদীদ এবং তাখফীফ উভয়ভাবে غَسَّلَ শব্দকে পড়া যাবে। ইমাম তুরবাশতী রাহ. বলেন, যদি তাশদীদ সহ পড়া হয়, তাহলে তার অর্থ হবে, অন্যকে গোসলের জন্য উদ্ভোদ্ধ করা। এভাবে যে, সে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে স্ত্রীকে গোসল করাবে।আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ এবং হেলাল রাহ. বলেন, এর ফায়দা হল, তা চক্ষুকে হেফাজতে রাখবে। এবং অন্তরকে গোনাহের কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে।ফলাফল স্বরূপ তখন আল্লাহর দিকে পুরোপুরি তাওয়াজ্জু দেওয়া সম্ভব হবে।কেউ কেউ বলেন, তাশদীদ দ্বারা এখানে অর্থ হল, ভালোভাবে গোসল করা ।

আবু-দাউদ গ্রন্থের শরাহ মিরকাতুস-সাউদ সুনানে আবি-দাউদ গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে,
«مرقاة الصعود إلى سنن أبي داود» (1/ 211):
«(من غسّل يوم الجمعة واغتسل) قيل معناهما واحد وكَرَّر للتأكيد، وقيل غسّل أي غسل الرأس واغتسل أي غسل سائر الجسد، وأفرد غسل الرأس بالذكر لما فيه من المؤنة لأجل الشعر، وقيل أراد بغسّل غسل أعضاءه للوضوء ثمّ يغتسل للجمعة، وقيل: أراد بغسّل جامَع أهله قبل الخروج إلى الصلاة، لأنّ ذلك يعين على غضّ البصر في الطريق، يقال غسّل الرّجل امرأته بالتشديد والتخفيف إذا جامعها، وقد روي في الحديث مشددًا ومخففًا، ومنه فحل غسلة إذا كان كثير الضّراب، وقيل أراد غسّل غيره واغتسل هو، لأنّه إذا جامع زوجته أحوجها إلى الغسل. وقال النّووي في شرح المهذب: روي غسل بالتخفيف والتشديد والأرجح عند التحقيق»التخفيف، والمختار أنّ معناه غسل رأسه، ويؤيده رواية أبي داود في الحديث: "مَن غسل رأسه يوم الجمعة واغتسل، وإنما أفرد الرأس بالذكر لأنّهم كانوا يجعلون فيه الدهن والخطمي ونحوهما، وكانوا يغسلونه أولًا ثم يغتسلون. قال: وذكر بعض الفقهاء "عسّل" بالعين المهملة وتشديد السين أي جامع، وهذا غلط غير معروف في روايات الحديث، وإنّما هو تصحيف. انتهى
মর্মার্থ-
হাদীসে বর্ণিত শব্দ «(من غسّل يوم الجمعة واغتسل) এখানে  غسّل এবং واغتسل এ উভয় শব্দের একই অর্থ। অর্থাৎ ভালোভাবে নিজে গোসল করা। কেউ কেউ  বলেন , غسّل অর্থ হল, মাথাকে ধৌত করা। এবং واغتسل এর অর্থ হল, সমস্ত শরীরকে ধৌত করা। বিশেষ করে মাথাকে ধৌত করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, غسّل দ্বারা উদ্দেশ্য হল, অজু করা এবং واغتسل দ্বারা উদ্দেশ্য হল, সমস্ত শরীর ধৌত করা। কেউ কেউ বলেন غسّل দ্বারা উদ্দেশ্য হল,নামাযে যাওয়ার পূর্বে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা।যার দরুণ স্ত্রীর উপর গোসলকে ফরয হবে।কেননা এতে নিজ চক্ষু গোনাহ থেকে হেফাজত হবে।

ইমাম নববী রাহ বলেন,
হাদীসে غسّل শব্দটি তাশদীদ এবং তাখফীফ উভয়ভাবে এসেছে।তবে বিশুদ্ধ হল,তাখফিফের সাথে পড়া।তখন অর্থ হবে।মাথাকে ধৌত করা।অর্থাৎ যে ব্যক্তি শুক্রবারে মাথাকে ধৌত করবে,এবং সমস্ত শরীর ধৌত করে গোসল করবে,

এর প্রমাণ অাবু-দাউদ রাহ বর্ণিত ভিন্ন আরেকটি হাদীসে পাওয়া যায় যে,
"مَن غسل رأسه يوم الجمعة واغتسل"
যে ব্যক্তি শুক্রবারে নিজ মাথাকে ধৌত করবে,এবং গোসল করবে.............

বিশেষকরে মাথাকে উল্লেখ করার কারণ হল,
আরববাসীদের অভ্যাস ছিলো যে,তারা মাথায় বিভিন্ন প্রকারের সুগন্ধি ও তৈল ব্যবহার করতো।এজন্য বলা হচ্ছে যে, যে ব্যক্তি প্রথমে মাথাকে ধৌত করবে অতঃপর সমস্ত শরীরকে ধৌত করবে,

তবে غسّل এর পরিবর্তে "عسّل" সম্ভলিত রেওয়াত যার অর্থ হল,সহবাস।এরকম বর্ণনা বিশুদ্ধ নয়।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদীসে দু'টি শব্দ বর্ণিত হয়েছে।

(১)غسّل

(২)واغتسل

এ দুই শব্দের প্রথম শব্দির অর্থ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতপার্থক্য হয়েছে।দ্বিতীয় শব্দের অর্থ হল,নিজে গোসল করা।প্রথমটির অর্থ হল,অন্যকে গোসল করানো।অথবা মাথা ধৌত করা। অথবা ভালভাবে গোসল করা।সুতরাং স্ত্রীকে গোসল করানোর মাধ্যমে স্ত্রীর উপর গোসলকে ফরয করে দেওয়ার যে অর্থ গ্রহণ করা হয়েছে,সে অর্থ নিশ্চিত নয়। বিশুদ্ধতম অর্থ হল,প্রথম শব্দের অর্থ হল, নিজ মাথাকে ধৌত করা।

(২)
যেহেতু স্ত্রীকে গোসল করানো বিষয়টা হাদীস দ্বারা নিশ্চিত নয়,তাই কেউ বাকি আমলগুলো করে নিলে,এবং স্ত্রী সহবাস না করলেও উল্লেখিত জুমুয়ার ফজিলত পাওয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 162 views
...