আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ
আমার বিয়ে হয়েছে দেড় বছর মত, আমার একজন ননদ আছেন এবং দুজন জা রয়েছেন।
আমি আলহামদুলিল্লাহ যথাসম্ভব দ্বীনের আহকাম মেনে চলার চেষ্টা করছি কিন্তু আমার নন প্র‍্যাক্টিসিং পরিবারে বিয়ে হয়েছে। স্বভাবগত দিক থেকে ইন্ট্রোভার্ট হওয়ায় কখনোই কোনো আড্ডাতে ছিলাম না যেহেতু অনেক ধরনের টপিক নিয়ে কথা হয় দুনিয়াবি আড্ডায়, নিজেকে যথাসম্ভব রিজার্ভ রেখেই বড় হয়েছি। কিন্তু বিয়ের পর আমার জা দের সাথে শুরুতে বার বার মেশার চেষ্টা করলেও এমন অবস্থা হয় যে একটু কথা বল্লেই উনারা অন্য কারো সম্পর্কে খারাপ কথা, গীবত, সমালোচনা, স্বামী স্ত্রী দের পার্সোনাল বিষয়য়াদি নিয়েই কথা বলেন। উনারা এসবেই কম্ফোর্ট ফিল করেন হয়ত। এজন্য গুনাহের ভয়ে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। বর্তমানে আমার সন্তান এবং স্বামীকেই সময় দিচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ আমার হাজবেন্ড আমার জন্য আলাদা থাকার ব্যাবস্থা করেছেন তাদের সাথে একই জায়গায় তবে আলাদা বিল্ডিংয়ে...
আমার ননদের ক্ষেত্রেও এমন, গ্রাম্য পরিবেশ হওয়াতে তাদের বাসায় বেড়াতে গেলেও গীবতের মজলিশ জমে। আমার হাজবেন্ড মাঝেমধ্যে উনার বোনকে ফোন করে কথা বলতে বলেন। ফোনে কথা বল্লেও একই অবস্থা, বিভিন্ন কুসংস্কার মানতে প্রেশারাইজড করেন উনারা। উনার কথা শুনে এসব বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেক দিন আমার যাওজের সাথেও মনোমালিন্য হয়েছে। উনার সাথে বেশি মিশলে বা ফ্রি হতে চাইলেই এই বিষয় গুলো বেশি হয়। বিভিন্ন কথায় প্রভাবিত হয়ে আমাদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়। আমার ননদকে আমি নিজ থেকে কল করলে উনি বিভিন্ন কথা দিয়ে আমাকে কষ্ট দেন ব্যাঙ্গাত্মক কথা বলে খোঁচা দেন। এজন্য আমি উনাকে কল দিতেও আগ্রহ পাইনা।
উনি আমার শশুর বাড়িতে সপ্তাহ খানেক পর পরই বেড়াতে আসেন, জয়েন ফ্যামিলি সিস্টেম হওয়ায় সবাই একসাথে গেট টুগেদার এর মত হয়। আমিও হাসিমুখেই কুশলাদি বিনিময় করি, আমাদের বিল্ডিং এ আসতে বলি কখনো কখনো আসেন কথাবার্তা বলেন এরপর চলে যান। আবার এমনো হয়েছে অনেক বার রাগ করে উনি আর উনার হাসবেন্ড আসেন নি। আমার পেছনে আমার দোষত্রুটি নিয়ে উনারা সবাই আলোচনা করেন, আমার সামনা সামনিও অনেক বার বলেছেন আমি সম্পর্ক নষ্ট হবে এজন্য জবাব দিই নি।
এমন পরিস্থিতি তে আমি উনাদের সাথে অনেক টাই সখ্যতামূলক সম্পর্ক এড়িয়ে যাচ্ছি, আমাকে নানা ভাবে কটু কথা, অপমান, এবং বাকা চোখে দেখেন উনারা। অহংকারী ও জাওযের সাথে ভালো সম্পর্ক এ নিয়েও নানা খারাপ মন্তব্য করেন, আশেপাশের মানুষের কাছেও খারাপ ভাবে উপস্থাপন করেন বেশ কয়েকবার আমি নিজেও শুনেছি।
আমি মনে কষ্ট পেলেও কখনোই উনাদের সাথে তর্ক বা ঝগড়াঝাটিতে লিপ্ত হইনি। তারা আমাকে বলেন আমি আত্নীয়তার সম্পর্ক রাখিনা আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিবেন।
এছাড়াও আমার জা দের বাচ্চাদের নিয়েও আমাকে খুব কষ্টে পড়তে হয়েছে। ওদের অবাধ আনাগোনা ছিলো আমাদের বাসায়, আমার ৬মাসের বাচ্চা আছে। প্রেগ্ন্যাসিতেও একা হাতে বাসার সব কাজ আঞ্জাম দিতে হত। খুব কষ্ট করে কাজ শেষ করে দেখতাম ওরা এসে পুরো বাসা আবার নোংরা করে ফেলতো। ছোট জন এসে তো আমাদের রুমে পেশাব করতো এগুলোও আমারই ক্লিন করতে হতো। আমাদের বাসার ছাদে উঠে লাফালাফি করতো যাতে বাবুর এবং এর আগে প্রেগ্ন্যাসিতে আমার মারাত্মক ঘুমের সমস্যা হয়েছিলো। এছাড়াও বাবুকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করে কোলে নিতে চায়।
এখন এক্ষেত্রেও আমি রিসার্ভ থাকি এবং আগের মত ওদের এলাউ করিনা। মাঝেমধ্যে আসে ওরা কিন্তু আগের মত হৈ হুল্লোড় করার সুযোগ পায়না। আগে আমার হাসবেন্ড উনার বোন এবং ভাইদের বাচ্চাদের ওপর অনেক টাকা খরচা করতেন যা উনার ফিনানশিয়াল ক্রাইসিসের এখন কারনে আগের মত সম্ভব হয়না। এজন্যও উনারা আমাকেই দায়ী করেন, ভাবেন আমিই ওদের হক নষ্ট করছি।
আমার মা বেঁচে নেই, গাইড করার মত বড় কেউই জীবিত নেই। অনুগ্রহ করে আমাকে উপরোক্ত পরিস্থিতির আলোকে আমার কোন ভুল হচ্ছে কিনা জানাবেন সেইসাথে আমার ননদ, জা, এবং তাদের বাচ্চাদের কতটুকু অধিকার বা হক রয়েছে কিভাবে বর্তমান অবস্থায় সেগুলো আদায় করবো জানাবেন। আমি বর্তমানে এভাবেই সলিউশন খুঁজে পেয়েছি ইবাদাতে এবং আমার যাওজের সাথেও কোনো সমস্যা হচ্ছেনা, আমার বাড়ির ভেতরে একা অবস্থান করা এবং উনাদের সাথে না মেশা নিয়ে আমার যাওজের কোনো অভিযোগ নেই।
কিন্তু আমার কনফিউশান আছে যে শারিয়াহ অনুযায়ী এভাবে চলাতে কোনো সমস্যা আছে কিনা। দয়া করে আমাকে বুঝিয়ে বললে মুনাসিব হয় এই অবস্থা আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারন হতে পারে কিনা
জাযাকুমুল্লাহু খইরন